এই খাটিয়ায় চাপিয়েই নিয়ে যাওয়া হয় রোগিণীকে। —নিজস্ব চিত্র।
গ্রামের বেহাল রাস্তা ধরে বেশি দূর এগোতে পারেনি অ্যাম্বুল্যান্স। অগত্যা মুমূর্ষু রোগীকে খাটিয়ায় তুলে এবং কাঁধে নিয়ে হাসপাতালের পথে রওনা দিয়েছিলেন রোগীর পরিজনেরা। তাতেও অবশ্য শেষরক্ষা হল না। পথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন অসুস্থ তরুণী। গত শুক্রবার এমনই ঘটনার সাক্ষী রইল মালদহের বামনগোলা থানার মালডাঙা গ্রাম। খাটিয়ায় রোগী নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতরও। যদিও আনন্দবাজার অনলাইন ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি।
স্থানীয় প্রশাসন এবং গ্রামবাসীদের তরফে জানা গিয়েছে, মালডাঙা গ্রামের বাসিন্দা, বছর পঁচিশের তরুণী মামণি রায় গত দু’তিন দিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন। শুক্রবার দুপুরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য তরুণীর পরিজনেরা অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে পাঠান। কিন্তু বেহাল রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স দূরস্থান, গ্রামে কোনও যানবাহনই ঢোকে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এই অবস্থায় কোনও উপায় না দেখে মুমূর্ষু ওই তরুণীকে খাটিয়ায় তুলে গ্রামের মেঠো পথ পেরিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। গন্তব্য ছিল বামনগোলার গ্রামীণ হাসপাতাল। কিন্তু বেহাল রাস্তা পেরিয়ে হাসপাতালে পৌঁছতে অনেকটা দেরি হয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তরুণীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার সকাল থেকেই মালদহের নালাগোলা রাজ্য সড়কের কলোনি এলাকায় রাস্তা অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে অবরোধ কর্মসূচি। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং যুগ্ম বিডিও এসে গ্রামবাসীদের প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ উঠে যায়। ইতিমধ্যেই এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। বেহাল রাস্তা নিয়ে রাজ্য এবং স্থানীয় প্রশাসনকে কার্যত তুলোধনা করেছেন স্থানীয় বিজেপি নেত্রী বীণা সরকার কীর্তনিয়া। রাজ্য সরকার ‘পথশ্রী’র মতো প্রকল্প হাতে নেওয়ার পরেও কেন গ্রামীণ রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতে পারবে না, সেই প্রশ্নই তুলেছে বিজেপি। আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম মালডাঙা হবিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত। হবিবপুরের বিজেপি বিধায়ক জুয়েল মুর্মু এই প্রসঙ্গে বলেন, “আজকে ওই গ্রামের রাস্তা ভাল থাকলে অ্যাম্বুল্যান্স যেতে পারত। তা হলে ওই তরুণীকে হয়তো বাঁচানো যেত। আমরা রাস্তা সংস্কারের দাবি বার বার প্রশাসনকে জানিয়ে এসেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।”
সমালোচনার জবাবে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী জানান, এই ঘটনা ভীষণ দুঃখজনক। এর পাশাপাশি বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “ওই এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে বিজেপি বিধায়ক রয়েছেন। সাংসদও বিজেপির। তারপরও রাস্তা হল না কেন? সব দোষ তৃণমূলের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলে তো হয় না।” জেলা প্রশাসনের তরফে বামনগোলা ব্লকের যুগ্ম বিডিও উত্তম বিশ্বাস বলেন, “এই রাস্তা তৈরি করার জন্য ইতিমধ্যেই একটি বাজেট জেলা স্তরে পাঠানো হয়েছে। রাস্তা তৈরির কাজটির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy