কবে চালু হবে পাহাড়ের পর্যটন, আশায় ব্যবসায়ীরা।
পুজোর আগে পাহাড়ের পর্যটন খুলবে কি? এই নিয়ে বুধবারের বৈঠকের শেষেও ধোঁয়াশা রয়ে গেল। পর্যটন ব্যবসায়ীরা নিজেদের দাবিপত্র জিটিএ-র হাতে তুলে দিলেও এই নিয়ে কোনও বাড়তি চাপ তৈরি করতে নারাজ। তাঁরা মনে করেন, সিদ্ধান্ত প্রশাসনকেই নিতে হবে। অন্য দিকে, জিটিএ প্রকাশ্যে কিছু না বললেও বৈঠকে বিষয়টি জেলা প্রশাসনের দিকেই ঠেকে দিয়েছে বলে খবর। ফলে পাহাড়ের পেশকে এ দিন জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা, প্রধান সচিব, দুই জেলাশাসকের উপস্থিতিতে বৈঠকেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কিছুই হল না।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ব্যবসায়ীরা তাঁদের প্রস্তাবে জানিয়েছেন, তাঁরা হোটেল, হোম-স্টে খুলতে রাজি। একটি দাবিপত্রও তাঁরা জিটিএ ও প্রশাসনের হাতে তুলে দেন। তাতে সরকারি বিভিন্ন কর ছাড় থেকে শুরু করে বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, হোটেল হোম-স্টেতে টানা নজরদারি, প্রয়োজনে পর্যটকদের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা, কোথাও গোলমাল হলে তা সঙ্গে সঙ্গে মেটানো, হোটেল হোম-স্টে চালানোর জন্য আর্থিক প্যাকেজের মতো বিষয় রয়েছে। ব্যবসায়ীরা ৭ সেপ্টেম্বরের পর থেকে হোটেল, হোম-স্টে চালু করার কথাও বলেন। কিন্তু পর্যটন চালু হবে কি না, সেই সিদ্ধান্তের দায়িত্ব তাঁরা জিটিএ এবং প্রশাসনের উপর ছেড়ে দেন। জিটিএ তো বটেই, প্রশাসনও আলাদা করে এখনই পর্যটন শিল্প খোলার মতো কোনও নির্দেশ দিতে রাজি নয়। সেই জায়গায় সরকারি নির্দেশে যে যে স্বাস্থ্যবিধি, প্রক্রিয়া রয়েছে, তা মেনে হোটেল, হোম-স্টে খুলুক, সেটাই চাইছে প্রশাসন। সূত্রের খবর, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলা প্রশাসন শুধুমাত্র সরকারি কী কী নিয়মাবলী মেনে পাহাড়ে হোটেল, হোম-স্টে এবং পরিবহণ ব্যবস্থা চালু রাখা যেতে পারে, তার একটা বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেবে মাত্র।
দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবল্লম বলেছেন, ‘‘ব্যবসায়ীরা কিছু দাবির কথা জানিয়েছেন। সরকারি নির্দেশে যা আছে তা আমরা বলে দেব। বাকি কর ছাড়-সহ অর্থনৈতিক বিষয়গুলি সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়। আমরা তা নিয়ে কিছু বলতে পারব না। ব্যবসায়ীদের নিজেদেরই হোটেল, হোম-স্টে খুলতে হবে।’’
এখন পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, তা স্পষ্ট নয়। কারণ, বিভিন্ন এলাকায় বাসিন্দাদের একাংশের আপত্তির সামনে কোনও পক্ষই আগ বাড়িয়ে পাহাড় খোলার দায়িত্ব নিতে চাইছে না। বিশেষ করে পরে সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করলে কে সেই দায় নেবে, তা নিয়ে অন্দরে এখনও আলোচনা চলছে। জুলাই মাসে জিটিএ একবার হোটেল খোলার কথা বলে। তার পরে দার্জিলিঙের হোটেল থেকে পর্যটকদের তাড়ানো এবং কালিম্পঙের হোটেলগুলিতে বুকিং না নেওয়ার ফতোয়া চিঠি দেওয়া হয়। তা ঠিকঠাক সামাল না দেওয়ায় পাহাড় নিয়ে বাইরে অন্যরকম বার্তা গিয়েছে। আবার কর্মীদের বকেয়া বেতন নিয়ে জিটিএ-র মধ্যস্থতায় কমিটি বানানো হলেও তা এখনও পুরোপুরি সফল হয়নি। আবার রাজনৈতিকভাবেও জিটিএ-র ভূমিকায় কিছু ক্ষেত্রে বিরোধিতা হয়েছে। অনীত থাপা থেকে শুরু করে মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাংরা তাই এ নিয়ে কিছুই বলতে চাইছেন না। লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পাহাড়ে পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভরশীল। তাই পর্যটন চালু করা যাবে না বলেও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। এই টানাপড়েনে চুপ করে রয়েছেন সকলেই। হিমলয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের পরামর্শদাতা তথা পাহাড়ের পরিবহণ ব্যবসায়ীদের যৌথ মঞ্চের সভাপতি সূর্যনারায়ণ প্রধান বলেন, ‘‘আমরা হোটেল, হোম-স্টে চালু করতে রাজি। প্রশাসন, জিটিএকে জানিয়েছি। দেখি, ওরা কী বলে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy