উন্নয়নের বরাদ্দ পেতে এ বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানালেন শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য।
সোমবার তিনি জানান, বরাদ্দ পেতে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য কলকাতায় গিয়েছিলেন। তবে তাঁর সঙ্গে দেখাই করেননি ফিরহাদ। অপেক্ষা করে ফিরে যেতে হয়েছিল জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দফতর থেকেও। করেছিলেন। এ বার বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ-সহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের নগরোন্নয়ন, এবং আবাসন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের সঙ্গে দেখা করতে উদ্যোগী তিনি। এ দিন ফোনে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছে বলে জানান। দিল্লিতে বিভিন্ন শহরের মেয়রদের নিয়ে কনফারেন্সে যোগ দিতে মঙ্গলবার অশোকবাবু দিল্লি যাচ্ছেন। সে কথা জানিয়ে ১৯ অগস্ট বাবুল সুপ্রিয়ের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন ঠিক হয়েছে বলে জানান।
বাবুলও জানাচ্ছেন, অশোকবাবুর সঙ্গে বুধবার তাঁর সাক্ষাৎ পাকা। তিনি বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি পুরসভার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা আছে।’’
কেন্দ্রের কাছে কোনও বরাদ্দ অবশ্য আশা করছেন না অশোকবাবু। বরাদ্দ পেতে রাজ্যের মাধ্যমেই তাঁকে সেই চেষ্টা করতে হবে। তা সত্ত্বেও তিনি কেন্দ্রের সঙ্গে সরাসরি যোগায়োগ করতে চাইছেন কেন?
অশোকবাবুর জবাব, ‘‘সরাসরি পুরসভা কেন্দ্রের বরাদ্দ পাবে এমন কিছু নয়। রাজ্যকে এড়িয়ে কিছু পাওয়ার চেষ্টাও করা হচ্ছে না। কেন্দ্রের কী কী প্রকল্প রয়েছে সে সব জানতে চাই। সেই সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে কেন্দ্র বরাদ্দ দিলেও রাজ্যে থেকে পাঠানো হয় না। তেমন কিছু রয়েছে কি না তা জানতেই কথা বলতে চাইছি।’’
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব মেয়রের ওই চেষ্টা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, ‘‘দেশে সংবিধানে নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। সেই পরিকাঠামোর মধ্যে থেকে কাজ করতে হয়। যদি উনি সরাসরি কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে বরাদ্দ আনতে পারেন তা হলে আমি নিশ্চই খুশি হব।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘মনে হয় অশোকবাবুর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা উচিত। উনি নিজের পদকে যে স্তরে নিয়ে যেতে চাইছেন তাতে সেটা করলে ভাল হয়।’’ মন্ত্রীর দাবি, তাঁর দফতর, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তরফে পুরসভাকে ২০০ কোটি টাকার মতো বরাদ্দ হয়েছে।
ঘটনাচক্রে এ দিন অবিলম্বে শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস এলাকা থেকে ডাম্পিং গ্রাউন্ড সরানোর ব্যবস্থা না করা হলে বড় ধরনের আন্দোলনে নামার হুমকি দিল বিজেপি নেতৃত্ব। মিছিল করে পুরসভায় গিয়ে মেয়র অশোকবাবুকে স্মারকলিপি দেন তাঁরা। ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য দূষণের জেরে এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ বিজেপি’র জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসুর। তাঁর কথায়, এলাকায় দুটি স্কুল রয়েছে। দূষণের জন্য বাসিন্দাদের চর্মরোগ-সহ নানা সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ৩ মাস দেখব। তার মধ্যে ব্যবস্থা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’ মেয়র তাঁদের দাবি যুক্তিযুক্ত বলে জানান। আশ্বাস দেন তারা সমস্যা মেটাতে চেষ্টা করছেন। শীঘ্রই কিছু ব্যবস্থা নিতে পারবের বলে আশাবাদী।
১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরবিন্দ ঘোষের উদ্যোগে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে যুক্ত মুম্বাইয়ের একটি সংস্থার কর্ণধার এসআর ম্যালে এ দিনই পুরসভায় তাদের প্রকল্পের বিষয়টি উপস্থাপন করেন। মেয়র জানান, অরবিন্দবাবুর উদ্যোগে সমস্যা মেটাতে বিশেষজ্ঞর সঙ্গে কথা হচ্ছে। অর্থ সংস্থানের চেষ্টা চলছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গেও ওই বিশেষজ্ঞকে এ দিন পরিচয় করিয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। বিরোধী দলনেতা নান্টু পালের কটাক্ষ, মেয়র কলকাতা থেকে খালি হাতে ফিরেছেন। এখন দিল্লি যাচ্ছেন। এ সব না করে বরং উনি শহরে থেকে শহরের নাগরিক পরিবেষা ঠিক করার দিকে নজর দিন। তিনিবলেন, ‘প্রশাসক বোর্ডের সময় পুরসভা যে ভাবে চলছিল তার চেয়েও পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy