বামাল: রবিবার রাতে রায়গঞ্জের কর্ণজোড়া এলাকা খেকে একটি বেআইনি পিস্তল-সহ এক যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য সরকারের নির্দেশে গত দু’সপ্তাহ ধরে উত্তর দিনাজপুর জেলা জুড়ে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান জারি রেখেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে প্রচুর বেআইনি অস্ত্র, কার্তুজ ও বোমা-সমেত বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দাবি, ২০১৮ সালে পুলিশের তরফে জেলার বিভিন্ন থানা এলাকার প্রায় জনবসতিহীন বাংলা-বিহার সীমানায় একাধিক নজর ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) লাগিয়ে নজরদারি শুরু করা হয়। এখন ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, গ্রেফতারি এড়াতে সেইসব নজর ক্যামেরার আওতার বাইরে গিয়ে বিহারের বেশিরভাগ দুষ্কৃতী জেলায় ঢুকছে। জেলার বাংলা-বিহার সীমানার চিরাচরিত করিডরের বদলে নয়া করিডর দিয়ে দুষ্কৃতীরা জেলায় তথা এ রাজ্যে বেআইনি অস্ত্র ঢোকাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিহার থেকে এ জেলায় ঢোকার সমস্ত করিডরে পুলিশ ও গোয়েন্দারা নজরদারি বাড়িয়েছেন।
জেলার কালিয়াগঞ্জ ও হেমতাবাদ থানা বাদে রায়গঞ্জ, ইটাহার, করণদিঘি, ডালখোলা, চাকুলিয়া, গোয়ালপোখর, ইসলামপুর ও চোপড়া থানার বিভিন্ন এলাকায় বাংলা-বিহার সীমানা রয়েছে। পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দাবি, এতদিন জেলার ওই আটটি থানার প্রায় জনবসতিহীন এলাকা বলে পরিচিত কোথাও নদী, আবার কোথাও বিস্তীর্ণ মাঠ কিংবা জমি পেরিয়ে বিহারের দুষ্কৃতীরা এ জেলায় অস্ত্র পাচার করত। অনেক সময়, এ জেলার দুষ্কৃতীরাও ওই পথ দিয়ে বিহারে গিয়ে বেআইনি অস্ত্র কিনে এ জেলায় ফিরে আসত।
জেলার এক গোয়েন্দা কর্তার কথায়, “গত চার বছরে জেলার বাংলা-বিহার সীমানার এমন জনবসতিহীন বহু জায়গায় সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে পুলিশের নজরদারি শুরু হয়েছে। রায়গঞ্জের বাহিন এলাকার বাংলা-বিহার সীমানায় নাগর নদীর ধারে পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে। ফলে, দুষ্কৃতীরা সেইসব করিডর বদলে অন্য পথ দিয়ে জেলায় বেআইনি অস্ত্র ঢোকাচ্ছে।”
কী সেই পথ? তদন্তকারী পুলিশ কর্তাদের দাবি, বিহার থেকে রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর মহকুমায় যাতায়াতকারী বিভিন্ন ট্রেনে করে দুষ্কৃতীরা এ জেলায় বেআইনি অস্ত্র পাচার করছে। পাশাপাশি, ডালখোলার পূর্ণিয়া মোড় ও বিহারের কিসানগঞ্জ এলাকার জাতীয় সড়ক, চাকুলিয়া, গোয়ালপোখর, করণদিঘি ও ইসলামপুরের রাজ্য সড়ক হয়ে বিভিন্ন বাস, ট্রেকার, অটো ও পণ্যবাহী গাড়িতে করে দুষ্কৃতীরা জেলায় অস্ত্র ঢোকাচ্ছে।
এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘বিহার থেকে এ জেলায় ঢোকার জনবহুল ও বেশি যানবাহন চলাচলকারী রাস্তায় সাধারণত এতদিন পুলিশের নজরদারি কম ছিল। সেই সুযোগেই দুষ্কৃতীরা সেইসব করিডর দিয়ে বিভিন্ন যানবাহনে করে লুকিয়ে জেলায় অস্ত্র পাচার করেছে। এখন সেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’’
ইসলামপুর পুলিশ জেলার সুপার সচিন মক্করের বক্তব্য, “বিহার পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে অস্ত্র পাচারের কাজে যুক্ত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।”
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সানা আখতার বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন থানা এলাকার বাংলা-বিহার সমস্ত সীমানায় পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। জেলায় অস্ত্র ঢোকা রুখতে বিহার থেকে এ জেলায় যাতায়াতকারী বিভিন্ন বাস, ট্রাক, ট্রেন-সহ সমস্ত যানবাহনে পুলিশের কড়া নজরদারি ও তল্লাশি জারি রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy