জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সোমবার এক গৃহবধূর মৃত্যুতে ডেঙ্গির আতঙ্ক বাড়ল শিলিগুড়িতে। প্রাথমিকভাবে র্যাপিড কার্ড টেস্টে তাঁর ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। ম্যাক এলাইজা পরীক্ষার জন্য রক্তের নমুনা পাঠানো হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অনুমান, ওই মহিলা, সুস্মিতা পাল (৩৮) ডেঙ্গির ‘শক সিনড্রমে’ আক্রান্ত হয়েছিলেন। যা সাধারণ ডেঙ্গির থেকে বিপজ্জনক। জ্বরের চার দিনের মাথায় তাঁর মৃত্যু হল। এ বছর এটাই প্রথম ডেঙ্গিতে মৃত্যু বলে স্বাস্থ্য দফতরেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে।
সুস্মিতার বাড়ি হাকিমপাড়ার রজনীকান্ত সরণীতে। গোটা হাকিমপাড়া জুড়েই ডেঙ্গির ভয়ানক দাপট শুরু হয়েছে বলেও স্বাস্থ্য দফতরের নজরদারিতে ধরা পড়েছে। গত দুই দিনে সেখানে ৯ জন ডেঙ্গি রোগী চিহ্নিত করেছেন তারা। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই মহিলার উপসর্গ দেখে তো মনে হচ্ছে, তিনি ডেঙ্গির শক সিনড্রমে আক্রান্ত ছিলেন।’’
পরিবার এবং নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, সুস্মিতা দেবী গত শুক্রবার থেকেই জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। চিকিৎসককেও দেখান। চিকিৎসককে দেখিয়ে রক্ত পরীক্ষাও করানো হয়। রবিবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যায় খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমে তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল। গভীর রাতেই শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে পড়ে। এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ তাঁকে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর দুই সন্তান রয়েছে।
মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই মহিলার মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তবে ডেঙ্গি কি না, তা স্বাস্থ্য দফতর জানায়নি। খোঁজ নিচ্ছি। মঙ্গলবার ডেঙ্গি নিয়ে পুরসভায় জরুরি বৈঠকও ডাকা হয়েছে।’’
গত কয়েক দিনে শিলিগুড়িতে ডেঙ্গির দাপট যে আরও বেড়েছে তা স্বীকারও করেছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ পেরিয়ে গিয়েছে বলেই তারা মনে করছেন। বেসরকারি হিসেবে সংখ্যাটা দু’শোর কাছাকাছি। বিশেষ করে গোটা হাকিমপাড়া এলাকায় ডেঙ্গির সংক্রমণ মারাত্মক ভাবে ছড়িয়ে পড়ায় নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতর। এ দিন শিলিগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বৈঠকও করেন। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে পুরসভাকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সচেতনতা বাড়াতে এবং রোগ ঠেকাতে যে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তা কাজ করছে না।
কয়েকটি কারণও তারা চিহ্নিত করেছেন। তার মধ্যে নির্মাণকাজের জায়গায় জল জমে থাকা, ফ্ল্যাটের বাড়ির সংখ্যা বেশি। সেখানে ঘরে বা বাড়ির কোথাও জল জমে থাকছে। অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য দফতরের দল গেলেও বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না তারা। ফলে স্বাস্থ্য কর্মীরা বাড়িতে ঢুকে বাসিন্দাদের সচেতন করা, কী করতে হবে বোঝাতে পারছেন না। যে ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই মহিলা, সেই ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুজয় ঘটক বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল বলে জেনেছি। ডেঙ্গি কি না স্বাস্থ্য দফতরই বলতে পারবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy