পাশাপাশি: মুক্তির পরে কেপিপি কর্মীরা। ছবি: সন্দীপ পাল
দেড় দশকের যন্ত্রণার শেষে এল মুক্তির আনন্দ। সেই আনন্দের উচ্ছ্বাস দেখল জলপাইগুড়ি জেলা আদালত চত্বর।
২০০০ সালে জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানায় ৫২ জন কেপিপি নেতা ও কর্মীর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার, সেই মামলায় বেকসুর খালাস পেলেন অভিযুক্তরা। পুলিশের অভিযোগ ছিল, এঁরা সকলেই কেএলও জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। ১৮ বছর ধরে চলা মামলায় পুলিশ অফিসার-সহ ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে আদালত। মামলার রায়ে জলপাইগুড়ি আদালতের জেলা ও দায়রা জজ সোমনাথ মুখোপাধ্যায় মঙ্গলবার অভিযুক্ত সকলকে নির্দোষ ঘোষণা করেন।
এতদিন অভিযুক্তরা সকলে জামিনে মুক্ত ছিলেন। মামলার শুনানিতে তাঁদের আদালতে উপস্থিত হতে হত। এ দিনও এসেছিলেন। রায় ঘোষণার পরে সকলেই জেলা আদালত চত্বরে উল্লাস শুরু করে দেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে জয়ধ্বনিও দেন। তাঁদের দাবি, বাম আমলে মিথ্যে মামলায় সবাইকে ফাঁসানো হয়েছিল। তাঁদের আইনজীবী অভিজিত সরকার বলেন, “চক্রান্তের শিকার হয়েছিলেন এই ৫২ জন। আদালতে কোনও অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি।”
সরকারি তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, ধৃতরা সকলেই কেএলও-এর সঙ্গে জড়িত। কেউ কেউ লিঙ্কম্যানের কাজও করতেন। জেলার বেশ কিছু এলাকায় নাশকতার পরিকল্পনাও করেছিলেন, বলে অভিযোগ করা হয়।
কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টির জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক সুনীলচন্দ্র রায় বলেন, “আমাদের সবাইকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। সরকার আদালতে কোনও তথ্য প্রমাণ দিতে পারেনি।’’ এ দিন আদালত চত্বরে মুখ্যমন্ত্রীর নামে জয়ধ্বনি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’’ মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন কেপিপি-র দার্জিলিং জেলা সম্পাদক রঞ্জিত সিংহ। তিনি বলেন, “কামতাপুরী ভাষার জন্য লড়াই চালাব। বর্তমান রাজ্য সরকার পৃথক কামতাপুরি ভাষার স্বীকৃতি এবং ভাষা আকাদেমি গঠন করেছেন। সে জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’’
জলপাইগুড়ি মানিকগঞ্জের অমর রায়, শিলিগুড়ির বঙ্কিম সিংহ-রা এ দিন আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে দাবি করেন, নাশকতামূলক কোনও কাজ তাঁরা কখনও করেননি। আইনের চোখে অপরাধ হয়, এমন কাজের সঙ্গেও তাঁরা যুক্ত ছিলেন না। বাম আমলে রাজনৈতিক কারণে তাঁদের ফাঁসানো হয়েছিল বলে তাঁদের দাবি।
মামলার সরকারি আইনজীবী সোমনাথ পাল কোনও মন্তব্য করতে চাননি। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা আদালতে তাঁদের সংগঠনের সদস্যেদের বিরুদ্ধে আরও এমন মামলা জমে রয়েছে বলে কেপিপি নেতা-কর্মীরা দাবি করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy