Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Road Accident

বাবা-মা-দিদি কেউ আর বেঁচে নেই, জানেই না ছোট্ট রীতেশ

ক্রান্তির বারোঘড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা বিপন সরকারের স্ত্রী মামনি সরকার ও তিন বছরের ছেলে বিরাজের মৃত্যু হয়েছে এই দুর্ঘটনায়।

স্তব্ধ: স্বামী-সন্তানদের হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন দুলালি রায়। চূড়াভান্ডারে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

স্তব্ধ: স্বামী-সন্তানদের হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন দুলালি রায়। চূড়াভান্ডারে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

অর্জুন ভট্টাচার্য  
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৪৮
Share: Save:

পরিবার ছ’জন মারা গিয়েছেন। জখম হয়েছেন আরও দু’জন। শোক সামলেও জখমদের চিকিৎসার জন্য রাত জেগে হাসপাতালে পড়ে রয়েছেন কামেশ্বর সিংহ। বললেন, ‘‘বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে আমি ওদলাবাড়িতে চলে গিয়েছিলাম। মঙ্গলবার রাতে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসি। আমার বড় মেয়ে, জামাই, দুই নাতনি, ভাইয়ের বউ ও ভাইয়ের শাশুড়ি মারা গিয়েছেন। আট বছরের নাতি রীতেশ এখনও জানে না যে, ওর বাবা, মা ও দিদিরা কেউ আর বেঁচে নেই।’’

ক্রান্তির বারোঘড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা বিপন সরকারের স্ত্রী মামনি সরকার ও তিন বছরের ছেলে বিরাজের মৃত্যু হয়েছে এই দুর্ঘটনায়। মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বিপন। তিনি বলেন, ‘‘বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে আমি বাড়ি ফিরে যাই। শুক্রবার আমাদের বিয়ের চার বছর পূর্ণ হবে। বিবাহবার্ষিকীর অনুষ্ঠান করার কথা ছিল আমাদের। তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।’’

বিয়েবাড়ি জুড়েই শুধু হাহাকার। স্বজন হারানোর শোকে ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। ময়নাগুড়ির চর চূড়াভান্ডারের রানিরহাট মোড় শোকস্তব্ধ। থেকে থেকেই শুধু কান্নার শব্দ ভেসে আসছে।

রবিবার গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় প্লাইউড কারখানার শ্রমিক জয়দেব রায়ের বড় মেয়ে রীতার বিয়ে হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে মেয়ের বৌভাতের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। মঙ্গলবার রাত থেকেই জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে বাড়ির আত্মীয় স্বজনদের ভিড় উপচে পড়েছে। বুধবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয় জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন রায় বাড়ির প্রধান জয়দেব রায়। তিনি বলছিলেন, ‘‘কী আর বলব, বলুন! এমন দুর্ঘটনা ঘটবে, স্বপ্নেও ভাবিনি।’’ হাসপাতালের বিছানা ছেড়ে অজয় সিংহ শেষ বারের মতো তাঁর পরিবারের মৃতদেহগুলি দেখতে মর্গে চলে এসেছেন। তাঁকে বুঝিয়ে ফের হাসপাতালে পাঠালেন পরিবারের লোকেরা ।

এ দিন ময়নাগুড়ির রানিরহাটের শোকস্তব্ধ বাড়িতে যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও গৌতম দেব। অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘সমবেদনা জানানোর ভাষা নেই কোনও। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ছুটে এসেছি। মৃত ও জখমদের পরিবারের পাশে আছি আমরা।’’ চূড়াভান্ডারের বিজেপির বুথ সভাপতি পরমানন্দ রায়ের ছেলে এবং নাতিও দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন।

গৌতম দেব মৃতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার বার্তা দেন। বিজেপির বুথ সভাপতির বাড়িতে গিয়েও সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। যদিও সে সময় বিজেপির বুথ সভাপতি বাড়িতে ছিলেন না।

অন্য বিষয়গুলি:

Road Accident Dhupguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE