দুশ্চিন্তা কাটছে না
আমার পরিচিতা কোচবিহারের অনেকে তরুণী শিলিগুড়িতে থেকে কাজ করেন। বেসরকারি সংস্থায় কর্মরতা কেউ কেউ আবার সপ্তাহে এক-দু’দিন নিয়মিত শিলিগুড়িতে অফিস করতে যান। যাতায়াতের সময় বেশি লাগায় তাঁদের সেখানে থাকতে হয়। এখন তো ওদের জন্য খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে। সঙ্গীতা-কাণ্ডের পরে তো মনে হচ্ছে, কে কবে বাড়ি বা অফিস থেকে উধাও হয়ে যাবে, আর পুলিশ হাতগুটিয়ে বসে থাকবে! সঙ্গীতা নিখোঁজ রহস্যের দ্রুত কিনারা না হলে, এবং দোষীরা সাজা না পেলে এই দুশ্চিন্তা কাটবে না।
সুলতা ঘোষ
প্রধান শিক্ষিকা, কোচবিহার
শিউরে উঠেছি
গত দু’বছর ধরে কর্মসূত্রে শিলিগুড়িতে থাকতে হচ্ছে। সেবক রোডের ধারে একটি আবাসনেই থাকি। সঙ্গীতা কুণ্ডুর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা শুনে শিউরে উঠেছি। আমাদেরও প্রতিনিয়ত অনেকের অবাঞ্ছিত ব্যবহার উপেক্ষা করে চলতে হয়। কিন্তু পুলিশ-প্রশাসন যে ভাবে সঙ্গীতা নিখোঁজ হওয়ার পরে উল্টে অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে শুনলাম, তাতেই আতঙ্ক বাড়ছে। শিলিগুড়িকে খুব বেশি নিরাপদ বলে ভাবতে পারছি না। এরপর তো কেউ কুপ্রস্তাব দিলেও প্রতিবাদ করতে ভয় হবে, যদি অপহরণ করে নিয়ে যায়! এ ভােব চাকরি করা যায়!
তপতী দাস (নাম পরিবর্তিত)
কোচবিহারের বাসিন্দা, বেসরকারি ব্যাঙ্ককর্মী
এটা কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা
সম্প্রতি দিল্লিতেও কল সেন্টারের এক কর্মীকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল। মেয়েটি মালিকের কুপ্রস্তাবে নাকি সাড়া দেয়নি। যতদূর শুনেছি শিলিগুড়ির ঘটনাতেও মেয়েটি আগেই মায়ের কাছে নানা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। অভিযোগ করা হল, অথচ পুলিশ অভিযুক্তকে এখনও জেরা করল না। এটি কী বিচ্ছিন্ন ঘটনা? নাকি শিলিগুড়ির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির একটি নমুনা। খুব চিন্তা হচ্ছে।
অনিতা চক্রবর্তী
চাঁচল কলেজের অধ্যাপিকা
আত্মবিশ্বাসে কমছে
আমার অফিস শিলিগুড়িতে। সপ্তাহে পাঁচ দিন যাতায়াত করতে হয়। কখনও ছুটির দিনও যেতে হয়। অনেকদিনই অফিস শেষ হতে সন্ধ্যে হয়ে যায়। একা ফিরতে হয়। কিন্তু এখন কী আর আগের মতো আত্মবিশ্বাস থাকবে? উত্তরবঙ্গে একমাত্র শিলিগুড়িতেই পুলিশ কমিশনারেট রয়েছে। স্বভাবতই সেই শহরে নিরাপত্তা বিশেষত মেয়েদের সুরক্ষার দিকটা বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু সঙ্গীতার ঘটনায় কিছুই পুলিশ জানতে পারছে না? এটা মানা যায় নাকি? শিলিগুড়ি সম্পর্কে আমার ভয় বাড়িয়ে দিল।
নমিতা দাস
সরকারি কর্মী, জলপাইগুড়ি
বাড়ির সবাই আতঙ্কিত
জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি এক ঘণ্টার দূরত্ব। কিন্তু দেরিতে অফিস শেষ হয় বলে ফিরতে পারি না। শিলিগুড়িতেই থাকতে হয়। সঙ্গীতা কুণ্ডু যে ভাবে অফিস থেকেই নিখোঁজ হয়ে গেল, তা শুনে বাড়ির লোকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। আমাকে জলপাইগুড়িতে বদলি নিতে বলছেন। এখন প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ি থেকে ফোন করে। এমন আর কতদিন চলবে? বাড়ির লোকেদের আশ্বস্ত করতে চাকরি না ছেড়ে দিতে হয়!
রূপাঞ্জনা লাহা, (নাম পরিবর্তিত)
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী
চাকরিতে বাধা আসছে
আমি নিজেও বেসরকারি সংস্থাতে কর্মরত, শিলিগুড়িতেই অফিস। সঙ্গীতা রহস্যের উদ্ঘাটন না হওয়ায় দুশ্চিন্তা তো বেড়েই চলেছে। বাড়ির লোকেরাও নিশ্চিন্ত হতে পারছে না। এরপরে অনেক মেয়েরাই বাইরে কাজ করতে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাহস দেখাবেন না। মেয়েরা নিখোঁজ হওয়ার পর তাকে খুজে না পেলে পরিবারের লোকেরা চাকরি করতে কি সায় দেবে।
অর্পিতা সরকার
বেসরকারি সংস্থার কর্মী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy