১১২ ফুটের দুর্গা নিয়ে জেলাশাসককে অনুমতি বাতিলের সিদ্ধান্ত জেলাশাসক পুনর্বিবেচনা করতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল ছবি।
নদিয়া জেলার রানাঘাটে ১১২ ফুট দুর্গাপ্রতিমা ঘিরে জট অব্যাহত। গত সপ্তাহে হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন নদিয়ার জেলাশাসক। জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন দফতরের আপত্তির কারণে ১১২ ফুটের প্রতিমা মণ্ডপে স্থাপন এবং দর্শনের অনুমতি দেওয়া যাবে না। কিন্তু সোমবার নদিয়ার জেলাশাসককে মণ্ডপে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দিল হাই কোর্ট।
বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ সোমবার জানিয়েছেন, ১১২ ফুটের প্রতিমা ১৩৪ ফুট দূরে দাঁড়িয়ে দর্শন করার অনুমতি দেওয়া যায় কি না, তা জেলাশাসককে বিবেচনা করে দেখতে হবে। দুই শর্তে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য নদিয়ার জেলাশাসককে মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় দিয়েছেন বিচারপতি ভরদ্বাজ। ৩ অক্টোবর ফের এই মামলার শুনানি হবে।
গত বৃহস্পতিবার এই মামলায় নদিয়ার জেলাশাসক হাই কোর্টকে জানিয়েছিলেন, বিদ্যুৎ দফতর, দমকল, পুলিশ, বিডিও এবং রানাঘাটের মহকুমা শাসক (এসডিও) আবেদন বাতিল করেছেন। বিদ্যুৎ দফতর জানিয়েছে, ওই পুজো কমিটি প্রতি দিন ৩ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ খরচের কথা জানিয়েছে। কিন্তু প্যান্ডেলের যে আয়তন হয়েছে, তাতে প্রকৃতপক্ষে ২০-২৫ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। এত পরিমাণ বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব নয় বলেই আপত্তি জানানো হয়েছে। দমকল ও জরুরি বিভাগ জানিয়েছে, ২০২৩ সালের পুজো এবং জমির অনুমতিপত্র জমা করতে হবে। তা জমা করা হয়নি বলে আবেদন বাতিল হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রানাঘাটের কামালপুর এলাকার অভিযান সঙ্ঘ এ বার ১১২ ফুটের দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছে। কিন্তু পুলিশ তাতে অনুমতি দেয়নি বলে অভিযোগ তুলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। তাঁদের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিম হাই কোর্টকে জানিয়েছিলেন, প্রায় ৫০ বছর ধরে ওই ক্লাব দুর্গাপুজো করছে। কোনও বছর অনুমতি নিয়ে সমস্যা হয় না। এ বছর ১১২ ফুটের দুর্গা প্রতিমা বানানো হয়েছে। যা নজির গড়তে পারে। প্রতি বারের মতো গত ৩ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। তাঁরা কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি। আবার, কর্তৃপক্ষ কোনও আপত্তিও করেননি। এই পরিস্থিতিতে গত বুধবার কলকাতা হাই কোর্ট ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর নির্দেশ দিয়েছিল নদিয়ার জেলাশাসককে।
রানাঘাট পুলিশ জেলার ধানতলা থানা রিপোর্টে জানিয়েছিল, এত বড় দুর্গা হয়েছে যা দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় করতে পারেন। ফলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা রয়েছে। এত বড় দুর্গা হওয়ায় কেব্ল লাইন এবং বিদ্যুতের তারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ১২ ফুট রাস্তার উপর প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। প্যান্ডেলের আকারের তুলনায় তা খুবই সংকীর্ণ পরিসর। তা ছাড়া পুজোর পরে বিসর্জনের সময় এলাকা দিয়ে ওই প্রতিমা নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের ঘটনা মাথায় রেখে মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে আবেদন বাতিল করা হয়েছে। প্রায় এক দশক আগে ২০১৫ সালে বিপুল ভিড়ের কারণে লালবাজারের পুলিশ কর্তারা দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের বিশাল দুর্গা প্রতিমার দর্শন বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy