Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
দ্বন্দ্বেই কি ঝরল রক্ত
TMC

গুলির পরপরই চম্পট, ফিরে মৃত্যু অভিযুক্তের

তাঁদের অভিযোগ, কালী ও তাঁর ছেলে অনিরুদ্ধ বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তৃণমূলের দলীয় অফিসে যান।

সঞ্জিতকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সকলে চিৎকার করে ওঠে।

সঞ্জিতকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সকলে চিৎকার করে ওঠে। (ভিডিয়োটি সকাল থেকে ভাইরাল হয়, এর সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি)

নীহার বিশ্বাস 
গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:৩০
Share: Save:

ছেলের আর মাংস খাওয়া হল না, এই কথা বলে অঝোরে কেঁদেই চলেছেন মৃত তৃণমূল কর্মী সঞ্জিত সরকারের মা কৈকেয়ী সরকার। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌতম দাসের অনুগামী হওয়ায় বিপ্লব মিত্রের ডান হাত কালীপদ সরকার গুলি করে ছেলেকে খুন করেছে। এ দিকে, ঘটনার পরে এলাকায় ছড়িয়েছে তীব্র আতঙ্ক। বসেছে পুলিশি পিকেট।


তৃণমূল সূত্রে খবর, বরাবরই গৌতমের অনুগামী ছিলেন সঞ্জিত। গত লোকসভা ভোটের পর বিপ্লব সদলবল বিজেপিতে যোগ দিলেও সঞ্জিত তৃণমূলেই ছিলেন। স্থানীয়রা বলছেন, নিজের খাসতালুক নারায়ণপুরে সঞ্জিতদের দাপিয়ে বেড়ানো ‘ভাল চোখে’ নেননি কালীপদ ওরফে কালী। গত শুক্রবার বিপ্লব জেলা চেয়ারম্যান হতেই স্বমহিমায় ফিরে আসেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কালী। তার পরেই দলবল নিয়ে সঞ্জিতের উপরে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেন কালী— এমনটাই অভিযোগ।


এ দিন সকালের ঘটনা নিয়ে কয়েক ঘণ্টা পরেও উত্তেজিত স্থানীয়রা। তাঁদের অনেকেই বললেন, ‘‘সঞ্জিত বাচ্চা ছেলে। এলাকায় ও প্রচুর কাজ করত। অনেকেই ওকে ভালবাসত। ওর উপরে কালীপদরা এসে এমন হামলা চালাবে, এটা ভাবাই যায় না!’’ বস্তুত, যে ভিডিয়োটি এর মধ্যেই ছড়িয়েছে সামাজিক মাধ্যমে, তাতে দেখা যাচ্ছে, স্থানীয়দের তাড়াতেই কালী ও তাঁর দলবল বাইকে চেপে পালাচ্ছেন। তার পরে পার্টি অফিসে ঢুকে সঞ্জিতকে ওই ভাবে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ওই স্থানীয়দের অনেকে চিৎকার করে ওঠেন।


তাঁদের অভিযোগ, কালী ও তাঁর ছেলে অনিরুদ্ধ বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তৃণমূলের দলীয় অফিসে যান। সেই সময় অফিসেই বসেছিলেন সঞ্জিত। দিনের আলোয় গুলি করে খুন করার অভিযোগ ওঠে কালীর বিরুদ্ধে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন এলাকায় সন্ত্রাস চালিয়েছেন কালী। কিন্তু মাঝে বিপ্লবের হাত থেকে জেলার ‘ক্ষমতা’ চলে যাওয়ায় কিছুদিন শান্ত ছিলেন কালী। স্থানীয় বাসিন্দা সবিতা রায় বলেন, ‘‘বিপ্লব মিত্র চেয়ারম্যান হওয়ার পরেই কালীর বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়। যে দিন বিপ্লব চেয়ারম্যান হন, সে দিন এই পার্টি অফিসের সামনে বোমাও ফাটায় ওরা।’’


যদিও, সঞ্জিতকে বিজেপি কর্মী বলে এই ঘটনা বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে দাবি করেন বিপ্লব। তিনি বলেন, ‘‘ও আমাদের দলের কর্মী ছিল না। ও বিজেপি করত। বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে এই ঘটনা ঘটেছে।’’ কিন্তু গৌতম ও প্রাক্তন জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ স্পষ্ট বলেন, ‘‘সঞ্জিত আমাদের দলের সক্রিয় কর্মী।’’


দলের নেতাদের এই পরস্পর বিরোধী মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। দলের কর্মীকে খুনের অভিযোগ ঘনিষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে ওঠায় অস্বস্তি ঢাকতেই কি বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছেন বিপ্লব, সে প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। তবে এই ঘটনার পরে বিপ্লব যে রাজনৈতিকভাবে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে গেলেন, তা মানছেন অনেকেই। কালীর দিকে অভিযোগ ওঠায় দলে বিপ্লবই যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব করছেন, গৌতমদের সেই অভিযোগ জোরালো হল বলছেন কর্মীরাই। এ নিয়ে শিলিগুড়িতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূলের জন্যই এমন সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Political Clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy