প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার জন্য সমীক্ষা ঘিরে মালদহের একাধিক প্রান্ত থেকে উঠে আসছে অভিযোগ। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে পাকা বাড়ির উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির জন্য গ্রামে গ্রামে সমীক্ষা চলছে। স্থানীয় প্রশাসনের নিযুক্ত সমীক্ষক দল ঘুরছে জেলায় জেলায়। এরই মধ্যে কোথাও উঠে আসছে তালিকায় নাম সংযোজনের জন্য টাকা চাওয়ার অভিযোগ। কোথাও আবার উঠছে গরমিলের অভিযোগ। প্রকৃত উপভোক্তাদের নাম বাদ দিয়ে অন্যদের নাম তালিকায় যুক্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
মালদহের মানিকচকে আবাস যোজনার তালিকার জন্য সমীক্ষা ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে বুধবার। সমীক্ষক দলের এক সদস্য আবাস যোজনার উপভোক্তাদের তালিকায় নাম সংযোজনের জন্য টাকা চাইছেন বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। ১০ হাজার টাকা দিলে নাকি তালিকায় নাম যুক্ত করে দেওয়া হবে। এই অভিযোগে বুধবার সমীক্ষক দলের এক সদস্যকে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেন মানিকচক ব্লকে নুরপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বৈদ্যনাথপুরের বাসিন্দারা। পরে পুলিশ তাঁকে আটক করে নিয়ে যায়। ধৃতের নাম শেখ মতিন। বাড়ি মানিকচকের মধুপুর গ্রামে। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব অবশ্য জানিয়েছেন, এই ঘটনায় এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
শুধু মানিকচকেই নয়, মালদহের একাধিক জায়গায় এই আবাস যোজনার তালিকা ঘিরে অভিযোগ উঠে এসেছে। চাঁচলের ধানগাড়া পঞ্চায়েতের ললিয়াবাড়ি অঞ্চলে থাকেন নাজমুল হক। তাঁর বক্তব্য, টিনের চাল দেওয়া বাড়িতে তিনি বাস করেন। পাকা বাড়ি নেই। আবাস যোজনার সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। তালিকায় নামও ছিল। তাঁ আধার কার্ড এবং ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বরও দেওয়া ছিল। কিন্তু এখন সেখানে অন্য ব্যক্তির আধার কার্ড এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর দেখাচ্ছে। এই নিয়ে চাঁচল ২ ব্লকে ইতিমধ্যে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। বিডিও শান্তনু চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তিনি এই বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছেন। পুরনো তথ্য খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাসও দিয়েছেন বিডিও।
আবাসের তালিকা ঘিরে অভিযোগ রয়েছে হরিশচন্দ্রপুরেও। যাঁদের কাঁচা বাড়ি রয়েছে, তাঁদের অনেকেরই নাম তালিকায় নেই বলে ক্ষোভ হরিশচন্দ্রপুরের রশিদাবাদ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত জনমদল গ্রামের বাসিন্দাদের। অপর দিকে পাকা বাড়ি থাকার পরেও কারও কারও নাম তালিকায় রয়েছে বলে অভিযোগ ‘বঞ্চিত’ উপভোক্তাদের। টাকার বিনিময়ে তালিকায় নাম তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সেখানকার একাংশের বাসিন্দাও। সমীক্ষক দল রাতের বেলা সমীক্ষার কাজ করতে আসছেন, এমন অভিযোগও তুলছেন কেউ কেউ। সমীক্ষক দলের উপর অসন্তোষ রয়েছে তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এক্রামুল হকেরও। তিনিই ওই অঞ্চলের পঞ্চায়েত সদস্য। তাঁর কথায়, “অনেকের কাঁচা বাড়ি থাকলেও তাদের তালিকায় নাম নেই। তাই তাঁরা বিক্ষোভ দেখাবেন এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সার্ভে অফিসাররা আমাকে একবারও ডাকেননি।”
যদিও রাতের বেলা সমীক্ষা করতে আসার অভিযোগটি তিনি মানছেন না। উপপ্রধানের বক্তব্য, সমীক্ষক দল দিনের বেলাতেই আসে। তবে কাজ করতে করতে রাত হয়ে যায়। তবে উনারা দিনের বেলাতেই আসেন। সার্ভে করতে করতে রাত হয়ে যায় হয় তো। মালদহ জেলা পরিষদের সদস্য মর্জিনা খাতুন অবশ্য জানিয়েছেন, এই ঘটনায় দলের কেউ যুক্ত থাকলে কঠোর শাস্তি হবে। মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়াও আশ্বাস দিয়েছেন অভিযোগ খতিয়ে দেখার বিষয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy