রীতা সরকার। নিজস্ব চিত্র
এক স্কুল শিক্ষিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুই যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার বিকেলে এনজেপি থানার শক্তিগড় এলাকার ঘটনা। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা ওই শিক্ষিকাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম রীতা সরকার (৩২)। তিনি শক্তিগড় বালিকা বিদ্যালয়ের ভূগোলের শিক্ষিকা ছিলেন। মা রেখা সরকারের সঙ্গে থাকতেন তিনি।
রীতাদেবীর ঘর থেকে পুলিশ একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে। তাতে ধৃত দুই যুবকের নাম লেখা ছিল। বছর দুয়েক ধরে রীতাদেবীকে ধৃতরা উত্ত্যক্ত করছিল বলে অভিযোগ। সহ্য করতে না পেরে তিনি এই পথ বেছে নিলেন বলে নোটে উল্লেখ করেছেন। রাতেই পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। শিলিগুড়ির ডিসি (পূর্ব) গৌরব লাল বলেন, ‘‘পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হচ্ছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলে যাওয়া এবং বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে উত্ত্যক্ত করা হতো বলে সুইসাইড নোটে উল্লেখ রয়েছে। এই নিয়ে তিনি মানসিক অবসাদেও ভুগছিলেন। গত তিন দিন ধরে স্কুলেও যাননি। মৃতার এক দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এক দাদা রায়গঞ্জে থাকেন। আরেক দাদা দীর্ঘ দিন ধরেই নিখোঁজ। বাবা মারা যাওয়ার পর মা-মেয়েই বাড়িতে থাকতেন। গত দু’বছর ধরে তিনি শক্তিগড় স্কুলে পড়াচ্ছিলেন।
শোকে ভেঙে পড়েছেন মা। নিজস্ব চিত্র
মৃতার মামা হাবুল রায় বলেন, ‘‘ভাগ্নি খুবই কম কথা বলত। পড়াশোনা নিয়েই থাকত। দু’ বছর আগে পুজোর রাতে দুই যুবক ওদের বাড়ির গেটে মদ খেয়ে ধাক্কাধাক্কি করেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে পুলিশ আসতেই যুবকরা পালায়। কিন্তু দিদি বা ভাগ্নি কেউ কিছুই বলেনি। ছ’মাস পরে এ সব জানতে পারি। এ বার কী হয়েছিল, তাও জানি না।’’ ঘটনার পর থেকে মৃতার মা রেখাদেবী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের আরেক আত্মীয় আনন্দ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা অভিযুক্তদের শাস্তি চাই। নিশ্চয়ই এমন কিছু হয়েছে, যাতে ও মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল।’’
এ দিন রীতাদেবী নিজের ঘরেই দুপুর থেকে ছিলেন। মা রেখাদেবী স্নান সেরে বাড়ির অন্য দিকে ছিলেন। হঠাৎ মেয়ের ঘরের দরজা বন্ধ দেখে তিনি ধাক্কাধাক্কি করেন। পরে তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এলাকার তৃণমূল নেতা কৌশিক দত্ত বলেন, ‘‘মেয়েটি পড়াশোনায় বরাবর খুব ভাল ছিল। তবে কথাবার্তা কম বলত। কবে থেকে এমন সব হচ্ছিল তা কাউকে পরিবারটি জানায়নি। আমরাও
খোঁজ নিচ্ছি।’’
সুইসাইড নোটের তথ্য অনুসারে রাতেই পুলিশ অভিযুক্তদের খোঁজে নামে। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy