যান নিয়ন্ত্রণের কাজে পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে তিনঘণ্টা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দারা।
সেইসঙ্গে, দুর্ঘটনা রুখতে জাতীয় সড়কের ধারের বেআইনি ঝুপড়ি দোকান ও বেআইনি পার্কিং উচ্ছেদের দাবিতেও সরব হন তাঁরা। আন্দোলনকারীদের দাবি, যান নিয়ন্ত্রণের কাজে পুলিশের গাফিলতির জেরেই শুক্রবার ওই এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও গত এক বছরে ভুটভুটি, ট্রাক ও ছোটগাড়ির ধাক্কায় ১০ জনের বেশি বাসিন্দা জখম হয়েছেন।
শনিবার সকালে ওই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার বৈদড়া চেকপোস্ট এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। এ দিন এলাকার কয়েকশো বাসিন্দা সকাল সাতটা থেকে জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু করেন। দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানো সত্ত্বেও কেন ওই এলাকার জাতীয় সড়কে সর্বক্ষণ পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত পুলিশকর্মীদের দিয়ে যান নিয়ন্ত্রণের কাজ করা হচ্ছে না, অবরোধ তুলতে গিয়ে জেলা পুলিশের কর্তারা বাসিন্দাদের সেই প্রশ্নের মুখে পড়েন। পুলিশের অনুরোধে বেলা পৌনে ১০টা নাগাদ জেলা পরিষদের স্থানীয় তৃণমূল সদস্য মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীরা রায়গঞ্জের ডিএসপি মিতুন দে’র সঙ্গে সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
প্রায় ১৫ মিনিট ওই বৈঠক চলার পর পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ উঠে যায়। জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌরের দাবি, ‘‘জাতীয় সড়কের ধারের বেআইনি ঝুপড়ি দোকান ও জাতীয় সড়কে বেআইনি পার্কিং উচ্ছেদের এক্তিয়ার পুলিশের নেই। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে দুর্ঘটনা রুখতে ওই এলাকার জাতীয় সড়কে সর্বক্ষণ যান নিয়ন্ত্রণে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।’’
শুক্রবার সকালেই ডালখোলা থেকে মালদহগামী একটি ভুট্টাবোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদড়া চেকপোস্ট এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারের একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়লে ঘটনাস্থলে এক বৃদ্ধা সহ চারজনের মৃত্যু হয়। আন্দোলনকারী বাসিন্দাদের দাবি, বৈদড়া চেকপোস্ট এলাকার জাতীয় সড়কের ধারে প্রতিদিন সকালে বাজার বসায় বাসিন্দাদের ভিড় লেগে থাকে। শনি ও মঙ্গলবার জাতীয় সড়কের ধারে হাটও বসে। এ ছাড়াও জাতীয় সড়কের ডানদিক ও বাঁদিক চিরে মালদহ ও বালুরঘাটগামী দুটি রাস্তা চলে গিয়েছে। জাতীয় সড়কের ধারে একটি হাইস্কুল, একটি প্রাথমিক স্কুল, পঞ্চায়েত অফিস, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ভূমি সংস্কার দফতর-সহ একাধিক সরকারি দফতর রয়েছে। তাই দিনভর পড়ুয়া ও বাসিন্দারা জাতীয় সড়ক পারাপার করে হয়ে স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পঞ্চায়েত অফিস-সহ নানা সরকারি দফতরে যাতায়াত করেন। তার উপর জাতীয় সড়কের ধারে দিনভর দফায় দফায় শতাধিক ভুটভুটি বেআইনিভাবে দাঁড়িয়ে থাকায় সেই যানজট তীব্র আকার নেয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘‘হাটের দিনগুলিতে মাঝেমধ্যে জাতীয় সড়কে কয়েকজন ভিলেজ পুলিশকে যান নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেলেও সপ্তাহের বাকি পাঁচদিন ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করে যান নিয়ন্ত্রণ করা হয় না। তাই দিনভর জনবহুল এলাকার ওই জাতীয় সড়ক দিয়ে বেপরোয়াভাবে যানবাহন চলাচল করে।’’
এ দিনের অবরোধের জেরে সকাল ৮টা থেকে ইটাহার এলাকার জাতীয় সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটে প্রায় তিনঘণ্টা আটকে থাকে কলকাতা থেকে রায়গঞ্জ ও শিলিগুড়িগামী একাধিক দুরপাল্লার বাস-সহ রায়গঞ্জ থেকে মালদহ রুটের একাধিক বাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy