Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

রাজগঞ্জে তরুণীকে ধর্ষণে ধৃত হোমগার্ড, অভিযোগ সালিশিরও

এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক হোমগার্ডকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের বাসিন্দা ওই তরুণীর পরিবারের দাবি, এই ঘটনার পরে স্থানীয় সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্য সালিশি করে তা মেটানোর চেষ্টা করেছিলেন। সম্প্রতি শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে ভক্তিনগর থানার আশিঘর এলাকা লাগোয়া জঙ্গলে এক কিশোরীকে গণধর্ষণের পরেও সেখানকার স্থানীয় পঞ্চায়েতের এক সিপিএম সদস্য সালিশির মাধ্যমে বিষয়টি মেটানোর জন্য ওই কিশোরীর পরিবারের উপরে চাপ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৫ ০২:০৪
Share: Save:

এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক হোমগার্ডকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের বাসিন্দা ওই তরুণীর পরিবারের দাবি, এই ঘটনার পরে স্থানীয় সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্য সালিশি করে তা মেটানোর চেষ্টা করেছিলেন।

সম্প্রতি শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে ভক্তিনগর থানার আশিঘর এলাকা লাগোয়া জঙ্গলে এক কিশোরীকে গণধর্ষণের পরেও সেখানকার স্থানীয় পঞ্চায়েতের এক সিপিএম সদস্য সালিশির মাধ্যমে বিষয়টি মেটানোর জন্য ওই কিশোরীর পরিবারের উপরে চাপ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তাঁকে গ্রেফতারও করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার রাতে রাজগঞ্জ ব্লকের বেলাকোবা ফাঁড়ির ওই হোমগার্ডকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতের নাম গোবিন্দ রায়। রবিবার তাঁকে জেলা দায়রা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। রাজগঞ্জ থানার ওসি সনাতন সিংহ বলেন, ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। ওই তরুণীর বাড়ির লোক দাবি করেছে, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন।

পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, গত ১৩ মার্চ রাতে ওই তরুণীর রাজগঞ্জ ব্লকের বাড়িতে যান অভিযুক্ত হোমগার্ড। ওই দিন ওই যুবতীর মা বাড়িতে ছিলেন না। তিনি এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। ঘরে একা ঘুমোচ্ছিলেন ওই তরুণী। তাঁর বাবা, দাদা ও বৌদি বাড়িতে থাকলেও তাঁরা ছিলেন অন্য দু’টি ঘরে। ওই সুযোগে অভিযুক্ত মদ্যপ অবস্থায় ঘরে ঢুকে ছুরি দেখিয়ে যুবতীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। যুবতীর চিত্‌কার শুনে বাড়ির লোকজন বার হলে অভিযুক্ত হোমগার্ড পালিয়ে যান।

পুলিশ জানতে পেরেছে, তার পরের দিন শনিবার ওই তরুণীর পরিবারের লোকেরা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের ধীরেন্দ্রনাথ রায়ের বাড়িতে যান। ধীরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, “কোনও সালিশি হয়নি। ওই দিন সকাল সাতটা নাগাদ ওই তরুণীর পরিবারের লোকজন আমার বাড়িতে আসেন। আমি তাঁদের পুলিশের কাছে যেতে বলি। কিন্তু তাঁরাই জোর করছিলেন আমাকে তাঁদের বাড়ি যাওয়ার জন্য।” তিনি জানান, দুপুরে তিনি ওই তরুণীর বাড়িতে যান। তখনও তাঁদের তিনি পুলিশের কাছেই যেতে বলেন। প্রাক্তন সাংসদ সিপিএমের মহেন্দ্র রায় বলেন, “ধীরেন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি সালিশি করেননি। পুলিশের কাছেই যেতে বলেছিলেন ওই পরিবারের লোকজনকে।” তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেমস কুজুর বলেন, “সালিশির অভিযোগ যখন একবার হয়েছে, তখন তা অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক সলিল আচার্যও বলেন, “পঞ্চায়েত সদস্য সালিশি সভা করে থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ধৃত হোমগার্ড তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোহ অস্বীকার করেছেন। আদালতে নেওয়ার সময় তিনি বলেন, “সমস্ত ঘটনা সাজানো। তদন্ত হলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।” ধৃতের ছেলেরও দাবি, “পুরোটাই সাজানো ঘটনা।” ধৃতের পরিবারের অভিযোগ, ওই যুবতীর বাড়িতে দিশি মদ বিক্রি হয়। অভিযুক্তের দাবি, সে দিন রাতে মদ খাওয়া নিয়ে ঝামেলার জেরে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে পুলিশও জেনেছে, ওই রাতে গোবিন্দবাবু সহ তিন জন মদ খেতে ওই বাড়িতে যান। নেশা করে বাকিরা বাড়ির চলে গেলেও গোবিন্দবাবু ফের মদের খোঁজে একা মাঝপথ থেকে ওই বাড়িতে ফিরে যান। গোবিন্দবাবুর দাবি, তারপরে কেবল বচসাই হয়েছিল ওই পরিবারের সঙ্গে। কিন্তু ওই পরিবারের দাবি, তিনি তখন ধর্ষণ করেন ওই তরুণীকে।

অন্য বিষয়গুলি:

rajganj rape
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE