একদিকে রাজবংশী ভাষার স্বীকৃতির দাবি তো অন্য দিকে কামতাপুরি ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলন অনেক দিন ধরেই চলছে জলপাইগুড়িতে৷ এরই মধ্যে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী রাজবংশী উন্নয়ন বোর্ড গঠন করার কথা ঘোষণা করতেই উচ্ছ্বাসে ভাসলেন একপক্ষ৷ অপরপক্ষ অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় ক্ষুব্ধ৷
সোমবার নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়৷ সূত্রের খবর, সেখানেই রাজবংশী উন্নয়ন বোর্ড গড়ার বিষয়টি পাশ হয়৷ রাজবংশী মানুষদের উন্নয়নের দাবিতে জলপাইগুড়িতে অনেকদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছে একাধিক সংগঠন৷ তারা রাজবংশী ভাষার স্বীকৃতির দাবির পাশাপাশি রাজবংশী উন্নয়ন বোর্ড গঠনের দাবিও বারবার তুলেছেন৷ সোমবার ক্যাবিনেটের এই সিদ্ধান্তের খবর জলপাইগুড়িতে পৌছাতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তারা৷ কোথাও কোথাও শুরু হয়ে যায় অকাল হোলি৷ জলপাইগুড়ি কদমতলা এলাকায় রাজবংশী ক্ষত্রিয় সমিতির দফতরে সবুজ আবীর ও মিস্টি নিয়ে উৎসবে মাতেন অনেকেই৷
ওই সমিতির নেতা তথা জলপাইগুড়ি ডিপিএসসি-র চেয়ারম্যান ধর্তিমোহন রায় বলেন, রাজবংশী ক্ষত্রিয় সমিতি গঠনের সময় থেকেই রাজবংশী উন্নয়ন বোর্ড গঠনের দাবি তুলছিলেন তাঁরা। রাজবংশী সমাজের উন্নয়নের জন্য এটা প্রয়োজন ছিল৷ তিনি বলেন, ‘‘এই দাবিগুলির ভিত্তিতে আমরা অনেক আন্দোলন করেছি৷ এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমনাদের এই আন্দোলনের পক্ষে যথেষ্ট সহানুভুতিশীল ছিলেন জন্যই অতি দ্রুত তিনি আমাদের এই বোর্ড দিলেন৷ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ৷’’
জলপাইগুড়ির তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘‘রাজবংশীদের উন্নয়নের জন্য আমরা একটি রাজবংশী উন্নয়ন মঞ্চ গঠন করেছিলাম৷ যে মঞ্চেরও মূল দাবি ছিল এই বোর্ড গঠন৷ মুখ্যমন্ত্রী আজ তা পূরণ করেছেন৷ তাকে ধন্যবাদ৷’’
তবে ক্যাবিনেটের এ দিনের এই সিদ্ধান্তে কিন্তু খুশি নন কামতাপুর পিপল্স পার্টি বা কেপিপির নেতারা৷
কামতাপুর পিপল্স পার্টি (ইউনাইটেড)-এর সভাপতি নিখিল রায় বলেন, ‘‘এ ধরনের বোর্ড আমাদের কাছে অপ্রত্যাশিত৷ ভোটের রাজনীতির কথা চিন্তা করেই এই বোর্ড গঠন করার কথা বলা হয়েছে৷’’ তিনি দাবি করেন, ‘‘এর ফলে সার্বিক মানুষের উন্নতি হবে না৷ একটা মাত্র সম্প্রদায়ের মানুষ সুযোগ-সুবিধা পাবেন৷’’ নিখিলবাবুর কথায়, ‘‘সার্বিক মানুষের প্রতি উন্নয়নের জন্য বোর্ড গঠন হলে কামতাপুরি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয় কোনও বোর্ড রাজ্য সরকার গঠন করত৷’’
কেপিপি নেতাদের এই অবস্থানের বিরোধিতা করেছেন তৃণমূল সাংসদ৷ বিজয়বাবুর কথায়, ‘‘আমরা ভোটের রাজনীতি বা বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন করি না৷’’ বিজয়বাবু বলেন, ‘‘আমরা পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য লড়াই করি৷ এই বোর্ড তৈরি হলে শুধু রাজবংশীরাই নন, আরও অনেক মানুষের উন্নতি হবে৷’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy