আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে এক চিকিত্সককে হেনস্থার পরে কামাখ্যাগুড়ি ব্লক হাসপাতালে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। এবার হাসপাতালে ঢুকে চিকিত্সককে হেনস্থা, মহিলা স্বাস্থ্য কর্মীদের গালিগালাজ এবং লেবার রুম ও মহিলা ওয়ার্ডে ঢুকে মোবাইলে রোগিণীদের ছবি তোলার অভিযোগ উঠল মদ্যপ দুই যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়ে ওই দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে কুমারগ্রামের কামাখ্যাগুড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম অনুপ চক্রবর্তী ও নরোত্তম কর। দু’জনেই তৃণমূল সমর্থক বলে অভিযোগ। যদিও তৃণমূল তা অস্বীকার করেছে। তৃণমূলের কুমারগ্রাম ব্লক সভাপতি দুলাল দে বলেন, “এখন কোন ঘটনা ঘটলেই তৃণমূলের নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়অভিযুক্ত দুই যুবক তৃণমূল সমর্থক বলে আমার জানা নেই। তবে তারা যে দলের সমর্থক হোক না কেন তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এ ধরণের কাজ কোন ভাবে সমর্থন যোগ্য নয়।”
চিকিসকদের অভিযোগ ধৃত দুই যুবক এদিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ মদ্যপ অবস্থায় পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে যান। ওই সময় জরুরি বিভাগে ডিউটিতে ছিলেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ঠাকুর। প্রথমেই কৃষ্ণেন্দুবাবুর মাথায় জ্যাকেট ফেলে দেওয়া হয়। এর পেট ব্যথা কেন কমছে না বলে ওই চিকিত্সক ও নার্স কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করতেই চিকিত্সককে জামার কলার ধরে ধাক্কা দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। আরও অভিযোগ, মহিলা বিভাগ ও লেবার রুমের দরজা লাথি মেরে খুলে মহিলা রোগীদের মোবাইল ফোনে ছবি তোলে ওই দুই যুবক। খবর পেয়ে কামাখ্যাগুড়ি ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে ওই যুবককে গ্রেফতার করে। কৃষ্ণেন্দুবাবুর অভিযোগ, “যেভাবে আমাদের হেনস্থা করা হয়েছে তা ভাবা যায় না। মহিলা ওয়ার্ডে এবং লেবার রুমে ঢুকে যে ভাবে মহিলাদের ছবি তোলা হয়েছে সেটা ভাবতেই পারছি না।” ওই হাসপাতালের মহিলা চিকিত্সক সোনালি দাস বলেন, “গতকাল রাতের ঘটনা নিজের চোখে দেখে এখনও আতঙ্কে রয়েছি। মাকে সঙ্গে নিয়ে এখানে থাকি। আমাকেও রাতে ডিউটি করতে হয়। এমন ঘটনা ঘটলে এখানে কাজ করব কী ভাবে? রীতিমত নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি।” আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি পলাশ দে-র দাবি, অভিযুক্ত দুই যুবক তৃণমূল সমর্থক বলেই হাসপাতালে এমন তান্ডব চালাতে সাহস পেয়েছে। তিনি বলেন, “মহিলা রোগীদের ছবি তোলার বিষয়টি ভয়ঙ্কর অপরাধ। চিকিত্সকদের পাশে আমরা আছি। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে আমরা শীঘ্রই এসপির কাছে যাব।” সিপিএমের জোনাল সম্পাদক বীরেন বর্মণ বলেন, “অভিযুক্তরা এলাকায় তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত। ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি এবং অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy