Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

উৎসবের আলো মেখে ঘরের পথে

দার্জিলিং জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে সোমবার তাদের হাতে কিশোরীদের তুলে দেওয়া হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ওই দিন রাতেই কৈলালি জেলার যোশিপুরের বাড়িতে মায়ের কাছে পৌঁছন‌োর কথা তাদের।

দুই কিশোরী। নিজস্ব চিত্র

দুই কিশোরী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:০৩
Share: Save:

দেবীপক্ষের মুখে মায়ের কাছে ফিরছেন নেপালের দুই কিশোরী। সম্পর্কে দুই বোন তারা। কাজের লোভ দেখিয়ে মাস তিনেক আগে তাদের শিলিগুড়িতে নিয়ে এসেছিল দুই প্রতিবেশী। প্রশাসনের তৎপরতায় উদ্ধারের পর থেকে কোচবিহারের শহিদ বন্দনা হোমে ঠাঁই হয়েছিল তাঁদের।

হোম সূত্রের খবর, নেপাল হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে দুই কিশোরীর পরিচয় ও ঠিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত হন তাঁরা। রবিবার তাদের বাড়ি ফেরানোর উদ্দেশে ওই দুই কিশোরীকে নিয়ে রওনা হন জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন-সহ অন্য সদস্যরা। নেপাল থেকে সে দেশের এক প্রতিনিধিদল শিলিগুড়ি আসবেন। দার্জিলিং জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে সোমবার তাদের হাতে কিশোরীদের তুলে দেওয়া হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ওই দিন রাতেই কৈলালি জেলার যোশিপুরের বাড়িতে মায়ের কাছে পৌঁছন‌োর কথা তাদের। বাড়ি ফেরার আনন্দে খুশি দুই কিশোরী। তবে রওনা হওয়ার সময় কোচবিহারের ওই হোমের ভালবাসার স্মৃতিতে আবেগঘনও হয়ে পড়ে তারা।

তাদের একজনের কথায়, “আমি ক্লাস টেনে পড়ি। ফিরেই স্কুলে যাওয়া শুরু করব। দুর্গাপুজো ওখানে হয় না। তবে সামনে দশাই উৎসবে বাড়ি থাকব।” তার সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া তার বোন চোখের জল মোছার ফাঁকে বলেই দিল, “সবকা বহুত প্যায়ার মিলা। ইয়াদ রহেগি।’’

কোচবিহার জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন ডোরা ভট্টাচার্য বলেন, “নেপাল হাইকমিশনে যোগাযোগ করেই ওদের বাড়ি ফেরানোর ব্যাপারে সবকিছু চূড়ান্ত করা হয়। পুজোর মুখে ওরা ওদের বাবা-মায়ের কাছে ফিরতে পারছে বলে আমাদেরও ভাল লাগছে।” ওই কমিটির সদস্য নিতাই সরকার বলেন,“সোমবারই নিজের দেশে পরিবারের কাছে ওরা পৌঁছে যাবে বলে আশা করছি।”

হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই কিশোরী নেহাতই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। বাবা চাষের করে সংসার চালান। কাজের প্রলোভন দেখিয়ে ওই দুই বোনকে মাস তিনেক আগে শিলিগুড়ি নিয়ে আসেন তাদের প্রতিবেশী এক মহিলা। দুই কিশোরীকে পাচারের উদ্দেশ্য ছিল বলেও সন্দেহ করছে পুলিশ। সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরির সময় ওই মহিলা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। দিশেহারা দুই বোন আশ্রয়ের সন্ধানে ট্রেনে হাসিমারা পৌঁছোয়। ৭ জুন পুলিশ তাদের উদ্ধার করে কালচিনির একটি হোমে থাকার ব্যবস্থা করে। ২৯ জুন থেকে শহিদ বন্দনা হোমে তাদের ঠাঁই হয়। তারপরেই তাদের বাড়ির ঠিকানা ও বাবার পরিচয় যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়। কোচবিহারের চাইল্ড প্রোটেকশন আধিকারিক স্নেহাশিস চৌধুরী বলেন, “আমারও খুব ভাল লাগছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Missing girl return Cooch Behar teen girl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE