উত্তপ্ত: পুরসভার আলোচনায় আক্রমণে বিরোধীরা। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় দু’মাস পরে আন্দোলনের পথ ছেড়ে পুরবোর্ডের বৈঠকে আলোচনায় অংশ নিল বিরোধীরা। শিলিগুড়ি পুরসভার মাসিক বৈঠকে বৃহস্পতিবার একাধিক বিষয়ে তরজা হয়েছে। পুরসভার ভেঙে পড়া স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধী কাউন্সিলররা। স্বাস্থ্য পরিষেবা ঠিকমতো না চলায় ডেঙ্গি বাড়ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। খোলা ড্রেনের সংখ্যা নিয়ে পুরসভার কাছে গত এক দশকে কোনও সমীক্ষা নেই। শীঘ্রই এই সমীক্ষা করার আশ্বাস দিয়েছে কতৃর্পক্ষ।
এ দিন পুরসভার বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের রঞ্জন সরকার প্রশ্ন তোলেন শহরে কতগুলো ঢাকনাবিহীন ড্রেন রয়েছে? যদিও পুরসভার কাছে এর কোনও সাম্প্রতিক তথ্য নেই। মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) মুকুল সেনগুপ্ত জানান, ২০০৯ সালের রিপোর্ট বলছে, ৪৭০ কিলোমিটার রাস্তায় খোলা নর্দমা ছিল। সাম্প্রতিক তথ্য না থাকার জন্য ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন রঞ্জনবাবু। তিনি বলেন, ‘‘এই তথ্য না থাকলে কী ভাবে ডেঙ্গির মতো রোগের বিরুদ্ধ লড়ব আমরা? মেয়রের দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না পুরসভার সার্বিক উন্নয়ন স্তব্ধ। মেয়রের পদত্যাগ করা উচিত।’’ স্বাস্থ্য বিভাগে পূর্ণ সময়ের মেয়র পারিষদ নেই কেন সেই প্রশ্নও তোলেন বিরোধীরা। এ দিনের আলোচনায় রঞ্জন শীলশর্মা, নান্টু পাল, নিখিল সাহানিরা অংশ নেন।
এ দিন সভায় বক্তব্য রাখার সময় মেয়র অশোক ভট্টাচার্য প্রথমেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান। পরে বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার টাকা দিচ্ছে না তা মুখ্যমন্ত্রী দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। পুরসভা উন্নয়নে নিজেদের টাকা খরচা করে নিজের যেটুকু পারে করে।’’ অশোকবাবুদের দাবি, বিরোধীরা পদত্যাগের কথা বললেই তিনি তা করবেন না। কারণ তাঁরা পাঁচ বছরের জন্য মানুষের রায়ে এসেছেন পালিয়ে যাবেন না। শৌচাগার তৈরিতে বস্তি এলাকায় নিজস্ব জমির সমস্যার ক্ষেত্রে নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্যের দায়িত্বে থাকা মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যে নিয়োগ রাজ্যের করার কথা তার ৬০ শতাংশই করছে না। পুরসভার মার্তৃসদনে সমস্যা থাকলেও তা চলছে।’’ কর্মী কম থাকায় পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তিনি। শঙ্করবাবু জানান, পুরসভার হাসপাতালগুলোয় কিছু স্বেচ্ছাসেবী ডাক্তার দিয়ে বাড়তি পরিষেবা দেওয়া যায় কিনা তা দেখা হচ্ছে।
এলইডি লাইট কেনা নিয়ে এর আগেও বিস্তর ঝামেলা হয়েছে। এদিন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নান্টু পাল বিভিন্ন সংস্থার দরপত্র নিয়ে এসে অভিযোগ তোলেন, ৮ হাজার লাইট ২২ হাজার টাকায় কিনেছে পুরসভা। তিনি এই সংক্রান্ত কিছু নথিও চেয়ারম্যানের হাতে তুলে দেন। তবে নান্টুবাবুর অভিযোগ অস্বীকার করে ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাত বলেন, ‘‘ই-টেন্ডারিংয়ের মাধ্যমে পুরসভা এগুলো কিনেছিল। অভিযোগ উঠতেই পারে, তবে তা সত্যি নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy