পাহাড়ের আবহাওয়া কত দ্রুত পাল্টায় তা বিমল গুরুঙ্গের চেয়ে ভাল কে বোঝেন! তাই হয়তো রবিবার সকালে মহাকাল মন্দিরে যাতায়াতের ফাঁকে পোলিং বুথের আশেপাশের চেহারা-ছবি দেখে সুরটা কিছুটা নরম করে ফেলেছেন।
মোর্চা সভাপতি মানছেন, পাহাড়ে তাঁদের একাধিপত্য আর নেই। ‘দুর্নীতি ও উদ্ধত আচরণে’র অভিযোগে বিদ্ধ মোর্চা প্রধান নিজের পায়ের তলার মাটি আলগা হওয়ার কারণ বিশ্লেষণে না গিয়ে হাতিয়ার করেছেন ‘গণতন্ত্র’কে। তিনি বলেছেন, ‘‘গণতান্ত্রিক পরিবেশে বিরোধী দল থাকাটা সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘পাহাড়ে পুরসভা এ বার বিরোধীশূন্য হবে না।’’
বেলা ১২টার আগে গুরুঙ্গের সেই মন্তব্য মুহূর্তের মধ্যে ‘ভাইরাল’। সৌজন্যে তৃণমূলের রাজেন মুখিয়া, বিন্নি শর্মা, সৌরভ চক্রবর্তী, জন আন্দোলন পার্টির হরকাবাহাদুর ছেত্রী এবং পাহাড়ের বিরোধী পক্ষের প্রথম সারির নেতারা। হোয়াটস অ্যাপ, এসএমএস, যে যে ভাবে পেরেছেন, ছড়িয়ে দিয়েছেন পাহাড়ের চার পুরসভার ৮৪ কেন্দ্রের দলীয় অফিসগুলিতে।
তাই বেলা ২টোয় কালিম্পংয়ের প্রাচীন রেস্তোরাঁ ‘গম্ফুস’-এর অদূরে মোর্চার বুথ অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে কয়েক জন বললেন, ‘‘ভোট ফুরনোর আগেই বিরোধীদের নম্বর! কী যে হচ্ছে! আমাদের তো মাথা কাজ করছে না।’’ মোর্চার নেতা-কর্মীরা কয়েক জন জানালেন, খোদ এডিজি নটরাজন রমেশবাবু পাহাড়ের রাস্তায় রাস্তায় রাতবিরেতে নিজে গাড়ি চালিয়ে কেন ঘোরাঘুরি করছেন, সেটাও তাঁরা বুঝতে পারছেন না। যা শোনার পরে পুলিশকর্তারা জানান, নিচুতলা থেকে উপরতলার সকলে রাস্তায় নামাতেই পাহাড়ে কোনও গোলমাল হয়নি।
কিন্তু, কার্শিয়াঙের রাজবাড়ি প্রাথমিক স্কুলের বুথের সামনে মোর্চার নেত্রী তথা জিটিএ সভাসদ প্রভা ছেত্রীর সন্দেহ, ‘‘টহলদারির নামে পুলিশ-প্রশাসনের একাংশ তৃণমূলকে সব রকম সহযোগিতা করছেন। তাঁর মতে, ‘‘এত সবের পরেও তৃণমূল দাঁত ফোটাতে পারবে না।’’
প্রভা ছেত্রীরা যা-ই বলুন, মোর্চা প্রধান ভোটের সকাল দেখেই দিনটা কেমন যাবে বুঝেছেন বলে মনে করেন তৃণমূলের পাহাড়ের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস। তাঁর মন্তব্য, ‘‘মিরিকের লেক থেকে কালিম্পংয়ের পাইন বন কিংবা কুয়াশাঘেরা ডাউহিলের মানুষও শান্তিতে থাকতে চান। বন্ধ নয়, উন্নয়ন চান। সেটা বুঝিয়ে দেওয়ার সুযোগ পাহাড়বাসীরা অনেকেই যে হাতছাড়া করেননি, তা বুঝেই মোর্চা নেতারা সুর পাল্টেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy