কখন আসবে, ছাড়বে ট্রেন ঠিক নেই। এনজেপি স্টেশনে হাপিত্যেশ করে অপেক্ষায় যাত্রীরা। মঙ্গলবার রাতে বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
পাঁচটি প্ল্যাটফর্মের মধ্যে চারটিতে ট্রেন দাঁড়িয়ে রয়েছে। একটি প্ল্যাটফর্ম ফাঁকা রাখা হয়েছে জরুরি পরিস্থিতির জন্য। এ দিকে, পিছনে ক্রমাগত একটির পর একটি ট্রেন এসে দাঁড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রেল কর্তারা। ঘণ্টাখানেক এমন চললে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে সব দিকের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বেশি রাতের দিকে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টেশনে আটকে থেকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের। দূরপাল্লার ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকলেও, কিছু স্টেশনে ন্যূনতম পরিষেবা পর্যন্ত মেলেনি বলে অভিযোগ।
এনজেপি-তে এই দুর্ভোগের পিছনে ডালখোলায় দিনভর অবরোধ। দুর্ঘটনায় ছাত্রী মৃত্যুর জেরে সেখানে সারা দিন সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সন্ধ্যায় উঠে গেলেও রাতে ফের অবরোধ শুরু হয়। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে উত্তরের রেল চলাচল। এনজেপি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় মোট ১৬টি ট্রেনকে। ফলে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তর ভারতের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সন্ধ্যার পর শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা বা দিল্লিমুখী কোনও ট্রেন রওনা হতে পারেনি। দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকায় যাত্রীদের ক্ষোভও বাড়তে শুরু করে। রাত পৌনে এগারোটা নাগাদ রেল অবরোধ ওঠে। স্বাভাবিক হতে শুরু করে ট্রেন চলাচল। যদিও সড়ক তখনও ছিল অবরুদ্ধ।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের এনজেপি’র সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথি শীল বলেন, ‘‘ডালখোলায় অবরোধের জেরে এনজেপি-সহ লাগোয়া স্টেশনগুলিতে অন্তত ১৬টি ট্রেন বেশ কিছুক্ষণ ধরে আটকে ছিল। শিলিগুড়ির স্টেশনগুলিতে ৫টি ট্রেনকে রাখা হয়। অবরোধ উঠেছে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।’’
রেল সূত্রে খবর, দিল্লিগামী নর্থ-ইস্ট এক্সপ্রেস, কলকাতাগামী উত্তরবঙ্গ, সরাইঘাট এক্সপ্রেস এবং দার্জিলিং মেল দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকে। এনজেপি স্টেশনের পাঁচটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। একটি প্ল্যাটফর্মকে জরুরি পরিস্থিতির জন্য ফাঁকা রাখা হয়। জলপাইগুড়ি রোড থেকে এনজেপি যাওয়ার মাঝপথে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় পদাতিক এক্সপ্রেসকে। পরে ট্রেনটিকে রানিনগর স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনে কাঞ্চনকন্যা, জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেসকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এ ছাড়াও আলুয়াবাড়িতে কাটিহার ইন্টারসিটি, ডালখোলা স্টেশনে অবধ অসম, সূর্যকমল স্টেশনে ডাউন রাজধানী এক্সপ্রেস এবং বারসই স্টেশনে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে।
রেলের তরফে দাবি করা হয়েছে, দূরপাল্লার ট্রেনগুলিকে দাঁড় করিয়ে রাখায় বিভিন্ন স্টেশনে রেল পুলিশ এবং আরপিএফের অতিরিক্ত বাহিনী নামানো হয়। জলের ব্যবস্থাও করা হয়। যদিও, রানিনগর, শিলিগুড়ি টাউন, হাটোয়ার মতো ছোট স্টেশনে যাত্রীদের অভিযোগ, চূড়ান্ত দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। খাবার, জল কিছুই মেলেনি। কিছু স্টেশনে পর্যাপ্ত আলোও ছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy