পথ বাতির এক বছরের বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার ফলে প্রায় ২৪ ঘণ্টা অন্ধকারে থাকল গ্রাম পঞ্চায়েত দফতর।
বুধবার বিকেলে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বামফ্রন্ট পরিচালিত অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘটনাটি ঘটেছে। এর জেরে বৃহস্পতিবার দিনভর আটকে থাকে দফতরে কাজ। গ্রাম পঞ্চায়েত ভবনে রয়েছে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং প্রাণি সম্পদ বিকাশ দফতর। বিদ্যুতের অভাবে ফ্রিজ অচল থাকায় দুই দফতরের কর্মীরা নিরুপায় হয়ে এলাকার বাসিন্দাদের বাড়িতে ভ্যাকসিন রাখার ব্যবস্থা করেন। বকেয়া বিলের অর্ধেক দ্রুত মেটানোর আশ্বাস দিলে এ দিন বিকেলে ফের আলো জ্বলে।
বিদ্যুত্ বণ্টন দফতরের বিভাগীয় ম্যানেজার গোবিন্দ তালুকদার বলেন, “বিল বকেয়া থাকায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বিডিও শ্রদ্ধা সুব্বা বলেন, “ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ খুবই কম। ওঁরা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে পথ বাতির ব্যবস্থা করে এখন বিল মেটাতে পারছে না। ওঁদের বলেছি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।”
গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার পথ বাতির জন্য মাসে ৬০ হাজার টাকা বিদ্যুত্ বিল আসে। বছরে সেটা দাঁড়ায় ৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকায়। বিল পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে মেটানোর কথা। তহবিলে টাকা আসে রাজস্ব আদায় থেকে। গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তারা জানান, রাজস্ব আদায় ৬ লক্ষ টাকার বেশি হয় না। ওই টাকা দিয়ে অন্য কাজও করতে হয়। যে কারণে গত এক বছর বিদ্যুত্ বিল জমা করা সম্ভব হয়নি। বিদ্যুত্ বণ্টন দফতরের কর্তারা জানান, কয়েক দফায় বিলের টাকা জমা দিতে বলার পরেও লাভ হয়নি। ওই কারণে বুধবার বিকাল ৩টে নাগাদ পঞ্চায়েত দফতরের বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ দিন বিকেল ৩টে নাগাদ পঞ্চায়েত কর্তারা দ্রুত বকেয়া বিল মেটানোর আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
প্রশ্ন উঠেছে নিজস্ব তহবিলের দুর্দশা জেনেও কেন পথবাতির ব্যবস্থা করা হল? গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মৌ সূত্রধর বলেন, “বাসিন্দাদের চাহিদা মেনে পরিষেবা দিতে দু’বছর আগে পথবাতির ব্যবস্থা করা হয়।”
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৭টি সংসদের ১৫টিতে পথ বাতি রয়েছে। সংসদ প্রতি ৩০টি বাল্ব জ্বলে। রাজস্ব আদায়ের টাকা থেকে ওই পরিমাণ বিদ্যুতের বিল মেটানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়ানোয় পঞ্চায়েতের তরফে সম্প্রতি রাজস্ব বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের বিকাশ সেন বলেন, “রাজস্বের সামান্য টাকা বাসিন্দাদের একাংশ দিতে চান না। ওই কারণে সমস্যা জটিল হয়েছে।”
তবে রাজস্ব বাড়ানোর ব্যাপারে সাড়া পাওয়া না গেলে এপ্রিল মাসের পর থেকে পথ বাতি খুলে ফেলা হবে বলে সূত্রের খবর। বুধবার বিকেল থেকে বিদ্যুত্ সংযোগ না থাকায় বেশি বিপাকে পড়েন উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং প্রাণি সম্পদ বিকাশ দফতরের কর্মীরা। চিকিত্সক রতন সরকার জানান, দফতরের ফ্রিজ অচল হয়ে পড়ায় বেশ কিছু ওষুধ এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ির ফ্রিজে রাখার ব্যবস্থা করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy