—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাস পরিষেবা নিয়ে নবান্নের বৈঠকে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা থেকে ওড়িশার ভুবনেশ্বরগামী একাধিক বাস বেআইনি ভাবে ‘কাটা রুটে’ চলাচলের অভিযোগ ওঠার পরেও নির্বিকার পরিবহণ দফতর। জেলা পরিবহণ দফতরে অভিযোগ জানিয়ে সুরাহা না হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দরবার করল পরিবহণ ইউনিয়ন। তদন্ত চলছে বলে দাবি জেলা পরিবহণ দফতরের।
জেলার হলদিয়া ও নন্দকুমার থেকে পড়শি রাজ্য ওড়িশাতে সবচেয়ে বেশি দূরপাল্লার বাস চলাচল করে। গত কয়েকমাস ধরে ভুবনেশ্বরগামী দূরপাল্লার বাসগুলি নির্দিষ্ট অনুমোদিত রাস্তায় না গিয়ে ‘কাটা রুট’ দিয়ে চলাচল করছে বলে দাবি। এর ফলে একদিকে যাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। অন্যদিকে তেলের খরচ কমাতে বাসগুলি নির্দিষ্ট রাস্তা এড়িয়ে চলছে। নন্দকুমার ও হলদিয়া থেকে ভুবনেশ্বর ও পারাদ্বীপগামী বাস ১১৬ বি জাতীয় সড়ক ধরে ভায়া ভগবানপুর ও এগরা রাজ্য সড়ক ধরে ওড়িশায় যাওয়ার কথা। কাঁথির পেটুয়াঘাট বাসস্ট্যান্ডে থেকে এগরা হয়ে ওড়িশার পারাদ্বীপে দূরপাল্লার বাস যাওয়ার কথা। অভিযোগ, পাঁচ থেকে সাতটি বাস কয়েকমাস যাবত নির্দিষ্ট রাস্তা দিয়ে চলছে না।
রুট পারমিট (যে পথে বাস চলবে তার বৈধ নথি) পাওয়ার আগে, বাস মালিকদের পরিবহণ দফতরকে জানাতে হয়। তাঁরা কোন নির্দিষ্ট পথে যাত্রী পরিবহণ করতে চান। বাসের অন্য নথি-সহ এই ইচ্ছাপত্র দিতে হয় পরিবহণ দফতরে। কিছুদিন ওই নির্দিষ্ট পথে যাত্রী পরিবহণের পরই মেলে রুট পারমিট। কিন্তু অভিযোগ, রুট পারমিট একবার হাতে পাওয়ার পর কিছু বাস পুরো পথে যাত্রী পরিবহণ করে না। পরিবর্তে বাস চালানো হয় ঘুরপথে। এ ভাবেই নন্দকুমার থেকে ওড়িশাগামী বাস ভায়া বাজকুল ভগবানপুর রাজ্য সড়কে আর ঢুকছে না। পরিবর্তে ১১৬ বি জাতীয় সড়কে বাজকুল হয়ে আরও এগিয়ে হেঁড়িয়াতে আসে। সেখান থেকে ভায়া ইঁটাবেড়িয়া এগরা রাজ্য সড়ক দিয়ে ওড়িশা যাচ্ছে। ফলে ভগবানপুর থেকে পটাশপুর প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার রাজ্য সড়কের যাত্রীরা ওড়িশাগামী এই সকল বাস পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পেটুয়াঘাট বাসস্ট্যান্ডে ওড়িশাগামী বাস সোজা ১১৬ বি জাতীয় সড়ক ধরে বেআইনি ভাবে পঞ্চাশ কিলোমিটার বেশি এগিয়ে নন্দকুমারে গিয়ে থামছে। বেআইনি ভাবে কাটা রুটে বাস চালানো নিয়ে তমলুক ও কাঁথি পরিবহণ দফতরে এগরা মহকুমা পরিবহণ ইউনিয়নের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাতে সুরাহা হয়নি বলে দাবি। তদন্ত চলছে বলে জানিয়ে গোটা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে দাবী পরিবহণ ইউনিয়নের। যদিও বেআইনিভা বে বাস পরিষেবা নিয়ে বাস মালিকেরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। প্রসঙ্গত, আন্তরাজ্য বাস পরিষেবায় ক্ষেত্রে দুই রাজ্যের পরিবহণ দফতর যুক্ত থাকে। ওড়িশা রাজ্যে পরিবহণ দফতর তাদের রাজ্যে বাস পরিষেবায় জন্য রাস্তার অনুমতি নেয়। সেই ভিত্তিতে তারা একটি নির্দিষ্ট রাস্তার অনুমতি দেন। এক্ষেত্রে কোন ভায়া পথ ও বাসস্ট্যান্ড সেই অনুমোদিত তালিকায় উল্লিখিত থাকে না। আইনের সেই ফাঁককে কাজে লাগিয়ে বেআইনি ভাবে কাটা রুটে গাড়ি চলাচল হচ্ছে বলে দাবি।
এগরা মহকুমা পরিবহণ ইউনিয়নের সভাপতি চন্দ্র শেখর রায় বলেন, ‘‘রাস্তার অনুমোদন পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পথেই বাস চলছিল। পরিবহণ দফতরের অনুমোদন পাওয়ার পরে কাটা রুটে বেআইনি ভাবে বাস চলাচল করছে। তমলুক ও কাঁথি পরিবহণ দফতরে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোন সুরাহা হয়নি। আধিকারিকেরা বলছেন আমাদের রাস্তা সম্পর্কে অবগত নেই। তাই বাধ্য হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ জানিয়েছি।’’ তমলুক জেলা পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কাটা রুটে বাস চলাচল নিয়ে অভিযোগ পয়েছি। গোটা ঘটনায় তদন্ত চলছে। রাস্তা চিহ্নিত করতে কাঁথি পরিবহণ বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy