Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ক্ষোভের আঁচে জীবনবিমাও

লক্ষ্য ছিল নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে বোঝানো।

গ্রামে বিজেপি নেতা। নিজস্ব চিত্র

গ্রামে বিজেপি নেতা। নিজস্ব চিত্র

পার্থ চক্রবর্তী
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:১২
Share: Save:

যার ঠাকুরদা-ঠাকুমার পর্যন্ত পাসপোর্ট রয়েছে তাকে কেন নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে? কেন নোট বাতিল করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার? কেন জীবনবিমার শেয়ার বিক্রির মতো জনবিরোধী সিদ্ধান্ত নিল সরকার?

লক্ষ্য ছিল নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে বোঝানো। মঙ্গলবার দুপুরে আলিপুরদুয়ার শহরের পূর্ব শান্তিনগরে দলের জেলা নেতাদের সঙ্গে সেই কাজেই নেমেছিলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ঘণ্টাখানেকের কর্মসূচিতে বারবার বাসিন্দাদের এমনই প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হল তাঁকে। আলিপুরদুয়ারের পুর নির্বাচনের আগে এমন ঘটনায় জোর অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবিরের জেলা নেতারা।

এ দিন আলিপুরদুয়ার পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডে পূর্ব শান্তিনগর এলাকায় প্রচার অভিযান ছিল বিজেপির। সেই অভিযানে রাজুর সঙ্গে দলের জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা, শহর মণ্ডল সভাপতি অমিতাভ গঙ্গোপাধ্যায়রাও ছিলেন। কিন্তু প্রচারের শুরুর মুখেই এক বৃদ্ধের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজুকে। অলোক কর্মকার নামে ৭৩ বছরের ওই ব্যক্তির বাড়ি পূর্ব শান্তি নগরের নেতাজি রোডে। রাজুকে বাড়ির উঠোনে পেয়েই তিনি জিজ্ঞেস করে বসেন, ‘‘বলুন তো, ২০১৬ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার কেন নোট বাতিল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল?’’ বৃদ্ধের বক্তব্য, সেই সময় একটি সোনার দোকানে কাজ করতেন তিনি। নোট বাতিলের জেরে ওই দোকানের ব্যবসা মার খায়। ফলে তাঁর চাকরি চলে যায়। দুশ্চিন্তায় তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছিল বলে তিনি জানান। এই অবস্থায় সংসার চালাতে তাঁর স্ত্রীকে অন্যের বাড়িতে রান্নার কাজ ধরতে হয়। দৃশ্যত বিব্রত রাজু অবশ্য বৃদ্ধকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, সোনার দোকানের মালিক তাঁর নিজের স্বার্থেই বৃদ্ধকে কাজ থেকে সরিয়েছেন। যদিও তাঁর যুক্তি মানতে চাননি বৃদ্ধ।

এরপর স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ সাহার বাড়িতে গিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েন রাজু। বিশ্বজিৎ তাঁর কাছে জানান, তাঁর ভোটার ও আধার কার্ড, এমনকি পাসপোর্টও রয়েছে। ১৯৫১ সালে তৈরি তাঁর ঠাকুরদা-ঠাকুমার পাসপোর্টও রয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, তার পরেও কেন নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে? কী ভাবেই বা তিনি সেই প্রমাণ দেবেন? ক্ষোভের সঙ্গে এই সব প্রশ্ন তোলেন বিশ্বজিৎ। বিশ্বজিতের যে নাগরিকত্ব যাবে না, সেই বিষয়ে রাজু তাঁকে আশ্বাস দেন। বিশ্বজিতের বাড়ি থেকে বেরনোর মুখেই জীবনবিমার শেয়ার বিক্রি নিয়ে সংস্থার এজেন্ট সংগঠনের নেতা রঞ্জন রায়ের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজুকে। রঞ্জনের কথায়, তাঁর প্রশ্নের কোনও স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি রাজু।

পুরভোটের আগে দলের রাজ্য নেতাকে শহরের বাসিন্দাদের এমন প্রশ্নের মুখে পড়তে দেখে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে দলের জেলা নেতারা। যদিও রাজু বলেন, ‘‘মানুষকে বিভ্রান্ত করার একটা প্রচেষ্টা হয়েছিল। তাই মানুষের কিছু প্রশ্ন থাকতেই পারে। সেজন্যই সত্যিটা বোঝাতে আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি। সাড়াও পাচ্ছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP CAA Alipurduar Citizenship Amendment Act
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy