তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে কোচবিহারে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। গত ৪৮ ঘন্টায় দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে অন্তত তিন বার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার রাতে কোচবিহার জেলা তৃণমূল নেতা অভিজিৎ দে ভৌমিকের আত্মীয় তথা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রানা বসুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এক ব্যবসায়ীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্যবসায়ীর নাম সম্রাট কুন্ডু। শহরের স্টেশন মোড় এলাকায় একদল যুবক আচমকা সম্রাটবাবুর ওপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। কোচবিহারের একটি নার্সিংহোমে তাঁর চিকিৎসা চলছে। ওই ঘটনার ২৪ ঘন্টা আগে শুক্রবার রাতে একই শিবিরের বলে পরিচিত কোচবিহারের হাজরাপাড়া এলাকায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সহ সভাপতি রাহুল রায়কে একদল যুবক ব্যাপক মারধর করেন বলে অভিযোগ। কোচবিহার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার পর শনিবার তিনি বাড়ি ফিরেছেন। ওই দিন রাতেই সুনীতি রোডে স্বর্ণেন্দু ঘোষ নামে এক তৃণমূলকর্মীকে মারধর করা হয় বলে পাল্টা অভিযোগ ওঠে। স্বর্ণেন্দুবাবু তৃণমূল যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা সভাপতি শুভজিৎ কুন্ডুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। দুই দিন পরপর এমন সংঘর্ষের ঘটনা ঘিরে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব রবিবার বলেন, “দুই পক্ষই অভিযোগ করেছে। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’’ পরপর ওই সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষই পরস্পরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। রানাবাবু বলেন, “ পরিকল্পিত ভাবে রাহুলবাবুর উপরে হামলা করা হয়। শনিবার সম্রাটবাবুর উপরে হামলাকারীরাও প্রাক্তন যুব জেলা সভাপতি শুভজিৎ কুন্ডুর বাড়ির সামনে জমায়েত হয়েছিলেন। তারাই হামলা করেন। পুরো বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি।” তৃণমূল যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা কোচবিহার পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর শুভজিৎ কুন্ডু অবশ্য ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। শুভজিৎবাবু বলেন, “ওই দুই জনের ওপর হামলার ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। বরং তৃণমূল কর্মী স্বর্ণেন্দুবাবুকে মারধরের সময় রানাবাবুও সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে শুনেছি। একটি নার্সিংহোমে তাঁর চিকিৎসা চলছে।”
এদিকে জখম ব্যবসায়ী সম্রাটবাবুর পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, শুভজিৎবাবুর বাবা প্রয়াত বীরেন কুন্ডু কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন সম্রাটবাবু পুরসভার কাজের অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই মামলা সংক্রান্ত আক্রোশের জেরেই তাঁর উপরে হামলা করা হয়। সম্রাটবাবুর ভাই সুরাট কুন্ডু বলেন, “প্রয়াত প্রাক্তন পুরপতির বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলার রোষেই দাদার উপরে হামলা হয়। ওই ব্যাপারে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে।” প্রয়াত প্রাক্তন পুরসভা চেয়ারম্যান বীরেন কুন্ডুর ছেলে শুভজিৎবাবু অবশ্য বলেন, “২০১০ সালে ওই মামলা করা হয় পুরসভার বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই।” তৃণমূলের রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “গোষ্ঠীকোন্দলের কেনও ব্যাপার নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy