ছবি এএফপি।
করোনা সংক্রমণ, মৃত্যু রুখতে অবশেষে উত্তরবঙ্গের পাঁচটি শহরে পূর্ণ লকডাউনের ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার রাতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশিকা জারি করে ওই ঘোষণা করেন। সরকারি সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ, মালদহ এবং কোচবিহার সদরে কঠোরভাবে শহর জুড়ে লকডাউন কার্যকরী করার জন্য জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রসচিব। আজ, বুধবার থেকে থেকে নির্দেশ কার্যকরী করতে বলা হয়েছে। বস্তুত, সংক্রমণ রুখতে যে পূর্ণ লকডাউন জরুরি, আনন্দবাজারই প্রথম বলেছে।
রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘করোনার সঙ্গে লড়াই করতে নানা সময় নানা পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হচ্ছে। কনটেনমেন্ট জ়োনে পূর্ণ লকডাউন ছিল। তা বিভিন্ন এলাকায় ১৯ জুলাই অবধি বহাল থাকছে। এর বাইরে এ বার কয়েকটি শহরের সংক্রমণ পরিস্থিতি বিচার করে সেখানে পুরোপুরি লকডাউনের সুপারিশ করা হয়েছে।’’ যদিও দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম রাতে বলেন, ‘‘এটা পূর্ণ লকডাউন নয়। তবে তেমন কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে তা সকলকে জানানো হবে।’’ অবশ্য জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি স্পষ্টই জানিয়ে দেন, এটা পূর্ণ লকডাউন।
দ্বিধাদ্বন্দ্ব যা-ই থাক, আজ, বুধবার থেকে সরকারি নির্দেশ মতো রাস্তায় না নামার কথা টোটো, অটো, মোটরবাইক, রিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ির। বাজার, ব্যাঙ্ক, দোকানপাটও বন্ধ রাখারই কথা। প্রশাসনিক কর্তারা জানান, পাঁচটি শহরে খোলা থাকবে শুধু নিত্যপণ্য এবং ওষুধের দোকান।
প্রশাসন সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন শহরে করোনা সংক্রমণ দিনদিন বাড়ছে। মঙ্গলবার মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪২০০ ছাড়িয়েছে। মারা গিয়েছেন অন্তত ৬০ জন। সংক্রমণ ও মৃত্যুর দিক থেকে শিলিগুড়ি শহরের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। এর পরেই রয়েছে মালদহ এবং জলপাইগুড়ি। তেমনই রায়গঞ্জ এবং কোচবিহারের পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে। এই অবস্থায় বাসিন্দারা বিভিন্ন স্তর থেকে পূর্ণ লকডাউনের পক্ষে সওয়াল শুরু করেন। আর্থিক লোকসান ভুলে জীবন বাঁচাতে সেই দাবিতে সামিল হয় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি। শিলিগুড়ির ১৯টি সংগঠনের যৌথ মঞ্চ, জলপাইগুড়ির ব্যবসায়ীরা প্রশাসন এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পূর্ণ লকডাউনের পক্ষে সওয়াল করেন (আনন্দবাজার সংখ্যাগরিষ্ঠের সেই বক্তব্য নিয়মিত তুলে ধরেছে)।
সরকারি সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরামর্শ করেন সচিবেরা। কলকাতা ছাড়া শিলিগুড়ি, মালদহের মতো বিভিন্ন সদর শহর ও জেলার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। তার পরেই রাতে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তবে নির্দেশিকা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি ছড়ায় রাতে। অফিসারেরা জানান, চিঠিতে উল্লেখিত শহরগুলির ছাড়া বাকি এলাকার কনটেনমেন্ট জ়োনে কঠোরভাবে লকডাউন করতে বলা হয়েছে, যা ১৯ জুলাই অবধি চলবে।
আর শিলিগুড়ি, মালদহ বা জলপাইগুড়ির মতো শহরগুলিতে আজ, বুধবার থেকে পূর্ণ লকডাউন শুরু হবে। তা কত দিন চলবে, সেটা পরে ঘোষণা করা হবে।
তবে রাতে নির্দেশিকায় পূর্ণ লকডাউনের কথা বলা হলেও প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ এখনও দ্বিধাগ্রস্ত। তাঁরা কলকাতায় যোগাযোগ করে নির্দেশিকার ব্যাখ্যাও চান। সেই সঙ্গে বুধবার কোনও সময়ের উল্লেখ না থাকায় বাসিন্দাদের জানানোর জন্য কখন মাইকিং করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলে রাত পর্যন্ত। প্রস্তুতি ছাড়া শহর হুট করে বন্ধ করার বদলে আজ, বুধবার বিকেল থেকে বন্ধ করা যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা চলে।
ইংরেজবাজার, পুরাতন মালদহ এবং কালিয়াচকে পূর্ণ লকডাউন শেষ হচ্ছে। নির্দেশে শুধুমাত্র মালদহ লেখা থাকায় তা গোটা জেলায় কার্যকরী কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy