বামনগোলার এই গ্রামের ভোল বদলাতে চলেছে। নিজস্ব চিত্র
পাহাড় নেই। নেই টাইগারের অস্তিত্ব। তবুও গ্রামের নাম ‘টাইগার হিল’। মালদহ জেলার বামনগোলা ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম ‘টাইগার হিল’কে ঘিরে পিকনিকে মাতেন পর্যটকেরা। সেই টাইগার হিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পর্যটকদের আরও আকৃষ্ট করতে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। ফলে ঝোপ জঙ্গলে ছেয়ে থাকা টাইগার হিলের ভোল বদলাতে চলেছে নতুন বছরে বলে দাবি প্রশাসনের কর্তাদের। এই অভিনব উদ্যোগে আশায় গ্রামবাসীও।
শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বামনগোলা ব্লকের ১২ মাইল। রাজ্য সড়ক থেকে পিচের রাস্তা ধরে মাত্র তিন কিলোমিটার পথ অতিক্রম করলেই টাইগার হিল। বামনগোলা ব্লকের জগদলা পঞ্চায়েতের ডাবর গ্রামে অবস্থিত এই টাইগার হিল। কেন নাম টাইগার হিল? স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রাকৃতিক কারণেই এখানে উঁচু উঁচু মাটির ঢিবি রয়েছে। ফলে ছোট ছোট পাহাড়ের মতো আকৃতি। প্রায় সাড়ে তিন দশক আগে বন দফতরের উদ্যোগে পাহাড়ের উপরে অর্জুন, আকাশমণি, ইউক্যালিপ্টাস গাছ লাগানো হয়েছিল। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পুরো এলাকাটি ঝোপ জঙ্গলে ভরে গিয়েছিল। ফলে দিনের বেলাতেও গা ছমছমে পরিবেশ থাকায় গ্রামবাসীরা নাম দেন টাইগার হিল। সেই সঙ্গে রয়েছে আড়াই বিঘার ডিম্বাকৃতি একটি জলাশয়। মাটির উঁচু ঢিবিতে উঠে সেই জলাশয় দেখা যায়। ফলে টাইগার হিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে শীতের মরসুমে ভিড় জমান ব্লকের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। এমনকী, সেখানে বসে পিকনিকের আসরও। পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের বিমলা মাহালি বলেন, “গ্রামের নাম ডাবর হলেও মানুষের কাছে পরিচিত টাইগার হিল নামেই। পঞ্চায়েত এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় এ বারে নতুন রূপ পেতে চলেছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে ঝোপ জঙ্গল পরিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া উঁচু ঢিবিগুলিতে আরও মাটি ফেলা হচ্ছে। জলাশয়টি সংস্কার করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেখানে পদ্ম, লাল, সাদা রঙের শালুক চাষ করা হবে। সেই সঙ্গে জলাশয়ে থাকবে রঙিন মাছও। শুধু তাই নয়, ইকো টুরিজমও গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে টাইগার হিলে। সেখানে ফুল, ফলের গাছ লাগানোর কাজ চলছে। জানা গিয়েছে, টাইগার হিলের সৌন্দর্য্যায়নের জন্য ৪ লক্ষ ১৪ হাজার এবং পুকুরের জন্য লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন, “জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা কাজ শুরু করেছি। একদিকে পিকনিক স্পট এবং অপরদিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে টাইগার হিলকে।” স্থানীয় বাসিন্দা কলেজ ছাত্রী নন্দা সরকার, বিশ্বজিৎ সাঁতরা প্রমুখেরা বলেন, ‘‘টাইগার হিল সেজে উঠলে আমাদের গ্রামেও বাইরের মানুষদের ভিড় জমবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy