জমায়েত: ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের ভিতরে তখন বিডিও ও কেন্দ্রীয় দলের দুই সদস্য। বাইরে চলছে বিক্ষোভ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
আবাসের তদন্তে গিয়ে এ বার মালদহেও বিক্ষোভের মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় দল। বুধবার, গ্রামবাসীদের একাংশের বিক্ষোভে ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে আটকে পড়লেন কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা। তাঁদের ঘিরে ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দেন আন্দোলনকারীদের একাংশ। ফলে, সমীক্ষার কাজ শেষ না করেই মালদহ শহরে ফিরে আসেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় দলের এক সদস্য রাম সাগর বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজ়নার ঘর না মেলায় গ্রামবাসীদের একাংশ ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাঁরাই ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে শুনেছি।” মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, “ভালুকা পঞ্চায়েতের সামনে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।”
পুলিশ থাকার পরেও, কেন্দ্রীয় দলকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। উত্তর মালদহের সাংসদ বিজেপির খগেন মুর্মু বলেন, “কেন্দ্রীয় দলকে তদন্তে বাধা দেওয়ার জন্য তৃণমূল পরিকল্পনা করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। পুলিশ চুপ করে থাকছে। পুলিশ সক্রিয় থাকলে, কেন্দ্রীয় দলকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হত না।” যদিও এই বিক্ষোভে দলের কোনও ‘ভূমিকা’ নেই বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী। তিনি বলেন, “বিজেপি সব কিছুতেই তৃণমূলকে দেখতে পায়। এ দিনের ঘটনায় তৃণমূলের কোনও ভূমিকা নেই।”
এ দিনও বাংলা-বিহার সীমানা মালদহ রতুয়া ১ ব্লকের গোবিন্দপুরে যান কেন্দ্রীয় দলের দুই সদস্য রাম সাগর ও আশিস শ্রীবাস্তব। প্রশাসনের দাবি, আবাসের প্রথম তালিকায় ৫৯ জনের মধ্যে সমীক্ষায় ৩০ জনকেই বাদ দেওয়া হয়েছে। তালিকায় নাম থাকা বাকি ২৯ জনের নামে কে বা কারা কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রকে অভিযোগ জানায়। সে অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার গ্রামে গিয়ে একাধিক অসঙ্গতি নজরে আসে কেন্দ্রীয় দলের। কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিদের দাবি, চূড়ান্ত তালিকায় বিহারের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যেরও নাম রয়েছে। এ ছাড়া, বিহারে আবাসের সুবিধে নেওয়ার পরে, বাংলাতেও একই প্রকল্পের তালিকায় একাধিক জনের নাম আছে বলেও দাবি করেন তাঁরা। মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, “বিহারের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যের নাম চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বিডিওকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
গোবিন্দপুর থেকে বেরিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের ভালুকা পঞ্চায়েতে রওনা দেয় কেন্দ্রীয় দলটি। কেন্দ্রীয় দলের দাবি, দুপুরে কেন্দ্রীয় দলের পঞ্চায়েতের মহালদার পাড়ায় যাওয়ার কথা ছিল। তাই বিডিও বিপ্লব গিরি আগে থেকেই পঞ্চায়েতে হাজির ছিলেন। সে সময় আবাসে নাম তোলার আবেদন নিয়ে পঞ্চায়েতে হাজির হন গ্রামবাসীদের একাংশ। অভিযোগ, প্রথমে বিডিওকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিডিওর নির্দেশে দুই আন্দোলনকারীকে পুলিশ আটক করে। সে সময়ই পঞ্চায়েতে পৌঁছন কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা।
এর পরেই, কেন্দ্রীয় দলকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পঞ্চায়েত দফতরেই আটকে থাকেন কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা। পরে, দুই আন্দোলনকারীকে দফতরে ডেকে কথা বলেন তাঁরা। আন্দোলনকারীদের অন্যতম মহম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, “আবাসে আমাদের নাম নেই। অথচ, পাকা বাড়ির মালিকের নাম আছে। সে কথা কেন্দ্রীয় দলকে জানিয়েছি।” কেন্দ্রীয় দলের বিক্ষোভের মুখে পড়ার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy