অস্ত্র হাতে রামনবমীর শোভাযাত্রায়। ইংরেজবাজারে। ছবি: স্বরূপ সাহা
'মনস্কামনা' পূর্ণ হয়েছে। আর তাই রবিবার দুপুরে বাসন্তী পুজোর নবমীতে সপরিবারে এসে মায়ের কাছে পুজো দিলেন তিওড় পাড়া গ্রামের বাসিন্দা কুতুবুদ্দিন শেখ। শুধু তাই নয়, রোজা থাকা সত্বেও এ দিন পুজো দেওয়ার পাশাপাশি বলির জন্য ছাগ-ও উৎসর্গ করেন কুতুবুদ্দিন। এই ঘটনা মালদহের মানিকচক ব্লকের লালবাথানি গ্রামের। মুসলিম পরিবারের হয়েও বাসন্তীরূপী দেবী দুর্গাকে কুতুবুদ্দিনের এই পুজো দেওয়াকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির বলে মনে করছেন ওই পুজো কমিটির কর্মকর্তাদের পাশাপাশি শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষজনেরাও। তাঁদের বক্তব্য, দেশজুড়ে যখন জাতিগত ভেদাভেদ, হানাহানি চলছে সেই সময় দাঁড়িয়ে এ ঘটনা সম্প্রীতির নিদর্শন।
মানিকচকের নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের লালবাথানি গ্রামে সাড়ে তিনশ বছরের বেশি সময় ধরে ধুমধাম করে বাসন্তী পুজো হয়ে আসছে। জানা গিয়েছে, কোনও এক জমিদারের আমলে এই পুজো শুরু হয়েছিল। এরপরে প্রায় ১০০ বছর ধরে স্থানীয় গ্রামবাসীরাই লালবাথানি সর্বজনীন বাসন্তী দুর্গোৎসব কমিটি করে এই পুজোর আয়োজন করছেন। কথিত আছে, এই মায়ের কাছে পুজো দিয়ে যে ভক্তরা মনস্কামনা করেন তা পূরণ হয়। আর সেই বিশ্বাসে প্রতি বছর অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মানুষ এই পুজোয় এসে মনস্কামনা করেন এবং পরে পুজোও দেন। বলির জন্য ছাগ-ও উৎসর্গ করা হয়। মূলত নবমীর দিন জাঁকজমক করে পুজো হয়।
এ দিন নবমীতে এই পুজোয় প্রায় ১০০ ছাগ বলি দেওয়া হয়েছে বলে কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে। পৌত্র না থাকায় দু'বছর আগে লালবাথানির এই বাসন্তী দেবীর কাছে এসে মনস্কামনা করেছিলেন স্থানীয় তিওড় পাড়ার বাসিন্দা কুতুবুদ্দিন শেখ। তাঁর দাবি, এই দেবীর কাছে মনস্কামনা করার ফলেই পুত্রবধূ এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এ কারণেই পুজো দিলেন। তিনি এ দিন রোজাও রেখেছিলেন এবং এ দিন দুপুরে স্ত্রী, পুত্রবধূ ও সেই পৌত্রকে সঙ্গে নিয়ে এসে পুজো দেন নিয়ম মেনেই।
কুতুবুদ্দিন বলেন, ‘‘ধর্ম আলাদা হলেও আল্লা বা ভগবান একই। তাই তাঁদের কাছে সকলেরই আশীর্বাদ চাওয়ার আছে। এখানে ভেদাভেদ করা ঠিক না।’’
এ দিকে এই পুজো কমিটির সম্পাদক অপূর্ব ভট্টাচার্য বলেন, "এখন চারদিকে মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ, হানাহানি যখন মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে তখন বাসন্তী মায়ের কাছে পুজো দিয়ে সম্প্রীতির অনন্য নজির গড়লেন কুতুবুদ্দিন সাহেব। তাঁকে আমরা কুর্নিশ জানাই। মায়ের কাছে সকলেই সমান।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy