গ্রাম ছাড়ছেন বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র
দিনভর মুষলধারে বৃষ্টির জেরে মালদহে থমকে গেল গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধের কাজ। শনিবারও গঙ্গার জলস্তর হু হু করে বেড়েছে ও ভাঙনের তীব্রতাও বেড়েছে। আতঙ্কে এ দিনও প্রায় ১০ টি পরিবার তাঁদের ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়েছেন।
এ দিন সেচ দফতর ভাঙন কবলিত পারদেওনাপুর-শোভাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পার অনুপনগরে যেমন কাজ করতে পারেনি, তেমনই মানিকচক ব্লকের ভূতনির রাজকুমারটোলা ও কেশরপুরেও কাজ করতে পারেনি। এ দিন গঙ্গার জলস্তর ছিল ২৩.৮৫ মিটার। জল বাড়ছে ফুলহর ও মহানন্দারও। পার অনুপনগরে একটি কালীমন্দির নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধের বালির বস্তা নদীর জলের তোড়ে সাফ হয়ে ভূতনির রাজকুমারটোলায় নদী বাঁধের কাছে চলে এসেছে।
শুক্রবার রাত থেকেই মালদহ জেলা জুড়ে তুমুল বৃষ্টি চলছে। শনিবার বিকেল পর্যন্ত সেই বৃষ্টি চলে। একেই বৃষ্টি তার ওপর গঙ্গা ভাঙনের জেরে বিপর্যস্ত জেলার কালিয়াচক ৩ ব্লকের পারদেওনাপুর-শোভাপুর পঞ্চায়েত ও মানিকচক ব্লকের ভূতনির হীরানন্দটোলা ও দক্ষিণ চণ্ডিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে গঙ্গার ভাঙন শুরু হয় ভূতনির কেশরপুর ও রাজকুমার টোলায়। তড়িঘড়ি সেখানে প্রতিরোধের কাজ শুরু করেছিল সেচ দফতর। সেই কাজ এখনও চলছে। সোমবার থেকে কালিয়াচক ৩ ব্লকের গোলাপ মণ্ডলপাড়া, পরানপাড়া, পার অনুপনগর ও পারলালপুর এই চারটি গ্রামেও ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে।
সেচ দফতরের মালদহ ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রণব সামন্ত বলেন, ‘‘শনিবার ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি থাকায় আমরা কোথাওই ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করতে পারলাম না। আবহাওয়া ভালো হলেই কাজে নামা হবে।’’ এ দিনও কালিয়াচকের পার অনুপনগর-সহ পরানপাড়া, গোলাপ মণ্ডলপাড়ায় প্রচুর আবাদি জমি গঙ্গা গ্রাস করেছে। নদী এখন পার অনুপনগর প্রাইমারি স্কুলের একেবারেই কাছে চলে এসেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্কুলটিকে বাঁচাতে শুক্রবার যে বালির বস্তা ফেলা হয়েছিল, এ দিন জলের তোড়ে তার অধিকাংশই নদীতে চলে গিয়েছে। এ দিন কোনও কাজ না হওয়ায় স্কুলটির টিকে থাকাই দায়।
এ দিনও গ্রামের পরেশ সন্ন্যাসী, হরিহর বিশ্বাস, গণেশ বিশ্বাস, নিতাই বিশ্বাস-সহ প্রায় ১০টি পরিবার আতঙ্কে তাঁদের বাড়িঘর নিজেরাই ভেঙে নিয়েছেন। পরেশবাবু আসবাবপত্র নৌকায় তুলে ওপারে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে গিয়েছেন। নিতাইবাবু পরিবার নিয়ে গেলেন নদিয়ায় আত্মীয়ের বাড়ি। ভাঙন বিধ্বস্ত গোপাল বিশ্বাস, উত্তম চক্রবর্তীরা বললেন, ‘‘৫০টি পরিবার সর্বস্বান্ত হলাম। কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার।’’ একই অবস্থা ভূতনির নন্দীটোলাতেও। সেখানেও প্রচুর আবাদি জমি গিয়েছে গঙ্গার গ্রাসে। জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy