—প্রতীকী ছবি
করোনা সংক্রমণের মাত্রা অনেকটাই কমে এসেছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। আর তাতে কিছুটা হলেও সাধারণ বাসিন্দাদের পাশাপাশি স্বস্তি চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরাও। আগে দিনে ৩০০ থেকে ৫০০ নতুন করে আক্রান্ত হত উত্তরবঙ্গে। এখন সেখানে দৈনিক আক্রান্ত হচ্ছেন ৫০ থেকে ৬০ জন। কখনও একটু বেশি হলে ৯০ বা ১০০ জন। জেলাগুলিতে অ্যান্টিজেন টেস্ট এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল, কোচবিহার মেডিক্যাল, মালদহ বা রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভাইরোলজির ল্যাবরেটরিগুলিতে আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে রোজ গড়ে ৫ হাজার করে। তাতে নতুন সংক্রমণ খুবই কম মিলছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সংক্রমণের হার ১ শতাংশের মতো।
উত্তরবঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক তথা ওএসডি সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘কয়েক মাস আগেও দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। কেন না ভাইরাল লোড বেশি হচ্ছিল আক্রান্তদের। পাশাপাশি উপসর্গহীনরাও সংক্রমণ ছড়াচ্ছিলেন। মানুষকে সচেতন করতে নামা হয়। তাতে কিছুটা কাজ হয়েছে। তবে আত্মতুষ্টির জায়গা নেই। ফেব্রুয়ারি, মার্চ মাস পর্যন্ত সাবধান থাকতে হবে।’’ তাঁদের পর্যবেক্ষণ, মানুষ কিছুটা সতর্ক হওয়ায় সংক্রমণ সামলানো গিয়েছে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরির করোনা পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক শান্তনু হাজরা জানান, একটা সময় সংক্রমণের হার ১৬-১৮ শতাংশ হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘একটা সময় পর্যন্ত সর্বোচ্চ উঠে গ্রাফ নেমে যাবে, ভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষমতা কমে আসবে— এটাই নিয়ম। যদি না দ্বিতীয় ওয়েভ বা অন্য কোনও স্ট্রেন অ্যাকটিভ হয়।’’ তাঁর কথায়, সংক্রমণ কমে আসায় এখন যত বেশি পরীক্ষা হবে, সংক্রমণের হার কিন্তু তত কম মিলবে। এটাই নিয়ম।
তথ্য বলছে, সংক্রমণের হার অনেকটাই কমেছে। যেমন মালদহ মেডিক্যাল কলেজে নমুনা পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, গত পাঁচ দিনে ২৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এই কয়েক দিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে চার হাজারের উপরে। সেখানে দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহ জেলার লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং জেলা এবং কালিম্পং জেলার লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়ে থাকে। গত পাঁচ দিনে সেখানে ১১১ জন আক্রান্তের হদিস মিলেছে। নমুনা পরীক্ষা হয়েছে পাঁচ হাজারের মতো। রায়গঞ্জ মেডিক্যালে পরীক্ষা অনেকটাই কম হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ৩৫টির মতো। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, উপসর্গ নিয়ে কম লোক আসছে। দুর্গাপুজোর কিছু দিন পর থেকে সংক্রমণ কমতে থাকায় জেলায় বিভিন্ন এলাকায় শিবির করে কমিউনিটি টেস্টও বন্ধ রয়েছে।
কোচবিহার মেডিক্যালে আরটিপিসিআর পরীক্ষা ও জেলায় র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় প্রতিদিনই তিন হাজারের মতো নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। কোনও দিন ৫, কোনও দিন ৬ জন বা ১০ জন আক্রান্তের সন্ধান মিলছে। আক্রান্ত কমে আসায় অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যাও কমে এসেছে। একটা সময় সাড়ে চার হাজারের উপরে অ্যাকটিভ রোগী থাকত উত্তরবঙ্গে। এখন তা কমে ১৭০০ মতো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy