কার্ড সংশোধনে লাইন।—নিজস্ব চিত্র।
তার বয়স ৫৫। অথচ কয়েক বছর আগে করা আধার কার্ডে তাঁর বয়স দেখানো হয়েছে ৬৫ বছর!
বয়সের এমন গরমিলের বিষয়টি জানতেন আগেই। কিন্তু গা করেননি। কিন্তু সেই আধার কার্ড সংশোধন করতে গত পাঁচদিন ধরে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। হয়নি। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬টার মধ্যেই মালদহ প্রধান ডাকঘরের সামনে লাইনে ফের এসে দাঁড়িয়ে পড়েছেন কালিয়াচকের শাহবাজপুরের বাসিন্দা নুর ইসলাম। আধার কার্ড তো অনেকদিন আগেই হয়েছে, তবে এখন কেন সংশোধন? তার সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘এনআরসি’।
শুধু নুর ইসলামই নন। এনআরসির আতঙ্কে মঙ্গলবার ভোর থেকেই মালদহ প্রধান ডাকঘরের সামনে আধার কার্ড সংশোধনের লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েছেন কয়েকশো পুরুষ-মহিলা। গত পাঁচদিন টানা বৃষ্টির জেরে ও জেলার একাংশ এলাকা বন্যাকবলিত হওয়ায় এই ক’দিন সংশোধনের লাইনে সেরকম ভিড় দেখা যায়নি। বৃষ্টির আবহ ঘুচে মঙ্গলবার সকালে ঝলমলে রোদ উঠতেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দারা আধার কার্ড সংশোধন করতে ভিড় জমিয়েছেন মালহের প্রধান ডাকঘরে।
তবে লাইনে দাঁড়ালেই সেদিন আধার কার্ড সংশোধন হচ্ছে না এখানে। মালদহ প্রধান ডাকঘর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন কুড়ি জন করে বাসিন্দার আধার কার্ড সংশোধন হচ্ছে এখানে। আর যাঁরা লাইনে দাঁড়াচ্ছেন তাদের আধার কার্ড সংশোধনের তারিখ ডাকঘরের নির্দিষ্ট একটি কাউন্টার থেকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেউ তারিখ পাচ্ছেন দশ দিন পর বা কেউ তারও পরে। ফের সেই নির্দিষ্ট দিনেই এই প্রধান ডাকঘরে এসে আধার কার্ড সংশোধন করতে হবে সংশ্লিষ্ট বাসিন্দার।
এ দিন এখানে নিজের ছেলের আধার কার্ড সংশোধনের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন রতুয়ার বাসিন্দা মহম্মদ নুরুল হক। ফুলহারের জলে রতুয়া বিস্তীর্ণ এলাকায় এখন জলময়। বাড়ি থেকে ছোট গাড়ি করে বাহার আলো হয়ে এসেছেন পরানপুর। তারপর গাড়ি পাল্টে ম্যাক্সিট্যাক্সি ধরে সকাল ৭টার মধ্যেই মালদহ প্রধান ডাকঘরের সামনে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন তিনি। বেলা ১১টায় তাঁর সামনে অন্তত ১০০ জন। নুরুল বলেন, ‘‘আমার আধার কার্ডের জন্মতারিখে ভুল হয়েছে। এমনকি, কার্ড করার সময় আমার ছেলে হারুন নুর রশিদের মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ছেলেরও জন্মতারিখ ভুল এসেছে।’’ সেই ভুল সংশোধন এখন কেন? নুরুলেরও সেই একই জবাব, ‘‘শুনেছি এনআরসি হবে। আধার কার্ডের জন্মতারিখ যদি ভুল থাকে, তবে সমস্যা হতে পারে। তাই এখন সুযোগ আসায় কষ্ট হলেও লাইনে দাঁড়িয়ে তার সংশোধন করিয়ে নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy