জনসমর্থন ফিরে পেতে ষষ্ঠ তফসিল ছেড়ে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ফেরার সিদ্ধান্ত নিল জিএনএলএফ। রবিবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সম্প্রতি দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান থেকে জিএনএলএফের নয়া মন ঘিসিঙ্গ পুত্র দাবি করেছিল, ষষ্ঠ তফসিলের চুক্তিকে কেন্দ্রীয় সরকার মর্যাদা না দিলে, দল ফের পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ফিরে যাবে। এ দিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সেই সিদ্ধান্তকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দলের সূত্রে জানানো হয়েছে, আপাতত পৃথক রাজ্যের দাবিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে পরের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। আপাতত স্মারকলিপি-আর্জিতেই পৃথক রাজ্যের দাবিকে রাখতে চাইছে জিএনএলএফ।
এ দিন জিএনএলএফের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা প্রকাশ দাহাল বলেন, ‘‘বৈঠকে সর্বসম্মত ভাবে পৃথক গোর্খাল্যান্ড আদায়কেই দলের মূল দাবি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। দলের সুপ্রিমো প্রয়াত সুবাস ঘিসিঙ্গের সঙ্গে কেন্দ্র সরকারের ষষ্ঠ তফসিল চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তিকে কেন্দ্রীয় সরকার অবজ্ঞা করে চলেছেন। সে কারণেই পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে বেছে নেওয়া হয়েছে।’’
পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি ঘিরেই জিএনএলএফের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। সুবাস ঘিসিঙ্গের সঙ্গে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়। যদিও সেই চুক্তি সংসদে পাশ হয়ে লাগু হয়নি। পরবর্তীতে মোর্চার উত্থানের পরেও সুবাস ঘিসিঙ্গ ষষ্ঠ তফসিল চুক্তিকে কার্যকর করার দাবিতেই অনড় ছিলেন। ঘিসিঙ্গের মৃত্যুর পরে তাঁর ছেলে মন দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। মন সভাপতি হওয়ার পরে দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রথম প্রকাশ্য সভায় পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ফিরে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এ দিন দলের তরফে প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করে সেই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
দল সূত্রের খবর, সরকারের ‘অবজ্ঞা’র কথা বলা হলেও জনসমর্থনের কথা ভেবেই পৃথক রাজ্যের দাবিতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দলের এক নেতার কথায়, মোর্চাও সম্প্রতি ফের পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে দিল্লিতে অবস্থান করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে আর্জি জানিয়ে বছরভর কর্মসূচিও রয়েছে মোর্চার। অন্য দিকে, জিটিএ-র বিভিন্ন উন্নয়নের বিষয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে মোর্চা। গত শুক্রবারই নানা দাবিদাওয়া নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছে মোর্চা নেতৃত্ব। জিএনএলএফ নেতাদের মতে, একদিকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা অন্য দিকে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি তুলে দিল্লিতে অবস্থান করে পাহাড়ের ‘আবেগ’কেও কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে মোর্চা। এই পরিস্থিতিতে মোর্চাকে পাল্টা চাপে ফেলে জনসমর্থন ফিরে পেতেই ফের পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সামনে আনা হয়েছে বলে জিএনএলএফ সূত্রের খবর।
মোর্চার কালিম্পঙের বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রী অবশ্য বলেন, ‘‘কোনও দল তাদের মতো করে যে কোনও দাবি তুলতে পারে, তা নিয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। সে দাবি কতটা আন্তরিক, তা সময় বলবে। তবে পাহাড়বাসী আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy