Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪

মাটি ঢেকেই নাকি টাকা ফাঁকি!

অনির্বাণ রায় জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রকল্পে তিস্তা নদী থেকে জল তুলে পরিস্রুত করে পাইপ লাইনে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কাজ সম্প্রতি শুরু হয়েছে জলপাইগু়ড়িতে। এই প্রকল্পের বরাদ্দ দেড়শো কোটি টাকা।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:২০
Share: Save:

গর্ত খুঁড়ে যে মাটি উঠছে, তা দিয়েই সেই গর্ত বোজানো হচ্ছে। সরকারি প্রকল্পে এ ভাবেই কার্যত ‘মাটি দিয়ে ঢেকেই’ কোটি টাকা ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে কি না সে প্রশ্নই উঠেছে জলপাইগুড়িতে।

পুরসভার প্রকল্পে তিস্তা নদী থেকে জল তুলে পরিস্রুত করে পাইপ লাইনে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কাজ সম্প্রতি শুরু হয়েছে জলপাইগু়ড়িতে। এই প্রকল্পের বরাদ্দ দেড়শো কোটি টাকা। পে লোডার দিয়ে গর্ত খুঁড়ে বসানো হচ্ছে দামি পাইপ। সরকারি প্রকল্প অনুযায়ী পাইপে যাতে কোনও ক্ষতি না হয় এবং বৃষ্টিতে যাতে পুরনো গর্ত না বেরিয়ে পড়ে তার জন্য গর্ত বোজাতে পাথর-মাটি-বালি ঢালার কথা। নদী খাত বা রিভারবেডে এই ধরনের মাটি পাওয়া যায়, যাকে বলে বেডমিশালি। এর দামও বেশি। অভিযোগ, সরকারি প্রকল্পে বেডমিশালির জন্য অন্তত দু’কোটি টাকা ধরা থাকলেও, গর্ত ভরাট করা হচ্ছে সাধারণ মাটি দিয়েই।

গর্ত ভরাট করা নিয়ে পুরসভার ক্ষমতাসীন কাউন্সিলরদের মধ্যেও অসন্তোষ দানা বেঁধেছে। সম্প্রতি তৃণমূলের তিন কাউন্সিলর পুরসভার এক পদস্থ আধিকারিককে এ নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। কেন ঠিকাদার এজেন্সিকে এ বিষয়ে নোটিস দেওয়া হচ্ছে না সে প্রশ্নও আধিকারিককে করা হয়। এরপর পুর-কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেন বলে দাবি। বেডমিশালি না ফেলায় যে এজেন্সিগুলি কাজ করছে তাদের কয়েক দফা পাওনার কিছু অংশ কেটে রাখা হয়েছে বলে খবর। পুরসভা সূত্রের খবর, শহরে প্রায় ২২৫ কিলোমিটার পাইপ লাইন পাতার জন্য গর্ত খোঁড়া এবং ভরাট করতে ৯ কোটি টাকার কাছাকাছি খরচ হবে। যার মধ্যে প্রায় ২ কোটি টাকা বেডমিশালির জন্য ধরা রয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু অবশ্য কোনও অনিয়মের কথা মানতে চাননি। মোহনবাবু বলেন, “ধাপে ধাপে কাজ হচ্ছে। প্রথমে সাধারণ মাটি দিয়ে ভরাট করা হবে। তা বসে গেলে কয়েকদিন বাদে বেডমিশালি দেওয়া হবে।”

পুরসভার একটি সূত্রে দাবি, কোনও এলাকায় বেডমিশালি দিতে দেরি হতে পারে। প্রকল্পের কাজ এখনও শেষ হয়নি বলে এখনই অনিয়ম বলা যাবে না। তবে তৃণমূল কাউন্সিলরদেরই একাংশের অভিযোগ, শহরের যে সব এলাকায় সবার প্রথমে পাইপ বসানো হয়েছে সেখানে এখনও বেডমিশালি ফেলা হয়নি। এপ্রিল মাস থেকে কাজ শুরু হয়। সরকারপাড়া, মাসকলাইবাড়ি, বামনপাড়া, বোসপাড়ায় পাইপ বসানোর পরে আট মাস কেটে গেলেও বেডমিশালি ফেলা হয়নি। পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের চেয়ারম্যান পরিষদের সদস্য সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সোমবার থেকেই বেডমিশালি ফেলা হবে। আগে যেখানে কাজ হয়েছে সেখানে ফেলা হয়েছে কি না দেখে নিচ্ছি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Corruption Tista river Water Pipeline
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE