Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪

বেমরসুমেও পর্যটকদের ভিড়ে জমজমাট দার্জিলিং

‘অফ সিজনে’ও জমজমাট ম্যাল। তাপমাত্রা যখন হিমাঙ্কের কাছাকাছি নেমে গিয়েছিল তখনও চকবাজারে, চৌরাস্তায় পর্যটকদের জমাটি আড্ডা দেখা গিয়েছিল। মেঘ-কুয়াশায় কাঞ্চনজঙ্ঘা ঢাকা থাকলেও, পর্যটকদের ভিড়ে ভাঁটা পড়েনি। গত বছরও এমন দৃশ্যে উচ্ছ্বসিত হয়েছেন দার্জিলিঙের ট্যুর অপারেটরেরা। সেই ধারা বদলায়নি এ বারও।

দার্জিলিঙের চা বাগানে পর্যটকদের ভিড়। শুক্রবার রবিন রায়ের তোলা ছবি।

দার্জিলিঙের চা বাগানে পর্যটকদের ভিড়। শুক্রবার রবিন রায়ের তোলা ছবি।

রেজা প্রধান
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৪৫
Share: Save:

‘অফ সিজনে’ও জমজমাট ম্যাল। তাপমাত্রা যখন হিমাঙ্কের কাছাকাছি নেমে গিয়েছিল তখনও চকবাজারে, চৌরাস্তায় পর্যটকদের জমাটি আড্ডা দেখা গিয়েছিল। মেঘ-কুয়াশায় কাঞ্চনজঙ্ঘা ঢাকা থাকলেও, পর্যটকদের ভিড়ে ভাঁটা পড়েনি। গত বছরও এমন দৃশ্যে উচ্ছ্বসিত হয়েছেন দার্জিলিঙের ট্যুর অপারেটরেরা। সেই ধারা বদলায়নি এ বারও। পর্যটকদের আগাম বুকিঙের চাপ সামাল দিতে তাই এ বার গ্রীষ্মের পর্যটনের মরসুম আরও এক মাস বাড়িয়ে দিলেন হোটেল ব্যবসায়ীরা।

সাধারণত গ্রীষ্মের পর্যটন মরসুম এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ধরা হয়। এই সময়ে হোটেলের ঘরের সর্বাধিক চাহিদা থাকে। ভাড়াও তুলনামূলক বেশি থাকে। জুন মাস থেকে বর্ষা শুরু হওয়ায় পর্যটকদের সংখ্যা কমতে থাকে। যদিও, হোটেল মালিকদের দাবি, এ বার পর্যটকদের আগাম বুকিং জুলাই মাস পর্যন্ত গড়িয়ে গিয়েছে।

পর্যটকদের ভিড়ের হিসেব মেলে দার্জিলিঙের পদ্মজা নাইডু চিড়িয়াখানা থেকে। দার্জিলিঙে আসা পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য এই চিড়িয়াখানা। কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর শীতের সময়েও চিড়িয়াখানায় প্রতি দিন গড়পরতা কয়েক হাজার পর্যটক এসেছেন। এ দিন শুক্রবার চিড়িয়াখানায় দর্শক সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়েছে বলে দাবি করেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের অধিকাংশই পর্যটক। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে পর্যটকদের এই ভিড় নজিরবিহীন বলে অনেকে মনে করছেন। চিড়িয়াখানার এস্টেট ম্যানেজার শিরোমণি সাঙ্গদেন বলেন, ‘‘চিড়িয়াখানাকে দার্জিলিঙের পর্যটকদের অবশ্য গন্তব্য বলাই যায়। ভোরবেলা ঘুম থেকে ওঠার অনীহাতে যিনি টাইগার হিলে যান না, সেই পর্যটকও চিড়িয়াখানা দেখতে আসেন। শুক্রবার ৪ হাজার ৪০০ জন দর্শক এসেছেন।’’

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত শীতের সময়েও প্রতি দিন গড়ে ২ হাজার এবং পরে শীত আরও বাড়লেও গড়ে ১ হাজার পর্যটক চিড়িয়াখানায় এসেছেন। চিড়িয়াখানার কর্মীদের দাবি, গত ৪-৫ বছরে যা নজিরবিহীন।কী বলছেন পর্যটকরা?

কলকাতা থেকে আসা পর্যটক স্বপন ঘোষের কথায়, ‘‘এই মেঘ-কুয়াশা, আবার হঠাৎ পাহাড়ের গায়ে রোদ ঠিকরে পড়ছে। হয়ত কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাইনি, কিন্ত পাহাড়ের বদলে যাওয়া আবহাওয়া দিব্যি উপভোগ করছি।’’

কেন গত বছর থেকে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে, তা নিয়ে বিভিন্ন ট্যুর অপারেটরেরা নানা রকম ব্যাখ্যা করলেও, সকলেই দাবি করেছেন পাহাড়ে শান্তির পরিবেশ থাকায় পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে। ট্যুর অপারেটর সুরেশ পেরিওয়াল বলেন, ‘‘গত তিন বছরের মধ্যে এ বারই পর্যটকদের ভিড় সর্বাধিক হয়েছে। সাধারণত বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে জুন মাসের পর আর পর্যটকরা পাহাড়ে আসেন না। এ বছর আগামী জুলাই মাস পর্যন্ত পর্যটকদের বুকিং রয়েছে। সম্ভবত পাহাড়ে শান্তি থাকা এর কারণ।’’

একটি অভিজাত হোটেলের ম্যানেজার রাজেশ রজক বলেন, ‘‘গত বছরও হোটেলে বেশ ভাল সংখ্যক বুকিং হয়েছিল। আমাদের হোটেলে ৬০টি ঘর রয়েছে। জুনের শেষ পর্যন্ত সব ঘর বুকিং হয়ে গিয়েছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE