Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Maynaguri Congress Worker Murder

ময়নাগুড়িতে গাছে বেঁধে কংগ্রেস কর্মীকে খুন! ধৃত পাঁচ, প্রতিবেশীদের পুরনো বিবাদ দেখছে পুলিশ

জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে এক কংগ্রেস কর্মীকে গাছে বেঁধে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের স্থানীয় বুথ সভাপতি-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিরা পলাতক।

Five arrested after congress worker allegedly murdered by goons in Jalpaiguri

ময়নাগুড়িতে কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ময়নাগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪ ১৬:৫৮
Share: Save:

জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়িতে এক কংগ্রেস কর্মীকে গাছে বেঁধে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল। বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের স্থানীয় বুথ সভাপতি-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কয়েক জনের নাম রয়েছে অভিযোগপত্রে। তাঁদের খুঁজছে পুলিশ। তবে ঘটনাটিতে রাজনীতির যোগ নেই বলেই মনে করা হচ্ছে। পুলিশের দাবি, প্রতিবেশীদের মধ্যে পুরনো গোলমালের জেরেই এই হত্যা।

পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম মানিক রায়। তিনি ময়নাগুড়ির সক্রিয় কংগ্রেস কর্মী। খাগড়াবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। মানিকের স্ত্রী জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের ঝামেলা চলছে। তাঁদের ভয়ে মানিক পরিবার নিয়ে পাঁচ বছর শিলিগুড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পরেই এই ঘটনা। মানিকের স্ত্রীর কথায়, ‘‘আমার স্বামী নদী থেকে বালি তুলতে বাধা দিয়েছিল। ওরা আমাদের জমি দখলেরও চেষ্টা করে। পাঁচ বছর ধরে আমাদের জমি দখল করতে চাইছিল তৃণমূল কর্মীরা, তা নিয়ে অভিযোগ হয় ময়নাগুড়ি থানায়। সেই অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য আমাদের চাপ দেওয়া হতে থাকে। আমার স্বামীকে তৃণমূল করার জন্যও চাপ দেওয়া হত। বলত, এলাকায় থাকতে হলে তৃণমূল করতে হবে।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, শিলিগুড়ি থেকে গত রবিবার পরিবার নিয়ে ফিরেছিলেন মানিক। তার পর আবার তাঁকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরিবারের দাবি, বুধবার রাতে মানিককে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যান তৃণমূল কর্মীরা। গাছে বেঁধে তাঁকে মারধর করা হয়। ভোরে মৃত্যু হয় মানিকের।

এই ঘটনায় দুই মহিলা-সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতের স্ত্রী। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের স্থানীয় বুথ সভাপতিও। বাকিদের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ রায় বলেন, ‘‘তৃণমূলের কদর্য রূপ আবার প্রকাশিত হয়ে পড়েছে। নির্বাচনের পর থেকে মানিক ময়নাগুড়িতে থাকতে পারছিলেন না। তাঁকে ঘরছাড়া হতে হয়। শিলিগুড়ি থেকে ফেরার পর তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। তার পর মানিককে ডেকে নিয়ে গিয়ে তৃণমূলের কর্মীরা সংগঠিত ভাবে গাছে বেঁধে পিটিয়ে তাঁকে খুন করেন। রাজনৈতিক কারণে এই খুন। বাংলায় এ ভাবেই বিরোধী স্বরকে দমন করা হয়।’’

তৃণমূলের জেলা সম্পাদক অরূপ দে যদিও এ প্রসঙ্গে এখনই মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। তবে আমি এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু এখনও জানি না। খোঁজ নিচ্ছি। তার পর জানাব।’’

জলপাইগুড়ির এসপি খণ্ডবহালে উমেশ গণপত বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার সকালে মৃতের স্ত্রী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাতে জানানো হয়েছে, বুধবার রাতে একই এলাকার কয়েক জন ব্যক্তি তাঁদের বাড়িতে গিয়ে পুরনো শত্রুতার জেরে তাঁর স্বামীকে মারধর করেন। পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে এবং ময়নাগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসে। ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় নারায়ণ রায়, রাজকুমার রায়, মিঠুন দাস, দিলীপ রায়, আমন দাস, উত্তম রায়, মাধব রায়, বাপ্পা রায়, সবিতা রায়ের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

তবে এই ঘটনাটিকে রাজনৈতিক কারণে খুন বলে মনে করছে না পুলিশ। তাদের দাবি, প্রতিবেশীদের সঙ্গে পুরনো বিবাদের জেরেই এই হত্যা। ওই এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে বিবাদ চলছিল। তবে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE