Advertisement
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
CIOVID-19 Vaccines

তালিকায় নাম, তবু টিকা-দ্বিধায় অনেকে

উত্তরবঙ্গে জেলাগুলির একাংশে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের কেউ কেউ বুঝতে পারছেন না, প্রথমেই প্রতিষেধক নেবেন কি না।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:৩১
Share: Save:

করোনার প্রতিষেধক নেওয়ার ব্যাপারে বাসিন্দাদের একাংশ বিভ্রান্ত। মালদহ থেকে কোচবিহার, প্রথম পর্যায়ে যাঁদের প্রতিষেধক নেওয়ার সুযোগ মিলছে, তাঁদের অনেকেও নেবেন কি না, তা নিয়ে দোটানায় রয়েছেন। প্রতিষেধক দিতে শিলিগুড়ি পুরসভার সাফাই কর্মীদের নাম চাওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে তিন দিন ধরে তাঁদের নাম নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু এ দিন অনেকে নাম দিতে অনীহা প্রকাশ করেছেন বলে পুরভারই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে।

উত্তরবঙ্গে জেলাগুলির একাংশে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের কেউ কেউ বুঝতে পারছেন না, প্রথমেই প্রতিষেধক নেবেন কি না। কেউ কেউ এখনই নিতে চাইছেন না। ওই ব্যক্তিদের একাংশের মত, দু’টি প্রতিষেধক ছাড়পত্র পেলেও তার একটির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাই পরিস্থিতি দেখে শুনে প্রতিষেধক নিতে চান বলে জানান কয়েক জন।

ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া দেশে জরুরি ভিত্তিতে দু’টি প্রতিষেধককে ছাড়পত্র দিয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্রিটিশ সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রোজেনেকার প্রতিষেধক কোভিশিল্ড আর হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক এবং কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান আইসিএমআর জুটির কোভ্যাক্সিন। প্রতিষেধকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার হার নিয়েও প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী সংস্থা দু’টি একে অপরের বিরুদ্ধে নানা কথা বলছে। তা নিয়েও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী মহলের মত।

শিলিগুড়ি পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, ‘‘প্রতিষেধক নেওয়ার বিষয়টি বাধ্যতামূলক নয়। এর আগে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্তদের নামের তালিকা পাঠানো হয়েছে। এ বার বাকি কর্মী-আধিকারিকদের প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য নামের তালিকা সুডা’তে পাঠানো হচ্ছে। তার মধ্যে সাফাই কর্মীরা রয়েছেন।’’ তিনি জানান, এখন কেউ নাম দিতে না চাইলে পরে সুযোগ না-ও পেতে পারেন, সেটা বুঝতে হবে। পুরসভার সাফাই বিভাগের দায়িত্বে থাকা প্রশাসক বোর্ডের সদস্য মুকুল সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘প্রতিষেধক নিয়ে নানা রকম বিষয় শোনা যাচ্ছে। মানুষ সেই সব প্রচারে প্রভাবিত হচ্ছে। পুরসভার সাফাইকর্মীদের কারা প্রতিষেধক নিতে চাইছেন না, তা দেখব।’’ পুরসভার সাফাই বিভাগের কর্মী রাজেশ হেলা বলেন, ‘‘অনেকে হয়তো ভাবছে, প্রতিষেধকে যদি তার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা তৈরি হয়। কিন্তু আমরা চাই, সকলেই নাম পাঠাক।’’

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল, রায়গঞ্জ মেডিক্যালের চিকিৎসক, নার্সদের অনেকে প্রতিষেধক নেবেন কি না, তা নিয়ে এখনই স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। মালদহের উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ অমিতাভ মণ্ডলের কথায়, ‘‘প্রতিষেধক নিলেই ভাল।’’ প্রতিষেধক নিলে পাছে কোনও সমস্যা হয়, তাই অনেকেই চিকিৎসকদের কাছে খোঁজখরবর নিতে শুরু করেছেন। রায়গঞ্জ মেডিক্যালের শাসকদলের অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মী সংগঠনের কর্মকর্তা প্রশান্ত মল্লিক বলেন, ‘‘আমরাও পরিষ্কার বুঝতে পারছি না প্রতিষেধক নেওয়াটা কতটা জরুরি, নিলে বিপদের মধ্যে পড়তে হবে কি না।’’

কোচবিহার মেডিক্যালের কয়েক জন চিকিৎসক জানান, তাঁরা প্রথম দফায় নেবেন না। সব ঠিকঠাক থাকলে পরে নেবেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের চিকিৎসক কল্যাণ খানের মত, ‘‘নিজেকে এবং অন্যকে নিরাপদ রাখতে প্রতিষেধক নেওয়াটা জরুরি। এটা রাজনীতি বা ব্যবসার বিষয় নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus CIOVID-19 Vaccines
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE