Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

৮৫ বছরের বৃদ্ধাকে দেখার নির্দেশ ছেলেদের

লোক আদালতের নির্দেশে ৮৫ বছরের মাকে খোরপোশ দিতে বাধ্য হল দুই ছেলে। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি লোক আদালতে দার্জিলিং জেলা আইনি পরিষেবা সমিতির চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অজয় দাসের মধ্যস্থতায় দুই ছেলে নিধান ও বিধান দে মুচলেকা দিয়ে জানান, প্রতিমাসে খোরপোশ বাবদ মা জ্যোৎস্নাদেবীর হাতে পাঁচশো টাকা করে দেবেন তাঁরা। দুই ছেলের কেউ এই আদেশ অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আদালত সূত্রে জানানো হয়েছে।

মাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দুই ছেলে। —নিজস্ব চিত্র।

মাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দুই ছেলে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৫ ০২:১৮
Share: Save:

লোক আদালতের নির্দেশে ৮৫ বছরের মাকে খোরপোশ দিতে বাধ্য হল দুই ছেলে।

মঙ্গলবার শিলিগুড়ি লোক আদালতে দার্জিলিং জেলা আইনি পরিষেবা সমিতির চেয়ারম্যান তথা শিলিগুড়ি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অজয় দাসের মধ্যস্থতায় দুই ছেলে নিধান ও বিধান দে মুচলেকা দিয়ে জানান, প্রতিমাসে খোরপোশ বাবদ মা জ্যোৎস্নাদেবীর হাতে পাঁচশো টাকা করে দেবেন তাঁরা। দুই ছেলের কেউ এই আদেশ অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আদালত সূত্রে জানানো হয়েছে।

৫ বছর আগে মায়ের কাছ থেকে সম্পত্তি লিখিয়ে নিয়েছিল দুই ছেলে। তার পরেও মাকে দেখভাল না করার অভিযোগ উঠেছিল দুই ছেলের বিরুদ্ধে। তাকে মূল পাকা বাড়়ি থেকে সরিয়ে ঝুপড়ি ঘরে রেখে দেওয়া হয়েছিল। অভিমানী মা পড়়শিদের সাহায্যে শিলিগুড়ি আদালতে আইনি পরিষেবা সমিতির কাছে অভিযোগ করেন। তার ভিত্তিতে সমিতির পক্ষ থেকে লোক আদালতে একটি পিটিশন দায়ের করা হয় চলতি বছরের ২ জানুয়ারি। এরপরে ঘটনাটি নজরে আসে দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের। তারা বিষয়টি নিয়ে তদারকি শুরু করেন। এর পর ফেব্রুয়ারি মাসে দু’পক্ষকে হাজির হওয়ার নোটিশ পাঠানো হয়। দুই ভাই ও মাকে মুখোমুখি বসান চেয়ারম্যান। মাকে দেখভালে বাধ্য করান ছেলেদের। এই ঘটনায় খুশি লিগাল এড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার। তিনি বলেন, ‘‘চার বছর আগে আশালতা দাস নামে এক বৃদ্ধাকে ঠিক একইভাবে লোক আদালতের মাধ্যমে তাঁর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এদিন ফের প্রমাণিত হল আইন সক্রিয় রয়েছে।’’ তবে চেয়ারম্যান অজয় দাসের ভূমিকাও এ ক্ষেত্রে সদর্থক ছিল বলে জানান তিনি। জানা গিয়েছে, ওই দুই ভাইয়ের একজন মাছ বিক্রি করেন। অন্যজন একটি বেসরকারি ভবনের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেন। শিলিগুড়়ির সূর্যসেন কলোনিতে তাঁদের বাবার বাড়ি। তা ছিল মায়ের নামেই। ৫ বছর আগে মাকে দিয়ে দু’ভাই সমান ভাগে বাড়ি লিখিয়ে নেন। তার পর নিজেরা পাকা বাড়়িতে থাকলেও মাকে জমির এক প্রান্তে ভাঙা কুঁড়েতে থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন বলে অভিযোগ। ছেলেরা অবশ্য পাল্টা দাবি করেছেন মা তাদের কাছে দু’লক্ষ টাকা দাবি করছিল।

বিধানবাবু বলেন, ‘‘আমরা অত টাকা দিতে না পারায় ওঁর ক্ষোভ।’’ নিধানবাবুর দাবি, ‘‘মা নিজেই আলাদা থাকতেন।’’ তবে আদালতে কেন এলেন তিনি, এই প্রশ্নে দুই ভাই জানান, পড়়শিদের উসকানিতে এসেছেন। জ্যোৎস্না দেবী অবশ্য ছেলেদের উপরে এতটাই ক্ষুব্ধ, কোনও কথাই বলতে চাইলেন না। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলেদের আমি দেখতে চাই না।’’ প্রথমে তাঁদের সঙ্গে যেতেও তিনি অস্বীকার করেন। পরে অবশ্য জোর করে তাঁকে বাড়ি পাঠানো হয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE