Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

নোটের গেরো, থমকে শীতের যাত্রাপালাও

শীত এলেই ফসল কাটা শেষে উৎসবের মরসুম শুরু হয়ে যায় ফি বছর। এ বার যেন সেই রঙ অনেকটাই ফিকে। আঘাত তাই যাত্রা শিল্পেও।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:২৪
Share: Save:

শীত এলেই ফসল কাটা শেষে উৎসবের মরসুম শুরু হয়ে যায় ফি বছর। এ বার যেন সেই রঙ অনেকটাই ফিকে। আঘাত তাই যাত্রা শিল্পেও।

কারও ভয়, টাকা নেই হাতে। তাই টিকিট কেটে আর যাত্রা দেখতে যাবেন না কেউ। কেউ আবার বায়নার টাকা জোগাড়ে হিমসিম। তাই কোথাও যাত্রার অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। কোথাও আবার আসর বসলেও লোকের ভিড় নজরে পড়ছে না। কোচবিহারের জেলা পরিষদের সদস্য কৃষ্ণকান্ত বর্মন পেশায় যাত্রা সংগঠক। তিনি জানান, এ বার একটি যাত্রাদলের সঙ্গে বায়না করে পাঁচটি তারিখ কিনে নিয়েছিলেন তিনি। সেই মতো পাঁচ জায়গায় স্থানীয় আয়োজকদের সঙ্গে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। শেষপর্যন্ত অবশ্য তাঁদের দু’টি তারিখ বাতিল করে দিতে হয়। তিনি বলেন, “চার লক্ষ টাকা বায়না করে পাঁচটি তারিখ কিনেছিলাম। আয়োজকরা পরে জানান টাকার অভাবে যাত্রাপালা এ বার আর করবেন না।”

কোচবিহারে যাত্রাপালার আসর ঘিরে জাঁকজমক নতুন নয়। প্রতি বছর শীত পড়তেই কলকাতার নামী যাত্রাদলের গাড়ি ছুটতে দেখা যায় গ্রামের ভিতরে। যাত্রার আসরে দেখা মেলে তাপস পাল, শতাব্দী রায় থেকে শুরু করে টলিউডের নতুন শিল্পীদেরও। এ বার নামী শিল্পীদের অভিনীত যাত্রা অনুষ্ঠান থাকলেও সেই সংখ্যা অনেক কম। কিছু গাড়ির দেখা মিললেও সেই কর্মব্যস্ততা নেই। মাথাভাঙার গোঁসাইয়ের হাটে যাত্রার অনুষ্ঠান বাতিল করে দিয়েছেন স্থানীয় আয়োজকরা। তাঁরা জানান, প্রতিবছর দু’দিন যাত্রাগানের আসর বসান। তা নিয়ে মানুষের মধ্যে উন্মাদনাও তৈরি হয়। এবারে পরিস্থিতি অন্যরকম। কারও হাতেই টাকা-পয়সা নেই। বাজারে জিনিসের বিক্রি কম। সেই সময় টিকিট কেটে যাত্রা দেখতে লোকের তেমন আগ্রহ থাকবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা। আয়োজকদের পক্ষে বাবলু বর্মন বলেন, “মানুষের হাতে টাকা নেই। এই অবস্থায় যাত্রার সাহস পেলাম না। তাহলে অনেক লোকসানের মধ্যে পড়ে যেতে হবে। তাই এ বারের মতো তা বন্ধ রাখা হয়েছে।”

সাধারণত গ্রামে দু’ধরণের যাত্রার আসর বসে। কোথাও টিকিট কেটে যাত্রা দেখতে আসেন মানুষ। কোথাও আবার খোলা প্যান্ডেলে যাত্রার আয়োজন করে আড়ালে জুয়ার আসর বসানো হয়। সেই সব ক্ষেত্রেও এবারে কোপ পড়েছে। রবিবার দেওয়ানহাটের কাছে এমনই একটি আসর বসেছিল। আয়োজকদের একজন বলেন, “এমন আসরে অনামী দল থাকে। তাই মানুষের আগ্রহ কম থাকে। যারা ভিড় করে তাঁদেরই বেশিরভাগ জুয়ায় বসে। এবারে লোকের হাতে টাকা নেই। তাই সেখানেও ভিড় জমছে না।” কলকাতার একটি যাত্রাদলের প্রধান দিলীপ দাস জানান, যাত্রা দল নিয়ে বেরিয়ে তাঁদের নানা অসুবিধের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। গাড়ির তেলের খরচ, খাওয়া, থাকার খরচ রয়েছে। তিনি বলেন, “সব মিলিয়ে নগদ টাকা দরকার। ব্যাঙ্ক থেকে যা তুলতে পারছি তা দিয়ে হচ্ছে না।”

অন্য বিষয়গুলি:

Demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy