Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪

রায় শুনে নীরব মা

মেয়ের ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ডের রায় শুনে কথা জড়িয়ে আসছিল মায়ের। মিনিট কয়েকের নীরবতার পরে তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে সে দিন সন্ধ্যায় ছুটতে ছুটতে বাড়ি থেকে বার হচ্ছিল। জিজ্ঞাসা করেছিলাম কোথায় যাচ্ছিস? বলেছিল ‘মামা’ ডাকছে। অ্যালবার্ট আমাদের প্রতিবেশী।

অপরাধী: ধর্ষণে সাজাপ্রাপ্ত অ্যালবার্ট। ছবি: নারায়ণ দে

অপরাধী: ধর্ষণে সাজাপ্রাপ্ত অ্যালবার্ট। ছবি: নারায়ণ দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৭ ০২:৪৫
Share: Save:

মেয়ের ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ডের রায় শুনে কথা জড়িয়ে আসছিল মায়ের। মিনিট কয়েকের নীরবতার পরে তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে সে দিন সন্ধ্যায় ছুটতে ছুটতে বাড়ি থেকে বার হচ্ছিল। জিজ্ঞাসা করেছিলাম কোথায় যাচ্ছিস? বলেছিল ‘মামা’ ডাকছে। অ্যালবার্ট আমাদের প্রতিবেশী। ঘটনার সময় ওর এক সন্তান ছিল এবং স্ত্রী গর্ভবতী ছিল। অ্যালবার্টকে মামা বলেই ডাকতো ও। সে এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটাবে ভাবতেই পারিনি।’’

শুক্রবারেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল অ্যালবার্ট। তাই রাতে ঠিক মতো ঘুমোতে পারেননি ওই নাবালিকার মা। ২০১৩ সালের ২৬ ফ্রেবুয়ারি ঘটনা ঘটেছিল। তার কিছু দিন পরেই স্বামীকে হারান। পুলিশ ও সরকারি আইনজীবীর সাহায্যে মেয়ের ধর্ষকের চরম শাস্তির জন্য লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। এ দিন ফাঁসির সাজা হয়েছে শোনার পর জানান, ঘটনার দিন মথুরা বাজার থেকে বাঁধাকপি কিনে ছিলেন তাঁর স্বামী।

বাড়ি ফিরতে দেরি হবে বলে প্রতিবেশী অ্যালবার্টের হাত দিয়ে তা বাড়িতে পাঠান। কিন্তু সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দেখেন অ্যালবার্ট তা পৌঁছে দেয়নি। তখন মেজো মেয়েকে বলেন অ্যালবার্টের বাড়ি থেকে জিনিসগুলো নিয়ে আনতে। মেয়ে বাজার বাড়িতে নিয়ে ফেরে। এবং দৌড়ে বেড়িয়ে যায়। যাওয়ার সময় বলে যায় অ্যালবার্ট তাঁকে ডাকছে। তারপর থেকেই আর খোঁজ মেলেনি তার। তিনি বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, আশেপাশে কোন আত্মীয়ের বাড়িতে হয়তো রাতে থেকে গিয়েছে মেয়ে। কিন্তু সকালেও না ফেরায় খোঁজ খবর শুরু হয়। অ্যালবার্টকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে কিছু জানে না বলে দাবি করে। ওই গ্রামের কিছু পড়ুয়া পরের দিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় মথুরা চা বাগানের দু’ নম্বর সেকশনে ছাত্রীটির অর্ধনগ্ন দেহ দেখতে পায়।

ওই নাবালিকার প্রতিবেশী বৃন্দা শর্মা জানান, অ্যালবার্ট যে কাণ্ড ঘটিয়েছে তা কখনই মানা যায় না। ও উপযুক্ত শাস্তি পেয়েছে।’’

সরকারি আইনজীবী জহর মজুমদার জানান, অ্যালবার্ট মেয়েটিকে বাড়ি থেকে সাইকেলে চাপিয়ে প্রথমে মথুরা বাজারে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাঁকে কিছু কিনে দেয়। এরপর সোজা রাস্তায় বাড়ি আনার বদলের ঘুরপথে দু’নম্বর সেকশনে নিয়ে যায়। সেখানে ধর্ষণ করে গলা টিপে খুন করে। গায়ের সোয়েটার দিয়ে গলায় গিট বেঁধে চা গাছের সঙ্গে বেঁধে দেয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Mother Verdict Criminal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE