—প্রতীকী চিত্র।
থমথমে গোটা গ্রাম। জায়গায়-জায়গায় মানুষের জটলা। কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার হরিণচওড়া এলাকার একটি বাড়ির ভিতর থেকে ভেসে আসছে কান্নার আওয়াজ। অভিযোগ, সেই বাড়িতেই শুক্রবার গভীর রাতে পুলিশের মারে মৃত্যু হয় আম্বিয়া বিবির (৫৫)। এই আম্বিয়ার ছেলে আমজ়াদকে গ্রেফতার করতেই মাঝরাতে বাড়িতে এসেছিল পুলিশ। বিকেল নাগাদ আম্বিয়ার মৃতদেহ বাড়িতে পৌঁছতেই পুরো গ্রামের মানুষ ভেঙে পড়েন সেই বাড়িতে। তাঁদের অনেকেই বলেন, ‘‘পুলিশ মধ্যরাতে এ ভাবে চড়াও না হলে, এমন খারাপ ঘটনা ঘটত না।’’
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ওই ঘটনার প্রতিবাদে এবং দোষী পুলিশ কর্মীদের শাস্তির দাবিতে কোচবিহার- দিনহাটা সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় মানুষজন। পরে কোচবিহার পুলিশের ডিএসপি চন্দন দাস ঘটনাস্থলে গিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে যায়। রাজ্য পুলিশের এডিজি জাভেদ শামিম সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছেন, পুলিশ ওই মহিলাকে মারধর করেনি। তেমন কোনও চিহ্ন
পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় মানুষজনের অবশ্য প্রশ্ন অনেক। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার পুলিশের এক গাড়ির চালকের সঙ্গে আম্বিয়া বিবির ছেলে আমজ়াদ আলির হাতাহাতি হয়। সেই ঘটনার অভিযোগে পুলিশ ওই বাড়িতে অভিযান করে। আমজ়াদ বাদে, তাঁর বাবা হাফেজ় আলি, তার ভাই ইমজ়াদ আলিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ইমজ়াদ আবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহের গাড়ির চালক। মন্ত্রী দাবি করেছেন, যে সময়ে হাতাহাতি হওয়ার কথা বলা হচ্ছে, সে সময়ে ইমজ়াদ তাঁর গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ফলে কোন যুক্তিতে ইমজ়াদকে গ্রেফতার করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গ্রামের বাসিন্দাদের প্রশ্ন, আমজাদ বড় কোনও অপরাধী নয়। সে একটি চায়ের দোকান চালান গ্রামে। তা হলে তাকে গ্রেফতার করতে মধ্যরাতে কেন অভিযান চালাতে হল পুলিশকে? কয়েক জন বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমজাদ তো সারা দিন দোকানেই থাকে। পুলিশ সেখানেই যেতে পারত। এমন ভয়ের পরিবেশ তৈরির প্রয়োজন কী ছিল?" স্থানীয় তৃণমূল নেতা আমিদুল হক বলেন, ‘‘শুধু আমজ়াদকে নয়, তার বাবা এবং ভাইকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশকে তো মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা। সেখানে এখন অন্য ভূমিকা দেখছি।’’
এ দিন পথ অবরোধের জেরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় মানুষকে। দীর্ঘপথ হেঁটে অন্য প্রান্তে গিয়ে গাড়ি ধরতে হয় অনেককেই। অনেকেই আবার সময়মতো স্কুল ও অফিসেও পৌঁছতে পারেননি বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy