গরুমারার জঙ্গল।—ফাইল চিত্র।
গরুমারার জঙ্গল থেকে গন্ডার-খুন করে খড়্গ লোপাটের অভিযোগের রেশ কাটতে না কাটতেই উধাও বেঙ্গল সাফারি পার্কের চিতাবাঘ সচিন! তার মাঝে ডুয়ার্সে বিষ-মাংসে চিতাবাঘের মৃত্যুর অভিযোগও উঠেছে। বন দফতর সূত্রের খবর, পরপর এমন ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে বন-প্রশাসনে। তার জেরেই রাজ্যের সমস্ত বনাঞ্চলের বন্যপ্রাণীর বিচরণভূমি এলাকার সঙ্গে চিড়িয়াখানার নিরাপত্তার সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ অবশ্য এ নিয়ে বিশদে কিছু বলতে চাননি। তিনি কেবল বলেন, “সমস্ত বনাঞ্চল এলাকায় বন্যপ্রাণীর বিচরণভূমি ও রাজ্যের চিড়িয়াখানাগুলির সামগ্রিক বাস্তব অবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য বলেছি।”
বন প্রশাসনের অন্দরের খবর, জানুয়ারি মাসেই ওই কাজ শুরুর ব্যাপারে প্রাথমিক পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। বনকর্তাদের একাংশের ধারণা, ওই কাজ হলে বাস্তব সমস্যার ছবি উঠে আসবে। সেক্ষেত্রে কোন এলাকার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, তা বুঝতেও সুবিধে হবে। বন দফতর সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের জলদাপাড়া থেকে দক্ষিণবঙ্গের সুন্দরবন— একযোগে সমস্ত এলাকার অবস্থা নিয়েই পরিস্থিতি অনুযায়ী রিপোর্ট পাঠাবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা। রাজ্যের চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ দেখবে তাদের আওতাধীন এলাকার পরিকাঠামো থেকে সমস্যা, প্রয়োজনীয়তার দিকগুলি। দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘একযোগে রাজ্যের ১১টি চিড়িয়াখানা, সমস্ত বনাঞ্চলে এমন উদ্যোগ প্রায় নজিরবিহীন। তবে নানা ঘটনার প্রেক্ষাপটে সত্যিই এটা প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল।’’
পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের কর্তারাও ওই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু জানান, অভয়ারণ্য ছাড়াও রাজ্যের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল ও লাগোয়া এলাকায় বন্যপ্রাণীর আনাগোনা রয়েছে। বেশিরভাগ এলাকায় চুক্তিভিত্তিক বনকর্মীরাই জঙ্গল পাহারায় ভরসা। চোরাশিকারীদের দৌরাত্ম্যও রয়েছে। অনেক আগেই এমন উদ্যোগ দরকার ছিল। তাঁর কথায়, “পরিবেশ, বাস্তুতন্ত্র সবটাই জঙ্গল, বন্যপ্রাণীর ওপর নির্ভরশীল। তাই শুধু খতিয়ে দেখা নয় দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়াটাও প্রয়োজন।” পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাসগ্রুপের সম্পাদক অরুপ গুহ বলেন, “ওই উদ্যোগ স্বাগত। এতে ভুল, ত্রুটি, খামতিগুলি জানা সহজ হবে। পাশাপাশি চিড়িয়াখানায় আরও প্রশিক্ষিত কর্মী নিয়োগ, দফতরের শূন্যপদ পূরণ, পাহারার কর্মীদের জন্য আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবস্থা নিয়েও দ্রুত পদক্ষেপ করা দরকার।”
বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু চিড়িয়াখানা থেকে কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানাতেও কোনও খামতি থেকে থাকলে এতে বেঙ্গল সাফারির মত ঘটনার আশঙ্কা এড়াতে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy