এখনও আতঙ্ক কাটেনি পরিবারের। নিজস্ব চিত্র।
৪০ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে দেওঘরের ত্রিকূট পাহাড়ের সামনে মাঝ আকাশে রোপওয়েতে ঝুলে। চারজন নাবালক-সহ ১৪ জন মুখোমুখি হয়েছিলেন এই মৃত্যু অভিজ্ঞতার। আটকে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরের বিনয়কুমার দাসও। অনেকে বেঁচে থাকার আশা হারালেও তিনি হারাননি। পাশাপাশি তিনি এও জানতেন, খুব শীঘ্রই জল এবং খাদ্য সঙ্কটের মুখে পড়বে তাঁর পরিবার। তাই প্রবল বেঁচে থাকার ইচ্ছে থেকেই নিজের পরিবারের সদস্যদের বোতলে প্রস্রাব করার পরামর্শ দেন বিনয়।
তিনি বলেন, ‘‘জলের প্রয়োজন হতে পারত। তাই আগে থেকেই আমি পরিবারের সককে বোতলে প্রস্রাব করে রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু এই প্রস্রাব খেতে বাধ্য হওয়ার আগেই আমাদের উদ্ধার করা হয়েছিল।’’
বিনয়ের সাত জনের পরিবার। পরিবারের সকলকে নিয়েই তিনি ত্রিকূট পাহাড়ে গিয়েছিলেন। বিনয়ের ৫০ বছর বয়সি স্ত্রী ননী দাস বলেন, তিনি খাবার বা জল ছাড়াই ঘুরতে গিয়েছিলেন। কিন্তু এখন আর তাঁর কোনও আক্ষেপ নেই। উদ্ধার পরবর্তী অভিজ্ঞতা নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সবার সঙ্গে খুব ভাল আচরণ করা হয়েছিল। হেলিকপ্টারে নিয়ে যাওয়ার পরপরই আমাদেরকে খাবার এবং জল দেওয়া হয়। আমরা সৈন্যদের সঙ্গে খুব নিরাপদ বোধ করছিলাম।’’
ত্রিকূট পাহাড় থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানালেন মালদার মানিকচক থানার বাকিপুরের বাসিন্দা পুতুল শর্মাও। তিনি বিনয়ের পরিবারেরই আত্মীয়। ৯ এপ্রিল স্বামী চন্দ্রমোহন শর্মার সঙ্গে গয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। যাবার পথে বাসুকিনাথ দর্শনের পর ত্রিকূট পাহাড়ের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। স্বামী রোপওয়েতে না উঠলেও বিনয়ের পরিবারের সঙ্গে তিনি রোপওয়েতে উঠেছিলেন। এর পরই আওয়াজ করে ভেঙে যায় রোপওয়ে। অন্যদের সঙ্গে মাঝপথে আটকে পড়েন তিনিও। প্রায় ২৫ ঘণ্টা তিনি সেখানে আটকে ছিলেন। অবশেষে বায়ুসেনার হেলিকপ্টার তাঁদের উদ্ধার করে। মঙ্গলবার রাতে বাড়ি ফিরেছেন দম্পতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy