Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

পথে নেই নাগরিক সমাজ

এ দিন বিকেলে শহরের রাস্তায় মিছিল করেছে এসএফআই। জেএনইউ কাণ্ডের প্রতিবাদের পাশাপাশি ৮ জানুয়ারি বন্‌ধের স্বপক্ষেও প্রচার করেছেন তাঁরা। রবিবার রাত থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জলপাইগুড়ির অনেকের প্রতিবাদ দেখা গিয়েছে।

পথে-প্রতিবাদে: জেএনইউ কাণ্ডের প্রতিবাদে। নিজস্ব চিত্র

পথে-প্রতিবাদে: জেএনইউ কাণ্ডের প্রতিবাদে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:০৭
Share: Save:

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখোশধারী দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবের ভিডিয়ো রাতেই দেখেছিল জলপাইগুড়ি। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল তখনই। সেটাই রাস্তায় নেমে এল সোমবার সকালে। স্লোগানে স্লোগানে মুখর হল শহর, কোথাও জ্বলল টায়ার। এ দিন পথে নেমেছে বামেরা। মিছিল করেছে তৃণমূলও। তবে শহরে যা প্রতিবাদ হয়েছে তা সবই কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের। দলীয় পতাকা ছাড়া শহরের নাগরিকদের কোনও মিছিল এ দিন হয়নি। কেন সেই মিছিল হল না, সেই প্রশ্নও উঠেছে বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে।

সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের ঘটনা সময় জলপাইগুড়ি শহর সাক্ষী থেকেছিল নাগরিক সমাজের আন্দোলনের। তারপরে জলপাইগুড়ি শহরে সার্কিট বেঞ্চের দাবি হোক বা হালফিলে কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনা, সবক্ষেত্রেই পথে নেমেছিলেন শহরের বাসিন্দারা। দলীয় পতাকা ছাড়াই হয়েছিল মিছিল। কিন্তু রবিবার জেএনইউ-তে হামলার পরে সারা দেশে, পাশের শহর শিলিগুড়িতে নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ দেখা গেলেও উত্তরবঙ্গের সংস্কৃতির অন্যতম পীঠস্থান বলে পরিচিত জলপাইগুড়ির রাস্তায় সোমবার কোনও দলীয় পতাকা ছাড়া মিছিল হয়নি।

জেএনইউ কাণ্ডের প্রতিবাদে এ দিন দুপুরে মিছিল করে যুব তৃণমূল। তারপরেই মিছিল হয় বাম ছাত্র-যুবদের। দুপুরে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার সামনে মিছিল করে এসে টায়ার পোড়ায় যুব তৃণমূলের সদস্যরা। চালসা, মালবাজার, ডুয়ার্স থেকেও কর্মী-সমর্থকরা মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় মিছিলে বলেন, “যেখানেই ছাত্ররা মার খাবে আমরা প্রতিবাদ করব। বাম ছাত্র যুবরা মার খেলেও আমরা পাশে আছি। এই ঐক্য না থাকলে গেরুয়া বাহিনী সব গ্রাস করে নেবে।” জলপাইগুড়িতে গত লোকসভায় বিজেপি জিতেছে। শহরেও প্রচুর ভোটে তৃণমূলকে পিছনে ফেলেছে বিজেপি। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে দলের সংগঠন যথেষ্ট বেড়েছে বলে বিজেপির দাবি। সেই পরিস্থিতিতে তৃণমূল যুব নেতার এই বক্তব্য স্থানীয় রাজনীতিতে কোনও প্রভাব ফেলবে কিনা সময়েই সেটা বলবে বলে মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল।

এ দিন বিকেলে শহরের রাস্তায় মিছিল করেছে এসএফআই। জেএনইউ কাণ্ডের প্রতিবাদের পাশাপাশি ৮ জানুয়ারি বন্‌ধের স্বপক্ষেও প্রচার করেছেন তাঁরা। রবিবার রাত থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জলপাইগুড়ির অনেকের প্রতিবাদ দেখা গিয়েছে। সোমবার সকালেও বিভিন্ন পেশার মানুষেরা নিজেদের মতো করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। চিত্রশিল্পী দেবাশিস সরকারের কথায়, “সত্যি এটা ভাবাচ্ছে। অতীতে দেখেছি স্থানীয় বা জাতীয় কোনওক্ষেত্রে গণতন্ত্রের ওপর আঘাত এলে অথবা ন্যায় আক্রান্ত হলে ভিন্ন রাজনৈতিক মতের লোকেরাও বিশ্বাস থাকলেও সরিয়ে এই শহরের নাগরিকদের অনেকেই পথে নেমেছে। জেএনইউ কাণ্ডের পরে তা দেখলাম না।” কলেজ শিক্ষক রূপন সরকারের কথায়, “কেউ যদি ভেবে থাকে চোখ বুজে থাকলে সুরক্ষিত থাকবেন, তা মোটেই নয়।’’

একই ছবি দেখা গিয়েছে কোচবিহারেও। সেখানেও মিছিলগুলো হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর হাত ধরেই, মিছিলে ছিল দলীয় পতাকাও। নাগরিক সমাজের তরফে পথে নেমে এ দিন জেএনইউ কাণ্ডের বিরোধিতা না করা হলেও শীঘ্রই পথে নামা হবে বলে আশ্বাস জেলার বিদ্বজনদের।

অন্য বিষয়গুলি:

JNU JNU Violence JNU Attack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy