আলিপুরদুয়ার আদালত চত্বরে তুষার বর্মণ খুনে অন্যতম অভিযুক্ত শম্ভু রায়। বুধবার। ছবি: নারায়ণ দে
অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবীদের জেরাতেও নিজের বক্তব্যে অনড় থাকলেন তপসিখাতায় খুন হওয়া তৃণমূল কর্মী তুষার বর্মণের জ্যাঠামশায় অরুণ বর্মণ। আইনজীবীদের সূত্রের খবর, বুধবার আদালতে তিনি ফের দাবি করেন, তুষারকে খুনের সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, তাঁর সামনেই তুষারকে গুলি করা হয়।
গত সোমবার তুষার খুনের মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অভিযোগ, ওই দিন আদালতে আসার সময় এই মামলার অন্যতম আসামী বিদ্যুৎ রায়কে সাক্ষীদের একাংশ মারধর করে। যার জেরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। ফলে সোমবার সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। তবে মঙ্গলবার বিদ্যুতের অনুপস্থিতিতেই এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
প্রথম সাক্ষ্য দেন তুষারের জ্যাঠামশায় অরুণবাবু। আইনজীবীদের সূত্রের খবর, ওই দিন আদালতে তিনি নিজের সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বলেছিলেন, তাঁর সামনেই শম্ভু রায় সহ চার অভিযুক্ত তুষারকে মারধর করে উপুড় করে শোওয়ায়। শম্ভু কোমর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে তুষারের ঘাড়ের পিছনে সামান্য ডান দিকে গুলি করে। গুলি করার পরই তুষার বর্মণের মৃত্যু হয়।
আইনজীবীদের সূত্রের খবর, অরুণবাবুর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হওয়ার পর বুধবার অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবীরা তাঁকে জেরা শুরু করেন। শুরুতে অরুণবাবুকে জেরা করেন শম্ভুর আইনজীবী। তারপর এই মামলার আরেক অভিযুক্ত অরবিন্দ বর্মণের আইনজীবী তাকে জেরা করা শুরু করেন। তবে তাঁর জেরা অবশ্য এদিন সম্পূর্ণ হয়নি। আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবীদের জেরাতেও অরুণবাবু এ দিন ফের বলেন, তুষারকে খুনের সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং তাঁর সামনেই তুষারকে গুলি করা হয়। কিন্তু এই বিষয়টি তিনি এফআইআরে উল্লেখ করেছিলেন কি না, তা অবশ্য মনে করতে পারেননি অরুণবাবু।
আলিপুরদুয়ার আদালতের সরকারি আইনজীবী জহর মজুমদার বলেন, ‘‘খুনের সময় অরুণবাবু ঘটনাস্থলে ছিলেন না বলে অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবীরা আদালতে বলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু অরুণবাবু তা মানেননি।’’ অভিযুক্ত অরবিন্দর আইনজীবী সোমশংকর দত্ত বলেন, ‘‘সাক্ষী অরুণ বর্মণ সত্য কথা বলছেন না। সেটা পরবর্তীতে আদালতে আমরা প্রমাণ করে দেব।’’
গত ২২ জানুয়ারি তপসিখাতার জয় বাংলা হাটে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন তৃণমূল কর্মী তথা এক সময় দলের সহকারী বুথ সভাপতির দায়িত্ব সামলানো তুষার। স্থানীয় পারোরপাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান শম্ভু রায়, গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সোনা রায় ওরফে বাপ্পা, বিদ্যুৎ রায় ও অরবিন্দ বর্মণের বিরুদ্ধে তাঁকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর পরই গ্রেফতার হয় বাপ্পা। পরে শম্ভু সহ বাকি দু’জনও গ্রেফতার হয়। যদিও শম্ভু বাদে বাকি তিন জনই এই মুহূর্তে জামিনে মুক্ত। এদিনের সাক্ষ্য গ্রহণে অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy