উনুনেই রাঁধছেন ইংরেজবাজারের বাসিন্দা শিখা মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।
টিনের ঝুপড়ি বাড়ি। বাড়ির উঠোনে উনুনে কড়াইতে ফুটছে ডিমের ঝোল। আর শোওয়ার ঘরে সাজানো গ্যাস সিলিন্ডার, ওভেন। কেন?
কড়াইতে খুন্তি নেড়ে ইংরেজবাজার শহরের নেতাজি পার্কের বাসিন্দা শিখা মণ্ডলের জবাব, ‘‘মাছ ধরে স্বামী সংসার চালান। সেই সংসারে প্রতিমাসে ন’শো টাকার গ্যাস কেনা সম্ভব নয়।’’ তাই গ্যাস ভুলে উনুনেই রান্না করতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, ‘‘লকডাউনের সময় প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা প্রকল্পে গ্যাস নিখরচায় গ্যাস পেয়েছিলাম। লকডাউনে দু’মাস বিনা মূল্যে মিলেছিল গ্যাস সিলিন্ডারও। তখন গ্যাসেই রান্না করতাম। এখন উনুনেই করতে হচ্ছে।’’
শুধু শহরই নয়, মালদহের গ্রাম-গঞ্জেও এমনই ছবি প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা প্রকল্পের অধিকাংশ উপভোক্তাদেরই। ২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার সুবিধা পেয়েছেন জেলার ৪ লক্ষ ৯০ হাজার পরিবার। হবিবপুর, গাজল, পুরাতন মালদহের মতো আদিবাসী প্রধান বিধানসভাগুলিতেই বেশি উপভোক্তা রয়েছেন। এই কেন্দ্রগুলিতে ভোটে সাফল্য পেয়েছে গেরুয়া শিবির। সাফল্য ধরে রাখতে আদিবাসী প্রধান বিধানসভাগুলিতে জোর দেওয়া হচ্ছে উন্নয়নে।
গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থার একাংশের দাবি, উজ্জ্বলা যোজনায় প্রতি মাসে গ্যাস কেনেন প্রায় ৬০ শতাংশ উপভোক্তাই। কেউ তিন মাস, কেউ আবার সিলিন্ডার কেনেন চার মাস পরে। কারণ, মালদহে ভর্তুকি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ৯১৬.৫০ টাকা। সেই সিলিন্ডারই ডিসেম্বরে ছিল ৭৪১ টাকা। ফলে প্রভাব পড়েছে উজ্জ্বলা যোজনার উপরেই। শহরেরই বাসিন্দা উমা মণ্ডল বলেন, ‘‘জল, দুধ গরম ছাড়া গ্যাসে কিছুই করছি না। উনুনেই রান্না করতে হচ্ছে। গ্যাসের যেমন দাম বাড়ছে, আমাদের মতো সাধারণ পরিবারের পক্ষে তা কেনা সম্ভব নয়।’’
গ্যাস নিয়ে কেন্দ্র সরকারকে খোঁচা দিয়েছেন রাজ্যসভার সাংসদ তৃণমূলের মৌসম নুর। তিনি বলেন, ‘‘বিনামূল্যে গ্যাস দিলেও সাধারণ মানুষের লাভ হয়নি। গ্যাসের দাম এখন আকাশছোঁয়া। সেই বিষয়ে নজর নেই কেন্দ্রের।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘গ্যাসে মানুষের লাভ হয়েছে কিনা তার উত্তর ভোটেই মিলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy