জেলা বিভাজন মেনে নিতে পারেননি জলপাইগুড়ির অনেকেই। তবুও নতুন জেলা আলিপুরদুয়ারকে স্বাগত জানিয়েছেন সকলেই। জাঁকিয়ে বসেছে আশঙ্কাও। তা হল, ভক্তিনগর থানা আবার জলপাইগুড়ি থেকে কেটে নিয়ে শিলিগুড়ির সঙ্গে পাকাপাকি ভাবে জুড়ে দেওয়া হবে না তো? কারণ, ইতিমধ্যেই ওই থানা শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে গিয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে ভক্তিনগর জলপাইগুড়িতে থাকবে বলার পরেও চিন্তা কমেনি।
যেমন, জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদার বলেন, “দলের পক্ষ থেকে নতুন জেলাবাসীকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। ওঁরা ভাল থাকুন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ভক্তিনগর নিয়ে যা বলেছেন অর্থ বুঝলাম না। ভয় হয় আরও কিছু শিলিগুড়িতে চলে না যায়।” আরএসপির জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য দেবব্রত ঘোষ জানান, জেলাভাগের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত। তিনি বলেন, “আলিপুরদুয়ারের সভায় আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি সেটা নিয়ে কষ্ট নেই। কিন্তু ভক্তিনগর থানা জলপাইগুড়িতে থাকবে এ কথা উঠল কেন বুঝলাম না।” ফরওয়ার্ড ব্লকের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য গোবিন্দ রায়-এর অভিযোগ, “ভক্তিনগর থানা নিয়ে যে মুখ্যমন্ত্রীর অন্য কোনও ভাবনা ছিল সেটা এদিনের বক্তব্যে স্পষ্ট।”
একই সঙ্গে জলপাইগুড়িতে দাবি উঠেছে, কোচবিহার থেকে কেটে হলদিবাড়িকে জলপাইগুড়ির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হোক। কারণ, কোচবিহার জেলা সদর থেকে হলদিবাড়ি যাতায়াত একদিনে প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। অথচ জলপাইগুড়ির খুব কাছে। তাই হলদিবাড়িকে সংযুক্তির দাবি তুলেছে জলপাইগুড়ির নানা মহল।
১৯৪৭ সালের পরে বুধবার জলপাইগুড়ি জেলা ফের ভাগ হল। মুকুট থেকে খসে পড়ল অনেক পালক। কিন্তু ওই সময়ের মাঝে প্রত্যেকের আড়ালে জেলার ডাবগ্রাম এলাকা শিলিগুড়িতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রেল স্টেশন নিউ জলপাইগুড়িও শিলিগুড়ি পুরসভার আওতায়। আইনজীবী স্বরূপ মণ্ডলের প্রশ্ন, “এর পরে থাকল কি?” আনন্দচন্দ্র কলেজের ছাত্র অনির্বাণ দাশগুপ্ত বলেন, “কেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িকে নিয়ে পৃথক পুরসভা না করে সেটা শিলিগুড়ি কর্পোরেশনে নেওয়া হল? এখনও মাথায় ঢোকে না।” তাঁর প্রস্তাব, ওই পুরসভা গঠনের পাশাপাশি হলদিবাড়িকে জলপাইগুড়ির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হোক।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নতুন জেলা হচ্ছে। খুশির খবর। আশা ছিল সকলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। কিন্তু সরকারি অনুষ্ঠানেও দলীয় রাজনীতি প্রকট হতে দেখলাম।” অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “প্রতিটি দলকে সরকারের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রত্যেকের জন্য পৃথক আসন ছিল। না গেলে বলার কি আছে?” তিনি দাবি করেন, ভক্তিনগর থানা নিয়ে যে কথা উঠেছে সেটা ঠিক নয়।
মাতোয়ারা আলিপুরদুয়ার
নিজস্ব সংবাদদাতা • আলিপুরদুয়ার
একসঙ্গে দুর্গাপুজোর আর দীপাবলির উত্সবে মাতোয়ারা হয়ে উঠল আলিপুরদুয়ার। বুধবার সকাল থেকে মোড়ে মোড়ে মাইকে রবীন্দ্র সঙ্গীত বেজে চলছিল। মিষ্টিমুখ বাজি কেনার তোড়জোড় ছিলই। মুখ্যমন্ত্রী জেলা ঘোষণা করে ফিরে যাবার পরে উচ্ছ্বাস যেন আছড়ে পড়ল শহর জুড়ে। পাল্লা দিয়ে শহরের সমস্ত এলাকায় গভীর রাত পর্যন্ত বাজি পোড়ালেন তাঁরা। আলিপুরদুয়ারের আকাশ যেন রংবেরঙের তারায় ঢেকে থাকল। বুধবার অনেক রাত অবধি মোড়ে মোড়ে ঢাকের তালে তালে নাচও চলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy