পর্যটনে বিনিয়োগ প্রয়োজন
তিস্তা নদীর বাঁ দিকে প্রায় ৯৬১৪ বর্গ কিমি আয়তনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলটি ডুয়ার্স নামে পরিচিত। পাহাড়, অরণ্য, জলাশয় ও নদী দিয়ে প্রকৃতি যেন এখানে নিপুণ হাতে এক তিলোত্তমা গড়েছে। তবে রূপসালি ডুয়ার্স মানেই বৈকুণ্ঠপুর, বক্সা টাইগার রিজার্ভ বা গরুমারার অভয়ারণ্যই শুধু নয়, ডুয়ার্স মানে তিস্তা নদী পরিবৃত কামতাপুর রাজবংশের ঐতিহ্যশালী নিদর্শন। জীবজন্তু ও প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ ডুয়ার্সে রয়েছে বঙ্কিমচন্দ্রের ঐতিহাসিক উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘দেবীচৌধুরাণী’-র গোপন আস্তানা। প্রাচীন জল্পেশ মন্দির, বক্সা দুর্গ, জয়ন্তী পর্বত, জলদাপাড়া, হাসিমারা, অভয়ারণ্য, প্রাগজ্যোতিষপুর, কামতাপুর, সাম্রাজ্যের পুরাকীর্তি, রসিকবিল, মালঞ্চি, মূর্তি ব্রিজ, কুঞ্জনগর, ফুলশিলিং, চিলাপাতা, লাটাগুড়ি, মেটেলি, গরুবাথান প্রভৃতি স্থানে আশ্চর্য শোভা উপভোগের অভিব্যক্তি বাঁশ, বেত, কাঠের আশ্চর্য কারুশিল্প, বনজ মধু, চা, ভাওয়াইয়া ও আদিবাসী ঝুমুরের সহাবস্থান ইত্যাদি আরও কত কী। সুন্দরী ডুয়ার্সের এমন রূপের টানে বাংলা, ভারত তথা বিশ্বের বহু পর্যটকই এখানে ভিড় জমান। পর্যটকদের এই সমাগমকে কাজে লাগিয়েই আদিবাসী অধ্যুষিত ডুয়ার্সের আর্থ সামাজিক কাঠামোর একটা বড় পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। কিন্তু এই সম্ভাবনাটি ঠিক যে সব কারণে ব্যাহত হচ্ছে তা হল ১) পরিবহণ সমস্যা: জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের মতো প্রধান শহর বাদ দিলেও ডুয়ার্সের ১৫১টি বাসরাস্তার বেশির ভাগই যান চলাচলের অনুপযুক্ত। কলকাতা-ডুয়ার্সের সংযোগকারী ৩১ নং জাতীয় সড়কের উপর ব্রিজগুলি সব বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে। ২) পরিকাঠামোর অভাব: পর্যটকদের থাকার সুব্যবস্থা, শৌচাগার ইত্যাদি এখনও গড়ে ওঠেনি। জয়ন্তীর মতো একটি বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রে নেই থাকার ভাল ব্যবস্থা। এখানে থাকতে হলে কলকাতা থেকে বুকিং করতে হয়, এই নিয়ম বাতিল করা প্রয়োজন। ৩) রাজনৈতিক সমস্যা: বর্তমান রাজনৈতিক সংকট পর্যটকদের ডুয়ার্স বিমুখ করে তুলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও শান্ত করতে প্রশাসনিক উদ্যোগ প্রয়োজন।
শিল্প স্থাপনের মতো পর্যটনেও চাই মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ। পর্যটন বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলিকে ধরে আনতে হবে। পর্যটকদের বিনোদনের জন্য উত্তরবঙ্গের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ব্যবহার করতে হবে। উত্তরবঙ্গের ভাওয়াইয়া বিষহরি ও আদিবাসী সংস্কৃতির জনপ্রিয়তা সর্বজনবিদিত। প্রতিটি লজ-আবাসনে বিনোদন মাধ্যম হিসেবে এ সবের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। তা ছাড়াও এলাকার বাঁশ কাঠ ও বেতের শিল্পকর্মগুলির পসরা সাজাতে হবে। তাতে পর্যটকেরা আকৃষ্ট হবেন। হেরিটেজ সার্কিট ট্যুর চালু করতে হবে। দরকার প্রশিক্ষিত ট্যুরিস্ট গাইডেরও। বর্তমান রাজ্য সরকার এই মর্মে দ্রুত কাজ শুরু করে দিয়েছে। উত্তরের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পর্যটনকে আরও সুদৃঢ় করার জন্য বর্তমান সরকার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ মারফত কোটি কোটি টাকার প্রকল্প ঘোষিত হয়েছে। যার সবটাই ব্যয় করা হবে পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে। এখানে উল্লেখ্য যে, এর ফলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে ৫১ শতাংশ।
ঝন্টু বড়াইক। অধ্যাপক পূর্বস্থলী গভর্নমেন্ট কলেজ, শিলিগুড়ি
প্রত্যাশা পূরণ করেনি পুরসভা
চেয়েছিলাম আমার ওয়ার্ডে জল নিকাশি ব্যবস্থা ভাল হোক। দু’-তিন দিন অন্তর ড্রেন থেকে ময়লা আবর্জনা অপসারণ করা হোক। প্রত্যেক গলিতে পানীয় জল, পাকা রাস্তা এবং আলোর ব্যবস্থা হোক। কমিউনিটি হল, শিশুদের জন্য পার্ক এবং বৃদ্ধবৃদ্ধাদের জন্য বিকেলে একটু বসার ব্যবস্থা করা হোক। এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি সংস্কার করা হোক। কিন্তু জলপাইগুড়ি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে বিগত ১০ বছরে অধিকাংশই পূরণ হয়নি।
স্বপনকুমার মুখোপাধ্যায়। আদরপাড়া, জলপাইগুড়ি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy