প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার নকল সোনা লেনদেনে নাম জড়ানোয় দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টরকে। পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদির নির্দেশে ওই অফিসারকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি ফাঁসিদেওয়া থানার বিধাননগর তদন্তকেন্দ্রে কর্মরত। বুধবার তাঁকে থানায় বসিয়ে রেখে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। অফিসাররা জানিয়েছেন, তদন্তে নকল সোনার প্রতারক চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে ওই অফিসারকে লাইনে ক্লোজ করে সাসপেন্ড করা হতে পারে। আদালতেও লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই আধিকারিকের এক আত্মীয়কে পুলিশ খুঁজছে। তিনি কার্শিয়াঙের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। দার্জিলিং জেলা পুলিশ তো বটেই শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারেটের তরফেও তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও অবশ্য কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। চক্রে জড়িত আত্মীয়টি সোনার লেনদেন করলেও ওই পুলিশ অফিসার টাকা জমা রাখতেন বলে অভিযোগ।
তদন্তকারীরা জেনেছেন, ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিধাননগর এলাকায় দু’বার নকল সোনার লেনদেন হয়েছে। বিধাননগর চেকপোস্টের কাছে পুলিশ দুই মহিলা-সহ চারজনকে গ্রেফতার করে। ৬০টির উপর নকল সোনার বিস্কুট উদ্ধার হয়। ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় কার্শিয়াঙের বাসিন্দা,এক যুবক। লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে ওই চারজনের হাতে নকল সোনা তুলে দিয়ে পরে পুলিশে খবর দিয়ে তাদের গ্রেফতার করানো হয়েছিল কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
৩ ফেব্রুয়ারির মাটিগাড়ায় ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নকল সোনার লেনদেন হয়েছে বলে শিলিগুড়ি পুলিশের গোয়েন্দারা খবর পান। নেপাল এবং দিল্লির দুই বাসিন্দাকে ২০০টি নকল সোনার বিস্কুট দিয়ে টাকা আদায় হয়েছে বলে অভিযোগ। এখানে মূল পান্ডা হিসাবে কার্শিয়াঙেরই এক যুবক সাগরের নাম উঠে আসে। সন্দেহজনক গতিবিধির অভিযোগে পরবর্তীতে নেপাল ও দিল্লির ওই দুই বাসিন্দা ধরা পড়েন। তারা পুলিশের কাছে দাবি করেন, সাগরের নির্দেশে বিধাননগরের এক পুলিশ আধিকারিকের হাতে টাকা দিয়েছিলেন। নকল সোনা বুঝে তারা সেগুলি বিধাননগরে নিয়ে গিয়েছিলেন। একটি ধাবায় ওই নকল সোনা ফিরিয়ে নিয়ে টাকা ফেরতের আশ্বাস দিলেও তা করা হয়নি। এরমধ্যেই ফেরার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তারা। সাগর ততক্ষণে গা ঢাকা দেয়।
শিলিগুড়ি পুলিশের তরফে দার্জিলিং পুলিশকে যে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে, তাতে ওই অফিসারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তিনিই নকল সোনার লেনদেনের পর ৫০ লক্ষ টাকা রেখেছিলেন বলে অভিযোগ। প্রেস স্টিকার সেঁটে একটি এসইউভি গাড়িও ব্যবহার হয়েছিল। ৪ ফেব্রুয়ারি মাটিগাড়ার হিমাঞ্চল বিহার থেকে গাড়িটি উদ্ধার করে পুলিশ। অফিসারের বাড়িতেও তল্লাশি হয়েছে। নকল সোনা ও টাকার খোঁজের পাশাপাশি এবং সাগরের খোঁজেও তল্লাশি নেমেছে পুলিশ। দার্জিলিং জেলা পুলিশের ডিএসপি (গ্রামীণ) প্রবীর মণ্ডল বলেন, ‘‘পুরোটাই বিভাগীয় বিষয়। এখন কিছু বলছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy