গুজবের জেরে গণপিটুনি রুখতে গেলে পুলিশকে পুলিশকে খোঁজ রাখতে হবে, কোথা থেকে কী ভাবে গুজব রটছে। কেননা, প্রধানত গুজবের জন্যই মানুষ দ্রুত উত্তেজিত হচ্ছেন। এমন সব গুজব রটছে, যাতে মানুষ মনে করছেন তাঁদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। সে কারণেই তাঁরা ভয় পাচ্ছেন। সেই ভয় থেকেই তাঁরা মারমুখী হয়ে উঠছেন। তাই প্রথমেই মোকাবিলা করতে হবে গুজবকে। দেখতে হবে, কারা কোন উদ্দেশ্যে গুজব রটাচ্ছে। সেই গুজব কেমন ভাবে ছড়াচ্ছে। সেই পথগুলোর উপরে পুলিশকে কড়া নজর রাখতে হবে।
না হলে, এমন ঘটনা বেড়েই চলবে। বিভিন্ন সময়ে দেশ জুড়ে এই ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। দক্ষিণ ভারতেই যেমন বিদেশে কর্মরত তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কয়েক জন বাস্তুকার বাড়িতে ফিরে গ্রামের পথে গাড়ি নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। পথে গ্রামের একটি চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে সেখানকার শিশুদের চকোলেট খাওয়ান তাঁরা। উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দারা সন্দেহ করেন, তাঁরা ছেলেধরা। শত বোঝানোর চেষ্টা করলেও কোন লাভ হয়নি। পালাতে চেষ্টা করলে পথে আটকে সকলকেই মেরে ফেলে উত্তেজিত জনতা।
অসমের কার্বি আংলং-এ দুই ব্যক্তিকে একই ভাবে মারা হয়। সব ক্ষেত্রেই বোঝা যাচ্ছে, সাধারণ মানুষের যুক্তিবোধ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আর এই ধরনের গুজব আগুনের থেকেও বেশি দ্রুত ছড়ায়। তাই দায়সারা ভাবে প্রচার করে দায়িত্বপালন শেষ করা যাবে না। বরং সেই উপদ্রুত এলাকাগুলোতে নির্ভরযোগ্য খবর জোগাতে পারে এমন শিক্ষিত যুক্তিবাদী মানুষদের চিহ্নিত করে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে তুলতে হবে। এলাকায় ভবঘুরে, মানসিক ভারসাম্যহীন, ভিক্ষাজীবী, বহুরূপীদের চিহ্নিত করে নিরাপত্তা দেওয়াও জরুরি। গণপিটুনি একবার শুরু হয়ে গেলে তখন কিন্তু বুঝিয়ে কোনই কাজ হবে না। সেই ক্ষেত্রে প্রয়োজন পুলিশি সক্রিয়তা। ভিড়কে চ্যালেঞ্জ করার ডাকাবুকো মানসিকতা না থাকলে চোখের সামনেই কিন্তু গণপিটুনিতে মৃত্যু দেখা ছাড়া উপায় থাকবে না। মনে রাখতে হবে আলিপুরদুয়ার থেকে শুরু হয়ে যে গুজব এখন নাগরাকাটাতে এসে পৌঁছেছে, তা কিন্তু সাইক্লোনের মতোই নিজের শক্তি ক্রমাগত বাড়িয়ে নিয়েছে। তাই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পুলিশকে শক্তির সঙ্গে বুদ্ধি প্রয়োগ করতেই হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy