কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় মৃত যুবকের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, পুলিশি নিরাপত্তায় যুবকের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
মৃত অশোককুমার সিংহের দেহ দিতে চাইছে না পুলিশ, এই মর্মে মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। আদালতের নির্দেশে মরদেহ এসএসকেএম হাসপাতালে রাখা হয়েছে। অভিযোগ, পরিবার দেহ চাওয়া সত্ত্বেও পুলিশ তা দিতে রাজি হয়নি। এর পরেই আদালতের দ্বারস্থ হয় মৃতের পরিবার।
প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে শনিবার এ সংক্রান্ত মামলাটি ওঠে। মামলাকারীর যুক্তি, যে হেতু দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রয়োজনীয়তা নেই, তাই পরিবার চাইছে দেহ নিয়ে নিতে। কিন্তু পুলিশ দিতে রাজি নয়। পুলিশ জানিয়েছিল, আদালতের নির্দেশ ছাড়া তারা দেহ দেবে না।
উচ্চ আদালতের নির্দেশ, এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে অশোকের দেহ পুলিশ পরিবারের হাতে তুলে দেবে। হাসপাতাল থেকে বাড়ি পর্যন্ত দেহ নিয়ে যাওয়ার সময় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে পুলিশ। দেহ যাবে সরকারি গাড়িতেই। বিচারপতি জানান, শেষকৃত্যের জন্য ওই দেহ বাড়ি থেকে শ্মশান পর্যন্ত নিয়ে যাবে পুলিশই। তাদের নিরাপত্তাতেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। পথে মৃতদেহকে কেন্দ্র করে কোনও রকম বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, তাই এই নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় রহস্যজনক ভাবে অশোকের মৃত্যু নিয়ে হাই কোর্টে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। থানার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী বৃহস্পতিবার সেই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
গত বুধবার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় ডেকে পাঠিয়ে অশোককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ তোলে তাঁর পরিবার। এই ঘটনার জেরে বুধবার সন্ধ্যায় অবরুদ্ধ হয়ে যায় কলেজ স্ট্রিট। পরিবারের দাবি, চুরির মোবাইল কেনার অভিযোগে যুবককে ডেকে পাঠানো হয় থানায়। জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন মারধরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানান বিজেপি নেতা সজল ঘোষ। একই সঙ্গে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার ওসিকে অবিলম্বে অপসারণের দাবিও তোলেন তিনি।
সূত্রের খবর, পানের দোকানের মালিক অশোককে চুরি যাওয়া মোবাইল বেআইনি ভাবে কেনার অভিযোগে তলব করা হয়েছিল থানায়। সেখানে তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়, খুন তো দূরের কথা, ওই ব্যক্তিকে মারধরই করা হয়নি। তিনি নিজেই থানায় অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান। তাতেই মাথা ফেটে যায় তাঁর, মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরিয়ে আসে। ‘অসুস্থ’ ব্যক্তিকে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে জানা যায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
মধ্য কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় করা একটি ফেসবুক লাইভের দৃশ্যে দেখা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির দেহ পড়ে রয়েছে থানার একটি ঘরের মেঝেতে। তাঁর দু’চোখ খোলা। দেহ নিথর। আত্মীয়স্বজনদের চিৎকার-চেঁচামেচির জবাবে কোনও কথা বলছেন না থানায় উপস্থিত কর্মীরা। পরে অবশ্য তাঁদের দেখা যায় কিছুটা সক্রিয় হয়ে ওই যুবকের দেহটিকে সেখান থেকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে। যদিও ওই ফেসবুক লাইভের সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy